Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছেলে-মেয়েদের প্রস্রাবে সংক্রমণ

ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

নারীদের খুব পরিচিত রোগ হচ্ছে ইউটিআই বা র জীবাণু সংক্রমণ । প্রতিদিনই এই সমস্যা নিয়ে অনেকেই চিকিৎসকের কাছে যান। এমন কোনো নারী পাওয়া যাবে না যার জীবনে এই সমস্যা একবারও হয়নি। কারো কারো আবার ইউটিআই বারবার হয়। 

সাধারণভাবে পুরুষের চেয়ে নারীর প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণ অনেক বেশি হয়। ছেলেদের যদি বারবার ইউটিআই হয় তবে তাদের মূত্রতন্ত্রের গঠনগত কোনো সমস্যা আছে কিনা তা দেখা দরকার। এ ছাড়াও মূত্রতন্ত্রের কোথাও পাথর, প্রোষ্টেট বড় হওয়া বা অন্য কোন সমস্যা আছে কিনা সেটা জানাও জরুরি।
নারীদের মেনোপজ বা স্থায়ীভাবে ঋতু বন্ধ হলে এস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায়। হরমোনের অভাবে যোনিপথ ও মূত্রতন্ত্রের স্বাভাবিক যে সুরক্ষা থাকে তা কমে যায়। আমাদের দেশে সব জায়গায় মেয়েদের টয়লেটের ভাল ব্যবস্থা নেই। এজন্য অনেক মেয়ে বাইরে পানি খাওয়ার পরিমাণও কমিয়ে দেয়। এর ফলেও প্রস্রাবে সংক্রমণ হয়। তা ছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকার কারণেও ছেলে এবং মেয়েদের বারবার ইউটিআই হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। দীর্ঘমেয়াদি কোনো অসুখের জন্য অনেকে স্টেরয়েড গ্রহন করেন। এই জাতীয় ওষুধ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।
প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণ হলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায় ।যেমন ঃ
১। ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হয়
২। মূত্রনালিতে জ্বালা
৩। তলপেটে অস্বস্থি
৪।তল পেটে প্রচন্ড ব্যথা
৫। জ্বর
৬। কাপুনি
৭। বমিভাব, বমি ইত্যাদি
সবার কিন্তু আবার এক উপসর্গ দেখা দেয় না । কারো কারো ক্ষেত্রে প্রস্রাব ঘোলা হতে পারে অথবা প্রস্রাবে দিয়ে রক্তও যেতে পারে।
ইউটিআই বা প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রস্রাব পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। পুরো কোর্স শেষ করতে হবে। কেউ একদিন দুইদিনের মধ্যেই আরাম পেয়ে যান । তারপর ওষুধ বন্ধ করে দেন। তারা ভবিষ্যতে নানা সমস্যায় পড়েন।
বারবার প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণ হলে সচেতন হতে হবে। নিয়ম মানতে হবে। বারবার সংক্রমণ হলে প্রস্রাবের বেগ চেপে রাখা যাবেনা। প্রস্রাবের হলেই করে ফেলতে হবে।
প্রচুর পানি পান করতে হবে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য এড়িয়ে চলতে হবে। ঢিলেঢালা পোষাক পড়তে হবে। প্রস্রাবের রাস্তার আশপাশ ও জামা কাপড় পরিষ্কার রাখতে হবে। যাদের এ সমস্যা রয়েছে তারা প্রচুর পানি পানের পাশাপাশি আঁশযুক্ত খাবার খাবেন। ফলমূল ও শাকসবজিতে প্রচুর আঁশ আছে। মিলনের আগে ও পরে পানি দিয়ে যৌনাঙ্গ ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে। ক্রেনবেরি জুস খেলে বারবার সংক্রমণ হয়না। একটু সচেতন হলেই প্রস্রাবে সংক্রমণ অনেকটাই কমানো সম্ভব।

ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন