Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মূলার পুষ্টি গুণ

ডা: মাও: লোকমান হেকিম | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

শীত আমাদের নানা দু:খ-কষ্টের কারণ হলেও সাথে নিয়ে আসে হরেক রকমের খাদ্য, শাক ও সবজি, যা আমাদের মওসুমি রোগবালাই প্রতিরোধ করে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। আমরা জানি, বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন রোগের আগমন ঘটে। কিন্তু আল্লাহ এতই মেহেরবান যে, ওইসব মওসুমি রোগ প্রতিরোধের জন্য হরেক রকম শাকসবজি ও ফলমূলও দান করেন, যাতে তার প্রিয় বান্দারা সুস্থ থাকতে পারে ওইসব শাকসবজি, ফলমূল খেয়ে। কিন্তু যারা এসব শাকসবজি, ফলমূল না খেয়ে অন্য কিছু খায় তারা নানা রোগের শিকার হয়।
আসুন আমরা জেনে নিই মূলার পুষ্টি গুণ সম্পর্কে। মূলাকে অনেকে মনে করেন সস্তা একটি তরকারি। তাই বলে এটি কিন্তু মোটেও গুরুত্বহীন নয়। এর গুণের কথা বিবেচনা করলে আপনারা আপনাদের মনের ধারণাকে অবশ্যই ঝেড়ে ফেলে দেবেন। এ মূলার অনেক রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা রয়েছে। * এটি একটি শীতকালীন সবজি। অবশ্য শীতের আগেও একে বাজারে দেখা যায়। মাটির নিচে থাকা স্ফীত মূল বা শিকড়কে আমরা মূলা হিসেবেই চিনি এবং খেয়েও থাকি। এটি জমি থেকে তুলতে একটু দেরি হলে ভেতরে আঁশ জন্মে যায়-এই মূলা খেলে পেটে বায়ু জন্মে। কচি মূলা বেশি উপকারী। এর জন্য মাঘ মাসেই মূলা খাওয়ার ভাল সময় বলা যায়। একে বিজ্ঞানীরা বলেন-র‌্যাফানাস স্যাটাইভাস।
পুষ্টি তালিকা : প্রতি ১০০ গ্রাম মূলাতে রয়েছে-প্রোটিন ০.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫০ মিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৩.৪ গ্রাম, ফসফরাস ২২ মিগ্রাম, ভিটামিন এ ০.০ আই.ইউ, লৌহ ০.৪ মিগ্রাম, ফ্যাট ০.১ গ্রাম,পটাশিয়াম ১৩৮ মিগ্রাম, আঁশ ০.৮ গ্রাম, ভিটামিন সি ১৫ মিগ্রাম। উপকারিতা : * দুপুর বা রাত্রিতে গুরুপাক ভোজনের পরে মূলার রস ও পাতিলেবুর রস একসাথে খেলে পেটের ব্যথা ও গ্যাস কমে যায়। *ভাত বা রুটি খাওয়ার সময় কাঁচা মূলা লবণ দিয়ে খেলে মুখের রুচি বাড়ে। * কচি মূলা দিয়ে সালাদ বানিয়ে খেলে খিদে বাড়ে। * মূলা পিলের রোগে বিশেষ উপকারী। * শীতকালে কাঁচা মূলা কাজের উৎসাহ বাড়ায়, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ও শরীরের পুষ্টির হার বাড়িয়ে দেয়। * মূলার শাক বেশি মাত্রায় খেলে প্রস্রাব ও মল পরিষ্কার করে। * মূলার পাতা শাক হিসেবে খেলে অর্শ্বরোগের বিশেষ উপকার হয়। মূলার শাক শরীরে তাড়াতাড়ি হজম হয়। খাওয়া দাওয়ার রুচি বাড়িয়ে তোলে। * মূলা শাক কাঁচা খেলে পিত্ত বৃদ্ধি পায়। তেলে ভেজে খেলে কিংবা রান্না করে খেলে অনেক উপকারী। * শুকনো মূলার ঝোল রান্না করে এক ঘণ্টা পর পর খেলে খিঁচুনি ভালো হয়। *মূলা আর তিল এক সাথে বেটে খেলে শরীরের ফোলা কমে আর যদি শরীরে পানি জমে থাকে তাহলে ভালো হয়ে যাবে। ৫/৬ চা চামচ রস খেলে ফুলা তাড়াতাড়ি কমে যাবে। * শুকনো মূলার স্যুপ খাওয়ালে এবং শুকনো মূলা কাপড়ে পুঁটলি বেঁধে অর্শ্বের বলিতে সেক দিলে অর্শ্ব রোগের কষ্টে আরাম পাওয়া যায়।

ডা: মাও: লোকমান হেকিম
চিকিৎসক-কলামিস্ট, মোবা : ০১৭১৬২৭০১২০



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন