পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন তাদের সঠিক দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। সেখানে আমি যে কথা বলেছি এখানেও একই বিষয় বলবো।
নির্বাচনী প্রক্রিয়া চালু রাখতে হলে সবাইকে সহিংসতা পরিহার করতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন সঠিক দায়িত্ব পালন করবে বলে আশা করি। গতকাল রাজধানীর গুলশানে খাজানা গার্ডেনে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সাথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। ৩৫ দেশের কূটনীতিকের সাথে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। বেলা দুইটা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহŸায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সহিংসতা নিয়ে আমরা যা বলছি তার সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকদের পর্যবেক্ষণের মিল আছে। মিডিয়াতে প্রকাশিত খবর এবং ছবি তারা দেখছেন। সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা কি ভাবে বিরোধী দলের প্রার্থীদের উপর, কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা করছে এ গুলো বিদেশীরা তাদের নিজস্ব লোকের মাধ্যমেও খোঁজ খবর রাখছেন। তাই এ নিয়ে কূটনীতিকদের খুব বেশি প্রশ্ন ছিল না। তবে বিদেশীরাও সবচেয়ে অবাক হচ্ছেন পুলিশের ভূমিকায়। পুলিশ নিজে থেকে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের রাস্তায় বের হতে দিচ্ছে না। কাউকে দেখলেই পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ড. কামাল বলেন এ ব্যাপারে পুলিশ অসাধারণভাবে তৎপর। এত পুলিশ রাস্তায় টহল দিতে আমি দেখিনি। কাউকে দেখলেই তারা ধরে বসে। কারণ ছাড়াই ধরছে। মানুষ পুলিশি সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে। পুলিশ দিয়ে সরকার ভয়ভীতির সৃষ্টি করছে। তারা চাচ্ছে বিরোধীরা যেন নির্বাচনে না আসতে পারে।
পুলিশের এইযে বাড়াবাড়ি এ নিয়ে আইজিপির সাথে কোন কথা বলেছেন? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, আইজিপিকে সরাসরি বলিনি। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনকে এ বিষয়টি বলার পর তিনি আমার কথা শুনে পুলিশের মহাপরিদর্শককে চিঠি দিয়েছেন। এ জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) ধন্যবাদ জানাই। ঐক্যফ্রন্টের এই শীর্ষ নেতা বলেন, দেশের মানুষ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। সিইসি কে এম নূরুল হুদার অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কিনা সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে তার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব, সে আশঙ্কার কথা উনাকে নিজেই বলে এসেছি। তাঁর নিষ্ক্রিয়তা আমাদের খুব উদ্বিগ্ন করে। তার পরও আমরা আশা করতে চাই যে তিনি এখন থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের চাপেই হোক বা নির্দেশেই হোক নির্বাচন কমিশন সবকিছু দেখেশুনেও চুপ করে থাকে। বৈঠকে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে কথা বলেছি। তবে কূটনীতিকেরা কী বলেছেন, তা তিনি জানাননি। কূটনীতিকদের কাছে কী ধরনের সহযোগিতা চান এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা যাতে নির্বাচনে অংশ নিই, সে জন্য তারা বহু অনুরোধ করেছে। আমরা তো নির্বাচনে গেলাম। প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছিলেন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। মামলা ও গ্রেফতার হবে না। কিন্তু তা বন্ধ হয়নি। সরকার তার কোনো কথাই রাখছে না। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন পরিবেশই নেই। সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা হচ্ছে। নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন এমন ১৫জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব বিষয় আমরা তাদের কাছে তুলে ধরেছি।
বিদেশিদের কাছে বিএনপি শুধু মায়া কান্না করে আওয়ামী লীগের এমন অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আওয়ামী লীগও বিদেশিদের নিয়ে বৈঠক করে। তারাও তাহলে ছায়া কান্না করে। কান্নার কিছু নেই। যা সত্য ও বাস্তব তা সবাইকে জানতে দেওয়া উচিত। কারণ, সরকার বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, সরকারই নির্বাচন বানচাল করতে চাচ্ছে।
বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন সাংবাদিকদের বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট যে ইশতেহার দিয়েছে, তা কূটনীতিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন করতে গিয়ে কীভাবে তারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন এবং প্রার্থীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, সেসব বিষয়ে তাদের বলা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ৩৫টি দেশের কূটনীতিকেরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, তুরস্ক, ডেনমার্ক, ফিলিপাইন, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ব্রæনাইসহ ৩৫টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা। ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মধ্যে সাবিহ উদ্দি আহমদ, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী, গোলাম মাওলানা চৌধুরী, এডভোকেট মাসুদ আহমদ তালুকদার, তাবিথ আউয়াল, জেবা খান প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।