বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এখন আর রাত নয় সাহস বেড়ে দিনেই শুরু করেছে মহাসড়কে প্রকাশ্যে তেল চুরি। চট্টগ্রামের সিটি গেইট থেকে ধুমঘাট ব্রিজ পর্যন্ত অগণিত সিন্ডিকেট এই তেল চুরির সাথে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বারইয়াহাট পৌরসভার চিনকি আস্তানা এলাকা চট্টগ্রাম শেষ প্রান্ত মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে এমন অপরাধ এখন চলছে প্রকাশ্য দিবালোকে। এতে করে সর্বশান্ত হচ্ছে ভোজ্য তেল ও জ্বালানী তেল সরবরাহকারী বিভিন্ন ব্যবসায়ী।
গত ১০ ডিসেম্বর ( সোমবার) সরেজমিনে দেখা যায় ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিনকি আস্তানা এলাকায় সামনে একটি ট্রাকের সম্মুখভাগ আড়াল করার মতো উচ্চতা সম্পন্ন পর্দা দেয়া দোকানে ভেতরে ট্রাকটিকে আড়াল করে রাখা। কয়েকজন শ্রমিক ট্রাকের ভেতর থেকে বোঝাই করা ড্রামগুলো থেকে পাইপ দিয়ে একে একে ভোজ্য তেল নামিয়ে নিচ্ছে। প্রতি ড্রাম থেকে প্রায় ১০ লিটার করে ১৪ টি ড্রাম থেকে নেয়া হয় তেল। এক পর্যায়ে আর্থিক লেনদেন সেরে ট্রাকটি আবার ঢাকার দিকে রওনা হয়। আবার এসময় সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রাকটি থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য দাঁড়াতে বললে উল্টো জোরে চালিয়ে পালিয়ে যায়। আবার দোকানের যেসব কর্মচারীরা তেলচুরি করছিল তারা ও দ্রুত ঘটনাস্থলে পালিয়ে যায়।
আশেপাশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক থেকে জানা যায় এই চোরাই তেলের দোকানটি জনৈক দুলাল নামের ব্যক্তির । এইভাবে চোরাই তেল বিক্রি করেই সে এখন পার্শ্ববর্তী ভবন, মার্কেট ও কয়েকটি দোকানের মালিক। এই বিষয়ে দুলাল এর কাছে জানতে চাইলে সে বলে ভাই আমি অনেক পরিশ্রম করে দু পয়সা আয় করি, অনেকের সহ্য হয়না । কিন্তু এই কাজটি তো অপরাধ কেন এই তেল চুরির অপরাধটি করেন বললে দুলাল বলে শুধু আমি না এই রুটের অন্তত ৫০ টি দোকান আছে এমন। শুধু আমি কি অপরাধী ? বাকীরা কারা তাদের নাম জানতে চাইলে সে তাদের নাম প্রকাশ করতে অস্বীকার করে।
কোনও প্রকার আইন-কানুন না মেনেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই, সীতাকুন্ড উপজেলা থেকে শুরুকরে ধুমঘাট ব্রিজ আগে পর্যন্ত গড়ে উঠেছে জ্বালানি তেলের অবৈধ চোরাই দোকান। এছাড়া বিভিন্ন হাটবাজারে ও এইসব দোকান দিন দিন বৃদ্ধি পেলে ও প্রশাসন রয়েছে নীরব।
চট্টগ্রামের সিটিগেট এর পর থেকে মীরসরাই উপজেলার ধূমঘাট পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ জ্বালানী তেলের দোকান। এসব দোকানে বিশেষ করে ভোজ্য তেল ও ডিজেল ক্রয় করে ট্রাক ভর্তি তেলের গাড়ী থেকে থেকে । এছাড়া কেরোসিন, পেট্রোল, অকটেন কোনটাই বাদ দেয় না কেনাবেচা থেকে।
আবার এসব দোকানের সাথে রয়েছে তেল একটি চোরাই সিন্ডিকেট ই আবার বাজারজাত করে। ফলে রাত নয় দিনে দুপুরে ও চলছে পার্কিং করা গাড়ী থেকে চলে তেল চুরি । গাড়ি গুলো থেকে এভাবে জ্বালানি দ্রব্য চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের চেয়ে লোকসানের ঘানি টানছে গাড়ীর মালিকরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই উপজেলা এলাকার ছোটকমলদহ, সোনাপাহাড়, ধূমঘাট, পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশেই রয়েছে এসব অবৈধ তেলের দোকান।
ঝুপড়ি মতো ছোট্ট একটি দোকান থাকে কিন্তু পেছনে অনেক প্রকার ড্রাম থাকে। তেল চুরির পাইপ সহ নানান সরঞ্জামই এই ব্যবসার পুঁজি। রাস্তার পাশে ওদের চোরাই সিগন্যাল হিসেবে একটি ড্রাম থাকে শুধুমাত্র। যারা চুরি করে তেল বিক্রি করবে ওরাই ওদের চেনে। গাড়ী থামাতেই ইশারায় কথা সেরে দ্রুত তেল চুরি সেরে, লেনদেন করে সরে যায়।
এছাড়া তেল চুরির কারণে তেল সরবরাহকারী পদ্মা, মেঘনা, যমুনা অয়েল কোম্পানিসহ জ্বালানি খাতে ব্যাপক খরচ গুণতে হচ্ছে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে।
ঢাকা- চট্টগ্রামের এই রুটের বৈধ পেট্রোল পাম্প ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন এইসব অবৈধ চোরাকারবারীদের কাছে আমরা ও জিম্মি। কারণ এক স্থান থেকে উৎখাত করলে ওরা আরেক স্থানে গিয়ে আস্তানা করে নেয়। আমাদের তেলের ট্রাক থেকে ও ওরা তেল চুরিতে উদ্বুদ্ধ করে চালকদের। এতে করে বছর শেষে হিসেবের খাতায় লোকসান ও গুনতে হয়।
এই বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের জোরারগঞ্জ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই সোহেল সরকার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মহাসড়কে ট্রাফিক বিভাগের সকল দায়দায়িত্ব শুধু আমাদের। অপরাধ বিষয়ক দায়িত্ব থানার তবু ও আমরা এমন অপরাধ গুলো থানার সহযোগিতা নিয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিব।
জোরারগঞ্জ থানার ওসি ইফতেখার হাসান বলেন এমন কিছু অপরাধ প্রবণতার খবর ইতিমধ্যে আমরা ও পেয়েছি, শীঘ্রই এইসব বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।