Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বঙ্গবন্ধুর কথা অমান্য করছে পুলিশ

সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

সরকারের বেআইনী আদেশ-নির্দেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ বঙ্গবন্ধুর কথা অমান্য করছে বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধান প্রণেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। ঐক্যফ্রন্টের এই প্রধান সমন্বয়ক বলেন, দেশে এখনো সংবিধান আছে। যে সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর এক নম্বর। উনি (বঙ্গবন্ধু) সংবিধানে লিখে দিয়ে গেছেন, এদেশের মানুষ আইনের আশ্রয় পাবে। পুলিশ আজকে যা করেছে তা বঙ্গবন্ধুর কথাকে সরাসরি অমান্য। গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে ঐক্যফ্রন্টের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। তিনি আরো বলেন, স্পষ্ট করে বলছি চিরদিন কেউ ক্ষমতায় থাকে না। পুলিশে যারা চাকরি করছেন তাদের এটা মনে রাখা উচিত।

ক্ষমতাসীনদের ‘বেআইনি’ আদেশ পালন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমি পুলিশ একাডেমিতে বহু লেকচার দিয়েছি। বেআইনি আদেশ মানা পুলিশের জন্য একদম নিষেধ। বেআইনি আাদেশ মানবে না- এটা পুলিশরা জেনে রাখ। যারা আপনাদের এখন বেআইনি আদেশ দিচ্ছে এরা কেউ চিরস্থায়ী নয়। ভুলে যেও না। তোমরা তো ৫০-৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করবে আশা কর। এটা মনে রেখে আজকে যে বা যাহারা অন্যায় আদেশ দেয়, তোমাদের এটা সাংবিধানিক কর্তব্য চিন্তা করে দেখা সেই আদেশ আইনানুগ কি না। যদি কোনো লোক আইন ভঙ্গ করছে না, তাকে অ্যারেস্ট করা এটা সংবিধান ভঙ্গ করা। তোমাদের শুভাঙ্খী হিসেবে বলছি- তোমরা সংবিধান ভঙ্গ করার অপরাধ করিও না। সরকারে থেকে যারা ‘বেআইনি আদেশ দিচ্ছে’ তাদের দেশের মানুষ চিহ্নিত করে আগামীতে রিয়্যাল আদালতে বিচার করবে। দেশে এখনো সংবিধান আছে। যে সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর এক নম্বর। উনি লিখে দিয়ে গেছেন, এদেশের মানুষ আইনের আশ্রয় পাবে। পুলিশ আজকে যেটা করেছে এটা বঙ্গবন্ধুর কথাকে অমান্য করা। বঙ্গবন্ধু যেটাকে বলেছে হবে- তোমরা সেটাকে ডিফাই করেছ। তোমরা বঙ্গবন্ধুর কথাকে অমান্য করবে, এই বিজয়ের মাসে অমান্য করবে, এটা ঠিক নয়।
বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ঘটনার তদন্তে ‘বিশ্বন্ত’ কর্মকর্তাদের নিয়োগের জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শকের প্রতি আহŸান জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, আপনার (আইজিপি) সম্পর্কে আমার খুব ভালো ধারণা ছিল। যেন সেই ধারণা থাকে। সেই কারণে আমি অনুরোধ করব, আপনি আমাদের কথাগুলোকে খুব গুরত্ব সহকারে দেখবেন। আমি আপনাকে আজকের ঘটনার তথ্য দেবো। ধারণা করছি যে তথ্য দেব আপনি আপনার বিশ্বস্ত লোক দিয়ে সেগুলো তদন্ত করবেন। কথা দিচ্ছি সব ধরনের সাহায্য করবো। তফসিল ঘোষণার পর চারিদিকে শুধু অ্যারেস্ট অ্যারেস্ট আর অ্যারেস্ট। আমরা জানতে চাই কার আদেশে এগুলো করা হচ্ছে। আমরা প্রতিটা অ্যারেস্টের বিস্তারিত তথ্য চাই।
ড. কামাল বলেন, বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে আমাদের ওপর যে হামলা হয়েছে সেটি শহীদদের জন্য অবমাননাকর। এটি মেনে নেয়া যায় না। যারা এ হামলা করেছে তাদের আমি ভাড়াটিয়া বলবো। ওরা দুই পয়সার জন্য এ কাজ করেছে। আমি তোমাদের উদ্দেশ্যে বলছি, আমি চার পয়সা দেবো, তোমরা সরে যাও।
এর আগে সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেরার পথে ড. কামালের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
হামলার বিষয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের এমপি আসলামুল হকের গুÐাবাহিনী ও কমিশনার টিপুর নেতৃত্বে গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। হামলায় আমার, আ স ম আব্দুর রব, জগলুল হায়দার আফ্রিকসহ ৭-৮টি গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। হামলায় আব্দুর রবের গাড়ির চালকসহ ২৫-৩০ জন গুরুতর আহত হয়। এ সময় শত শত পুলিশকে নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। আমরা লক্ষ্য করছি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আওয়ামী লীগ পুলিশের সহায়তায় প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ধানের শীষের প্রার্থী-নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা, গ্রেফতার, প্রচারণায় বাধা, ভাঙচুরের মাধ্যমে সারাদেশে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। যা একটি অবাধ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অন্তরায়। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ