পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ব্যাংক খাতের গত ১০ বছরের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরলেন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (এমডি)। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সংলাপে ব্যাংক খাতের ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা লোপাটের তথ্য দেওয়ার তিন দিন পরই মাঠে নামলেন তাঁরা।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বুধবার (১২ ডিসম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)। এবিবির সভাপতি ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ব্যাংক এশিয়ার এমডি মোহাম্মদ আরফান আলী, সোনালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, সিটি ব্যাংকের এমডি সোহেল আর কে হোসাইন, এবিবির সাবেক সভাপতি মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি আনিস এ খান, ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখারসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহীরা। উন্নয়ন প্রচার নিয়ে এভাবে এমডিদের সংবাদ সম্মেলনে আসার ঘটনা এর আগে ঘটেনি বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। তবে আয়োজকদের বক্তব্য, সিপিডির সংলাপের প্রতিক্রিয়া জানাতে তাঁরা এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেননি, এটা কাকতাল হতে পারে।
এবিবি চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ১০ বছরের বিভিন্ন আর্থিক সূচকের উন্নতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এতে বড় অবদান রাখছে দেশের ব্যাংক খাত। আপনারা এর ভালো দিকগুলো তুলে ধরবেন। জনগণের কাছে ব্যাংক খাত নিয়ে শুধু খারাপ খবরই যায়।
খাতভিত্তিক বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে কয়েকজন এমডি জানান, এখন দেশের জয়গাঁথা গাওয়ার সময় এসেছে। ব্যাংক খাতের যেসব খারাপ ঘটনা আছে, তা সংবেদনশীলভাবে দেখার সুযোগ আছে। ২০১৯ সাল দেশের অর্থনীতির জন্য বড় অর্জনের বছর হবে। এ সময়েই ব্যাংক খাত নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা বলেন, দেশের অর্থনীতি অনেক বড় হয়েছে। জিডিপি, মাথাপিছু আয়সহ বেশিরভাগ সূচকেই আমরা উন্নতি করছি। এসব উন্নয়নের মূল ভূমিকা পালন করছে ব্যাংকিং খাত। তাই অর্থের জোগানের প্রধান এ খাতকে শক্তিশালী করতে শতভাগ কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে হবে। দক্ষ জনশক্তি বাড়াতে হবে। আমাদের ঋণ প্রদানের প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করতে হবে। ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া ও সিকিউরিটি বাড়াতে হবে। ঝুঁকির ধরন বিভিন্ন সময় চেঞ্জ হয়। এটি সমন্বয় করতে হবে। এ সময় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের কম মূল্য ও বিদ্যুৎ গ্যাসসহ অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে সম্প্রতি সময়ে ঋণ খেলাপি বাড়ছে বলে জানান তারা।
সোনালী ব্যাংকের এমডি ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ভাত খেলে যেমন দুই একটা বাদ পড়ে। তেমনে ঋণ দিলে খেলাপি হবেই। দেশে এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং সব ক্ষেত্রেই আমরা এগিয়ে গেছি। কৃষি থেকে আমরা এখন শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এ অর্জন পরিবর্তনের প্রধান ভূমিকা পালন করছে ব্যাংকিং খাত। সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার অনেক কথা বলা হচ্ছে কিন্তু আমাদের অর্জনের কথা কেউ বলছে না।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি তথ্য অনুযায়ী, বিগত প্রায় ১০ বছরে দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি আনিস এ খান বলেন, ব্যাংকিং খাতের মধ্যে আট লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা খারাপ হতেই পারে। এখন ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমাদের কাজ হবে ভুল যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেই দিকে নজর রাখা। কারণ ব্যাংকের টাকা কোনো ব্যক্তির নয়, এটি জনগণের।
ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ব্যাংকিং খাতে ঋণ বিতরণের ঝুঁকি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমাদের সক্ষমতা কতটুকু আছে এটাই দেখার বিষয়। আমরা যদি ঝুঁকিপূর্ণ ঋণকে (ছোট, মাঝারি ও বড়) তিন ভাগে ভাগ করি তাহলে দেখা যাবে। বর্তমানে ছোট আকারের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ মোকাবেলায় দেশের সবগুলো ব্যাংকের সক্ষমতা রয়েছে। আর মাঝারি আকারের ঝুঁকি মোকাবেলায় সক্ষম ৭০ শতাংশ ব্যাংক। তবে বড় ঝুঁকির ক্ষেত্রে সবাই সক্ষম নয়।
খেলাপি ঋণ হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকারদের চেয়ে ঋণ গ্রহীতারা বেশি দোষী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সব কিছু দেখে ঋণ দেয় তারা ফেরত দেয় না। তাহলে দোষ কাদের?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।