Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনুমোদন পেল বেঙ্গল ব্যাংক, পিপলস-সিটিজেনকে ‘না’

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম | আপডেট : ১২:১৩ এএম, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮

বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংককে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অনিচ্ছা সত্তে¡ও বিভিন্ন মহলের লবিং ও সরকারের চাপে নির্বাচনী মাসে এসে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন দিতে হলো বেঙ্গলকে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের সভায় ব্যাংকটির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে সন্তুষ্ট হয়ে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম। 

পরিষদে তিনটি ব্যাংকের আবেদনের বিষয়ে আলোচনা থাকলেও বাকি দুটি ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার পবিবর্তন ও কর-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ফিরিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই দুই ব্যাংক হলো- পিপলস ব্যাংক ও সিটিজেন ব্যাংক।
সূত্র মতে, ‘বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের’ প্রধান উদ্যোক্তা হলেন বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন। যদিও শুরুতে ‘বাংলা ব্যাংক’ নামেই অনুমোদনের আবেদন জমা দেয়া হয়েছিল। দেশে তাদের প্লাস্টিক শিল্পসহ বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের ভাই।
দ্য সিটিজেন ব্যাংকের মালিক হলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মা জাহানারা হক। সিটিজেন ব্যাংকের প্রস্তাবে কিছু ঘাটতি রয়েছে। সেগুলা ঠিকঠাক করে উপস্থাপন করতে নির্দেশনা দেয়া হয় আগের বোর্ড সভায়। গতকালের সভায় নীতিগত অনুমোদন মেলেনি এই ব্যাংকের।
পিপলস ব্যাংকের উদ্যোক্তা চট্টগ্রামের স›দ্বীপের বাসিন্দা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা এম এ কাশেম। কেন্দীয় ব্যাংক বলছে, প্রবাসী কাশেমের বিদেশে কী পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠালে তা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। পরিষদ সেটি বিবেচনা করে ব্যাংক স্থাপনের আগ্রহপত্র দেবে।
এর আগে গত অক্টোবরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ বোর্ড সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পায় পুলিশ সদস্যদের মালিকানায় ‘কমিউনিটি ব্যাংক অব বাংলাদেশ’। ওই সভায় এজেন্ডাভুক্ত এই তিন ব্যাংকের কিছু কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় অনুমোদনের জন্য শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। পরিষদের অন্য সদস্যরা হলেন- জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ড. রুশিদান ইসলাম রহমান, ইসলাম আফতাব কামরুল অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের এ কে এম আফতাব উল ইসলাম এফসিএ এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ।
গত ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বনির্ধারিত বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও একজন সদস্য দেশের বাইরে থাকায় তা স্থগিত হয়। ওই সভায়ও এই তিনটি ব্যাংকের অনুমোদনের বিষয়টি আলোচনায় ছিল।
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মেয়াদে নয়টি ব্যাংকের লাইসেন্স দেয়া হয়। সেগুলোর বেশির ভাগই খারাপ অবস্থার মধ্যে আছে।
এদিকে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন সামনে রেখে উদ্যোক্তারা সরকারের ওপর এ বিষয়ে এক ধরনের চাপ তৈরি করেন। কারণ নির্বাচনের আগে অনুমোদন না পেলে পরবর্তীতে হয়তো বিষয়টি ফাইলবন্দি হয়ে যাবে। তাই উদ্যোক্তাদের লবিংয়ে ও সরকারের চাপে বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগে ব্যাংকগুলোকে লাইসেন্স দেয়ার জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নিজেও কয়েকবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চিঠি লেখেন। অর্থমন্ত্রী সর্বশেষ গত ২৫ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দেন।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাংক

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ