পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশ যার নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান। তৎকালীন পাকিস্তানী নেতা ফিরোজ খান নুন এর স্ত্রী ভিকারুননিসা নুনের নামে ঢাকার বিখ্যাত ভিকারুননিসা নুন স্কুল। বহু বছর ধরে পড়ালেখাসহ অন্যান্য সূচকেও উন্নত মান ধরে রেখে সুনামের শীর্ষে আছে এ স্কুলটি।
সম্প্রতি এক ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে স্কুলটি ‘টক অব দি কান্ট্রি’তে পরিণত হয়েছে। পরীক্ষায় নিয়ম ভাঙ্গার কারণে দায়িত্বশীল শিক্ষিকা তাকে শাসন করেন, আর প্রধান শিক্ষিকা তাকে ‘টিসি’ দেওয়ার কথা বলেন। ছাত্রীটি আত্মহত্যা করে। যদি সে আত্মহত্যা না করত, তাহলে বিষয়টি নিয়ে খুব কমই কথা হতো। এমনকি মিডিয়া পর্যন্ত বিষয়টি আসতো না। বিচার-আচারের প্রশ্নও উঠতো না। একজন শিক্ষিকাকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যেতো না। সংবাদমাধ্যমে তার ছবি ও সংবাদ প্রকাশিত হয়ে তার অপরাধের তুলনায় শাস্তি কি কম হলো না বেশি তা সাধারণ মানুষের মনের প্রশ্ন।
ছাত্রী অরিত্রির আত্মহননের পেছনে আবেগের চোখে স্কুলের গভর্নিং বডি, প্রধান শিক্ষিকা ও সব শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রী দায়ী। এখানে অরিত্রির বাবা দিলিপ অধিকারীকে কে সান্তনা দেবে। কে সন্তান ফিরিয়ে দেবে তার মায়ের কোলে। মৃত্যু যে কত বেদনার তা যাদের সন্তান হারায় তারাই ভালো বোঝেন। মানবিক অন্তরের প্রতিটি মানুষ সেটা অনুভব করতে পারে। তবে, আইনের চোখে আবেগের চেয়ে যুক্তি ও বিধানের গুরুত্ব বেশি। মিডিয়ায় দেখেছি, শিক্ষামন্ত্রী খবর শোনামাত্রই ছাত্রীদের মাঝে সমবেদনা জানাতে হাজির হয়েছেন। সহপাঠী হারানো কোমলমতি মেয়েরা তাকে কাছে পেয়ে আবেগ যেমন ঝেড়েছে, পাশাপাশি তাদের বহু অভিযোগ অনুযোগ তুলে ধরেছে। অভিভাবকদের চাপে প্রধান শিক্ষিকা হাত জোড় করে ক্ষমা চাইছেন এমন দৃশ্যও মিডিয়ায় এসেছে। গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান নানা জায়গায় নানাভাবে জবাবদিহি করতে করতে একেবার নাকাল। সমস্যা অনেক আছে। বাজারে ভর্তি বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের কথা চাউর আছে।
এক অরিত্রির নির্মম বিদায়ে যেন সব আগুন একসাথে জ্বলে উঠেছে। এর আগে আত্মহত্যা করা চৈতির মাকেও নতুন করে কাঁদতে দেখা গেছে, যিনি মেয়েকে হারিয়ে কয়েকবছর ধরে শুধুই কাঁদছেন। চৈতির সমান মেয়ে দেখলেই তার মা ছুটে গিয়ে দেখেন মেয়েটি চৈতি কি-না। ভিকারুননিসার স্কুল ড্রেসে তার মেয়ের সমান দেখতে শুনতে প্রতিটি মেয়েকেই তার চৈতি বলে ভ্রম হয়।
চৈতির আত্মহননের কারণ তার পছন্দের বিষয়ে তাকে পড়তে না দিয়ে, বাবা মার পছন্দের বিষয়ে ভর্তি করানো। এজন্য কি তার বাবা রবীন্দ্রনাথ রায় ও তার মার বিরুদ্ধে কোনো মিডিয়া ট্রায়াল হয়েছে? নাকি তাদের বিরুদ্ধে মিটিং, মিছিল, মানববন্ধন বা মামলা হয়েছে? তার বাবা-মাকে কি পুলিশ গ্রেফতার করেছে?
আত্মহত্যার প্ররোচনা বা মানসিকভাবে মেয়েটিকে আহত করার অপরাধে শিক্ষিকাদের যেভাবে বরখাস্ত ও গ্রেফতার করা হলো, তাতে সমাজের বিবেক কি সুস্থ আছে বলে মনে করা যায়। না বিবেক বর্তমানে মারাত্মক দূষণের শিকার। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ভিকারুননিসার ভর্তি বাণিজ্য মারাত্মক রূপ নিয়েছে। সমাজে এ বদনাম ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ছাড়াও কয়েক বছর আগে এ স্কুলেরই বসুন্ধরা শাখার শিক্ষক পরিমল জয়ধর কর্তৃক নিজস্ব কোচিং সেন্টারে নিয়ে বেশ কিছু ছাত্রীকে, নিজের সমমনা আরও কিছু শিক্ষক সাথে নিয়ে সদলবলে, নানা কায়দায় এমনকি হাত পা বেঁধে, বহুদিন ধরে গ্যাং রেপ করার যে নজিরবিহীন ভয়াবহ ঘটনা ধরা পড়েছিল তখনও দেশবাসী ভিকারুননিসার আলোচনা কিছুদিন বেশি বেশি শুনতে পেরেছিল।
যত সমস্যা সবই, হয় মিটে যায় না হয় চাপা পড়ে যায়। পরিমলের শাস্তি হলেও শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্বিক ক্ষয়-ক্ষতি সম্ভবত পূরণ করা যায়নি। কোনোদিন তা যাবেও না। প্রথমেই বলেছি, এদেশে বিবেক শুদ্ধভাবে কাজ করে না। একদেশদর্শী কিছু মানুষ বিবেককে শুদ্ধভাবে কাজ করতে দেয় না। তাদের অপরাজনীতিতে সাধারণ বিবেক বাকরুদ্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়ে গত কিছুদিনের মধ্যে অন্তত আটজন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এজন্য কী কী বিষয় দায়ী তা গবেষণার বস্তু। তবে, এজন্য কোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। ঘটনা ঘটলেই মিডিয়ায় বিশেষ করে টিভি টক-শোতে কিছু লোক যেন পাগলা পানি খেয়ে লেগে পড়েন, এ সুযোগে যাকে পারেন তাকে আচ্ছারকম কেঁচে ধোলাই করে শুকিয়ে ইস্ত্রি পর্যন্ত করে ছেড়ে দেন। অনেকের মতে, কিছু টক-শো জকি ও তাদের অতিথি এমনও আছেন, যারা নিজেদের দুনিয়ার তাবৎ বিষয়ে সবজান্তা ও বিশেষজ্ঞ বলে মনে করেন।
দুনিয়ার বাকী সব মানুষ, তিনি যেই হোন, তাদের সামনে যেন কেজির শিশু। একই সাথে ঐক্যতান ধরে তারা যাকে চান কোণঠাসা তো বটেই, রীতিমত তার সম্মানহানী করে ছাড়েন। এদেশে বহু মানুষকে অনেক টিভি টক-শো থেকে এমন কসম খেয়ে বেরিয়ে যেতে হয়েছে যে, জীবনে আর কোনোদিন এখানে আসবোনা। একদল সুসংগঠিত মার্কামারা বেয়াদবের মাঝখানে এসে নিজেকে হেয় করা কোনো আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন মানুষের পক্ষে দ্বিতীয়বার সম্ভব নয়। সবাইকে নয়, কিছু লোককেই মানুষ এমন মিডিয়া কর্মী হিসাবে জানে।
অরিত্রির শোকাবহ বিদায়কে কেন্দ্র করেও এধরনের কিছু হিংস্রতা দেখা গেছে। কিছু বিবেকের দূষণ মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। কোমলমতি ছাত্রীরা যেমন অরিত্রির জন্য কেঁদেছিল, মন্ত্রীকে ঘেরাও করেছিল, তারাই আবার গ্রেফতারকৃত শিক্ষিকার জন্যও কাঁদছে। মিটিং, মিছিল, মানববন্ধন করছে। কারণ, এরা আসলেই কোমলমতি। এদের অন্তর এখনও স্বচ্ছ। আবেগ এখনও কলুষমুক্ত। বিশেষ করে এরা এখনও ‘রাজনীতি’ শিখেনি। এরা এখনও কোনো কারও ‘এজেন্ট’ হয়নি। উদ্দেশ্যমূলক কিছু এরা করে না। বাকী জীবন যেন এরা এমনই সাদা মনের থাকতে পারে, আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে এ দোয়াটিই করতে চাই।
যখন ঘটনা ঘটে তখন ঘটা করে বলা হয়, পরিবেশ ঠিক করতে হবে। অনিয়ম দূর করতে হবে। মেয়েদের কাউন্সেলিং করাতে হবে। বিশেষজ্ঞ রেখে তাদের মনস্তত্ব গবেষণা করে সুপরামর্শ দিতে হবে। তাদের সুখ, দুঃখ, আবেগ গার্জিয়ানদের শেয়ার করতে হবে। সবই হবে হবে হবে। ঘটনা পেছনে চলে গেলে কেউ আর কিছু মনে রাখে না।
আগে সমাজে দেখা যেত, শিক্ষক ও গুরুজনকে মানার এক অলঙ্ঘনীয় বিধান। বলা হত, ‘পিতা বানায় ভুত, শিক্ষকে বানায় পুত।’ এদেশে শিক্ষকের সোহাগ ভরা শাসনকে গার্জিয়ানরা কোনোদিন খারাপ মনে করেননি, বরং শিক্ষক ও গুরুর পক্ষই নিয়েছেন। সন্তানের কথা শোনেননি। অসংখ্য নজির আছে, ছাত্র যখন সচিব বা বড় আমলা, বিচারপতি কিংবা সমাজের মাথা তখনও প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষককে দেখে গাড়ি দাঁড় করিয়েছেন। রাস্তায় নেমে শিক্ষকের পদধূলি নিয়েছেন। বিশেষ করে উস্তাদ বা ধর্মীয় শিক্ষক হলে তো কথাই নেই। বর্তমানে এ সম্পর্ক কেমন জানি ফিকে হয়ে যাচ্ছে।
উগ্র রাজনীতির করাল গ্রাসে ছাত্র নামক বিনয়ের উপমাগুলো দিন দিন যেন উদ্ধত ও মারমুখি হয়ে উঠছে। শিক্ষকরা যেমন তাদের সম্মানের আসন ধরে রাখতে পারছেন না, ছাত্ররাও কেমন জানি মাস্তানের আচরণ করছে। শিক্ষকদের সাথ কেবল বেয়াদবিই নয়, ক্ষেত্র বিশেষে তাদের গায়েও হাত তুলছে। এ সমস্যা সবাই মিলে মোকাবেলা করতে হবে। মিডিয়ার কাজও গঠন ও ইতিবাচকতা। ভাঙ্গন বা নেতিবাচকতা নয়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদক বিরোধী এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ছাত্রদের সব দায় দায়িত্ব শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের ওপর ছেড়ে দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। ঘরেও তাদের শেখাতে হবে। তারা কী ভাবে, কোথায় যায়, কাদের সাথে মিশে, কী দেখে, কী পড়ে, অভিভাবকদের এসব খবর রাখতে হবে। বাড়ির অমনোযোগ মাদকাসক্তির একটি কারণ। ধর্মীয় মূল্যবোধের শিক্ষা তাদের সবক্ষেত্রে পথ দেখায়। তাদের মন, ভাবনা, আচরণ ও সিদ্ধান্তকে নিয়ন্ত্রণ করে।
আমরা বলি, এসবই ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের সমাজে হাজার বছর ধরে যে মানসিক শান্তি বিরাজিত ছিল, যে আত্মহত্যার হার শূন্যের পর্যায়ে ছিল, মাদক ধারণাতীত কম ছিল, সংসার ভাঙ্গা প্রায় ছিলই না। সে সমাজটি কেন হঠাৎ এত পরিবর্তিত হয়ে গেল? এসব নিয়েও ভাবতে হবে। নিজ নিজ ধর্ম ও নৈতিকতার চর্চা করতে হবে।
ইসলামী মূল্যবোধের আলোকে পরিবার সুরক্ষিত রাখতে হবে। নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ, পারিবারিক শিক্ষা ও ঐতিহ্য সংস্কৃতি অনুশীলন করতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, ইমাম, অভিভাবক, উস্তাদ, মুরব্বী, গুরুজন ও পরিবারের বড়দের শ্রদ্ধা সম্মান ও মান্য করতে হবে। ছেলে-মেয়েদের চাপে না রেখে ম্নেহময় নিয়ম ও শাসনে রাখতে হবে।
বন্ধুত্ব ও উদারতার ভেতর দিয়ে তাদের জীবনের কঠিন বাস্তবতা শেখাতে হবে। সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা মেধা ও মনের জোরে কত বাধা মোকাবেলা করে পড়ালেখা করে, সেসব রাজধানীর নামি দামী স্কুলের বাচ্চাদের দেখাতে বোঝাতে ও জানাতে হবে। লুতুপুতু, মোমের পুতুল প্রজন্ম গড়ে তুলে লাভ হবে না। অনেক ক্ষেত্রে সহিষ্ণুতা কম থাকা বা সংবেদন বেশি থাকা এ বয়সের ছেলে-মেয়েদের আত্মহত্যাপ্রবণ করে তোলে। বিশেষজ্ঞরা এসব দেখবেন, স্কুল কর্তৃপক্ষকে এজন্যই স্পেশালিষ্ট কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি ধর্মীয় দিকনির্দেশনা। বিশ্বাস মানুষের মনোবল দৃঢ় করে। ধর্ম তাকে বর্ম হয়ে রক্ষা করে। এ কথাগুলো সবার মনে রাখা উচিত।
মানুষ কত অন্ধ, বিবেকবান বলে পরিচিত মানুষ কেমন একচোখা তা বাংলাদেশের সমাজ না দেখলে দুনিয়ার মানুষ বুঝবে না। অল্প ক’দিন আগে চট্টগ্রামের এক স্কুলে বোরকা পরে যাওয়ার অপরাধে ছাত্রীকে ক্লাসে ঢুকতে না দেওয়া, অভিভাবকদের অনুরোধের জবাবে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক চরম দুর্ব্যবহার এমনকি বোরকাকে ‘দেহ পসারিণী’ ও ‘বেশ্যা’দের ড্রেস বলে জনসমক্ষে চিৎকার করার কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
এ মানুষটির কথা ও অঙ্গভঙ্গি, ভূমিকা ও আচরণের ভিডিও ভাইরাল হলেও তথাকথিত সে ‘জাতির বিবেক’দের কানে পানি যায়নি। টক-শো ওয়ালাদেরও মোটা চামড়ায় কোনো আঁচ লাগেনি। নারায়ণগঞ্জের বন্দরে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের অবমাননায় যেভাবে দেশ জেগে উঠেছিল, যেভাবে হাজার হাজার বুদ্ধিজীবি, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী দেশব্যাপী কান ধরে উঠবস শুরু করেছিল তা সত্যিই নজিরবিহীন।
রাজপথ থেকে সংসদ কেঁপে উঠে একজন শিক্ষকের মান রক্ষায় যে দৃষ্টান্ত কায়েম করেছে, তা যুগযুগ জাতি স্মরণ করবে। এর পেছনে মিডিয়া ও বিবেকবানদের উৎসাহ ছিল বিপুল। তবে, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও স্কুলের শিক্ষক অবমাননা, বেধড়ক পেটানো এবং শিক্ষিকার ওপর নির্যাতন এদেশে অসংখ্য ঘটে থাকে। তখন কিছু বিবেক জাগ্রত হয় না। এসবই দূষিত বিবেক। কিছু মিডিয়া নড়ে চড়ে না।
জনগণের ভাষায়, এসব মিডিয়া গোলাম মিডিয়া। চাবি দিলে নৃত্য করে, দম ফুরালে নেতিয়ে পড়ে থাকে। কিছু বুদ্ধিজীবীও বলা যায়, কারও হুকুমের চাকর। মালিক বললে, কাছা মেরে লাফিয়ে পড়বে। হুকুম না পেলে বাস্তবতার শত লাথিতেও তাদের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙ্গবে না।
একধরনের নিরুৎসাহিত করণ প্রবণতা ও মানহানিকর কথা ও কাজ আমাদের মিডিয়া ও সুশীল সমাজে, রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে ডাল-ভাতের মতই অহরহ চলছে। আসলে মিডিয়ায় কাজ করা যেমন সম্মানজনক ও বহু পড়ালেখা জানার এবং আজীবনের পরিশ্রমের কাজ, ঠিক তেমনি এটি সুবিচার ও নৈতিকতার এক কঠিন পরীক্ষা। মিডিয়ার লোকেরা যদি পড়ালেখার কাজে পরিবেশ নষ্ট করে, শিক্ষকের মানহানি করে, গুরুজনের মিডিয়া ট্রায়াল করে, তাহলে মেধাবীরা নিরুৎসাহিত হবে।
বর্তমানে তো উচ্চ মেধাবী লোকজন কাষ্টম, পুলিশ ও সুবিধাজনক চাকুরীতে চলে যেতে চায়। অনেকে ঘুষ দিয়ে চাকরী নেয়, বাকী জীবন টাকা তোলে। আর অনেকে চাকরীকে একটি জমিদারী বলে মনে করে। সারাজীবন জনগণের কাজ থেকে খেরাজ তুলে খাওয়া যাবে। অল্প মানুষই এমন আছেন, যারা চাকুরীকে সেবা মনে করেন এবং বেতনের বাইরে এক পয়সাও হারাম কামান না। আর সাংবাদিকতা এ তো এক কষ্টের জীবন।
টাউট-বাটপার ছাড়া শুদ্ধ সাংবাদিকতায় জীবন পার করে দেওয়া যেন মানবতার জন্য জীবন বিলিয়ে দেওয়া। দেশ ও জাতির জন্য শহীদ হয়ে যাওয়া। তাই, যারা জাতির বিবেকদের এ পেশাকে দূষিত করছেন, কলুষিত করছেন তাদের চিন্তা করা উচিত, সংশোধন হওয়া উচিত। কারণ এক্ষেত্রেও বিবেক সবসময় কাজ করে না। সে দূষিত। একদেশদর্শী। একচোখ তার কানা। সে স্বাধীন নয়। তার মনে সুবিচার নেই।
অতএব, আবেগ বা দল দেখে অন্ধভাবে কাজ করা যাবে না। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে নিজেকে ধরে রাখতে হবে। তাহলেই দূষিত বিবেক পরাজিত হয়ে শুদ্ধ ও সুস্থ বিবেকের জয় হবে। শুভ ও সুন্দরের উদ্বোধন হবে। দেশ জাতি ও মানবতার জন্য আজ যার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।