Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাকিস্তান ছাড়া আফগানিস্তানে শান্তি আসবে না

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

পাকিস্তানের সহায়তা ছাড়া আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় বলে স্বীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের লে. জেনারেল কেনেথ এফ ম্যাকেঞ্জি। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আফগানিস্তানের ব্যাপারে যে কোন সমাধানের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের সাহায্য প্রয়োজন হবে। আফগানিস্তানে শান্তি স্থাপনের জন্য পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে এক সিনেটরের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেন, সমস্যা সমাধান শুধু আফগান কেন্দ্রিক হলে হবে না, এটি হতে হবে অঞ্চলকেন্দ্রিক। মার্কিন সিনেটের আর্মড সার্ভিস কমিটিতে শুনানিকালে তিনি এই অভিমত প্রকাশ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের পরবর্তী কমান্ডার নিয়োগের জন্য এই শুনানি হয়। পাকিস্তানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবে সাম্প্রতিক পরিবর্তন প্রমাণ করে যে আফগানিস্তানে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে পাকিস্তানকে আমলে নিতে হবে। এটি একটি প্রতিষ্ঠিত ও বোধগম্য বিষয় হলেও প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্কের একটি জটিল ইতিহাস রয়েছে যা আফগানিস্তানে সোভিয়েত অভিযানের সময় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে। মার্কিন কমান্ডারের বক্তব্য ও স¤প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে পাঠানো প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিঠি মার্কিনীদের জন্য পাকিস্তানের স্বার্থটিকেও মনে রাখার ব্যাপারে সহায়ক হবে। এটা ঠিক বৈশ্বিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তান নিজেকে পুরোপরি বিচ্ছিন্ন রাখতে পারবে না। অন্যদিকে বিশেষ করে আফগানিস্তান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও একই কথা সমভাবে প্রযোজ্য। যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী সেনা কমান্ডার মাঠের বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন থাকা দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য শুভ লক্ষণ। পাকিস্তান এখনো আফগানিস্তানে তার ভূমিকার রাখার প্রয়োজন নেই বলে মনে করে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেন, পাকিস্তান ভালোভাবেই জানে যে আফগানিস্তানে কোন সমাপ্তিতে পৌছতে হলে তাদের সাহায্য প্রয়োজন হবে। আমার মনে হয় তাদের কাছে আমাদেরকে বিষয়টি আকর্ষনীয় করে তুলতে হবে যাতে তারা মনে করে এটা তাদের সর্বোচ্চ স্বার্থেই করা হচ্ছে। পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক কৌশলগত স্বার্থটিকে যুক্তরাষ্ট্র আমলে নেয়নি বলে পাকিস্তানীরা মনে করে। বিশেষ করে আফগানিস্তানে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের কারণে এই উপলব্ধি তৈরি হয়। আফগানিস্তান জুড়ে ভারতীয় কনস্যুলেটগুলো পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অশান্তি ছড়িয়ে দেয়ার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেন যে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সময় আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে তালেবান। মার্কিন জেনারেলের এই বক্তব্য সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি আরো বলেন যে তিনি দায়িত্ব পেলে আফগান বাহিনীর সামর্থ্য বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দেবেন। কারণ একমাত্র এই দেশটিতেই এখনো যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করছে। মার্কিন জেনারেল বলেন, আফগানদের ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি। তারা কঠিন যুদ্ধ করছে। কিন্তু এই সমস্যা সমাধান করা না হলে তাদের ক্ষতি বন্ধ হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ আফগান দূত জালমে খলিলজাদ তার শান্তি মিশনে এখন দ্বিতীয়বারের মতো আঞ্চলিক দেশগুলো সফর করছেন। পাকিস্তান সফরের পর তিনি এখন আফগানিস্তান রয়েছেন। তার এই সফর তালেবানদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসএএম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ