চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
শেষ
এক হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, হুযূর সা. ইরশাদ করেন, আমার সামনে উম্মতের গোনাহসমূহ পেশ করা হয়েছে আমি তার মধ্যে এর চেয়ে বড় আর কোন গুনাহ দেখিনি যে, কেউ কুরআন শরিফের কোন সূরা অথবা আয়াত মুখস্থ করেছে অতঃপর তা ভুলে গেছে। (তিরমিযি শরিফ) পক্ষান্তরে সেদিন কুরআন তেলাওয়াতকারীও আল্লাহ তায়ালার নিকটে মর্যাদাবান হবে। ভয়ভীতির এ মুহূর্তেও এক শ্রেণীর লোকের চেহারা হবে প্রফুল্ল, পুর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল, তারা আরশের নীচে রহমতের শীতল ছায়ায় সম্মানিত আসনে সমাসীন হবে। তারা কারা? তারা ঐ সব লোক যারা লাঞ্ছনা-বঞ্চনা, উপহাস সহ্য করে বস্তু জগতে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেছে। পবিত্র কুরআনকে বুকে ধারন করেছে। হাশরের ময়দানে পবিত্র কুরআন তাদের জন্য সুপারিশ করবে, পুলসিরাতে তাদের জন্য সহায়ক হবে। যাদের এ বিশ্বাস আছে, তারা যেমন বস্তু জগতে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের স্বাদ লাভ করেছে তেমন আখেরাতেও লাভ করবে এবং তাদের সম্মানার্থে স্বয়ং আল্লাহপাক পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করে শুনাবেন। তখন তারা সেখানে অপূর্ব স্বাদ উপভোগ করবে। এ বিশ্বাসে যে দৃঢ় ও অটল তার জন্য বস্তু জগতে তেলাওয়াত করা এবং কুরআনকে বুকে ধারণ করা মোটেই কঠিন ব্যাপার নয়, বরং অতি সহজসাধ্য ব্যাপার।
হাশরের ময়দানে হত্যাকারী এবং নিহত ব্যক্তির অবস্থা : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, কেয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি তার হত্যাকারীকে এমনভাবে ধরে আনবে, যখন হত্যাকারীর কপাল এবং মাথা নিহতের হাতের মুঠোয় থাকবে। আর নিহতের ঘাড়ের রগ থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে থাকবে। সে আল্লাহর দরবারে আরজ করবে, হে রব, এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। নিহত ব্যক্তি (এমনিভাবে) হত্যাকারীকে নিয়ে আরশের কাছে পৌঁছবে। (তিরমিযি, নাসাঈ) হত্যাকারী যেভাবে শাস্তি পাবে ঠিক তদ্রæপ হত্যায় সাহায্যকারীও শাস্তি পাবে। হযরত আবু হোরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের হত্যায় একটু কথার দ্বারাও সাহায্য করেছে, (কেয়ামতের দিন) সে আল্লাহ তাআলার সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাত করবে যে, তার উভয় চোখের মাঝখানে লেখা থাকবে (আ’য়েসুম্ মির রাহমাতিল্লাহ) আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ। (ইবনে মাজাহ)
উপসংহার : অঙ্গ-প্রতঙ্গ ও জমিন সাক্ষ্য দেয়ার পর ওই সমস্ত লোক হতবম্ব হয়ে যাবে; যারা আল্লাহর সঙ্গে ঝগড়া করেছে বা নিজেদের আমল নিয়ে সন্দিহান ছিল। নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের ব্যর্থ হয়ে তারা নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকবে। তখন আল্লাহ তায়ালা সমস্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং আমল নামার ভিত্তিতে বিচারের রায় দিবেন। সেই রায়ে কোনো খেদ থাকবে না। আপিল বা আপত্তি করার সুযোগ থাকবে না। সেদিন সর্বময়ী ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ। পবিত্র কুরআনের সে কথাই বলা হয়েছেÑ ‘তিনি বিচার দিবসের মালিক’। (সুরা ফাতিহা : ৩)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।