পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীর সবচেয়ে মানবিক মানুষ ছিলেন। তিনি শত্রুর সঙ্গেও মানবিক আচরণ করেছেন। অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি মানবিক আচরণ করেছেন। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি যেন না হয় তিনি বিদায় হজ্বে বলে গেছেন। নবীজীর দেখানো পথই হচ্ছে সহজ-সরল পথ। তাঁর দেখানো পথেই আমাদের চলতে হবে। তিনি বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব থেকে আমরা কতটুকুন সতর্ক হয়েছি? তারপরও আমরা দুর্নীতি করে যাচ্ছি। মানুষ ঠকাতে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছি। হাশরের মাঠে আমরা আল্লাহর কাছে কী জবাব দেবো ? এ প্রশ্ন রেখেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে ‘হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং একটি মানবিক বিশ্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, প্রতিমা ভাঙার অভিযোগে আজও কয়েকটি মামলার শুনানি হয়েছে। এটি কেন হবে? যখন গুজরাটে দাঙ্গা হলো তখন আমরা সেক্যুলার সরকারের কথা বলেছি। যদি সেক্যুলার সরকার হতো তাহলে হয়তো এ ঘটনা ঘটতো না। কিন্তু আমাদের এখানে যখন তেমন ঘটনা ঘটে, তখন আমরা সেক্যুলার থাকি না।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এদেশে প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার। কেন হিন্দুরা ভাববে তারা মাইনরিটি? সবাই এদেশের নাগরিক। আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। রাসূলের পথে আমাদের চলতে হবে। তার পুরো জীবনই অনুকরণীয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা প্রতিদিন নামাজে সুরা ফাতিহা পড়ি। যেখানে একটি আয়াত আছে, যে আয়াতের সরল অর্থ হলো, আল্লাহ আমাদের সহজ-সরল পথ দেখান। এখন কথা হলো সেই সহজ-সরল পথ কোনটি ? সহজ-সরল পথ, যেটা আমাদের রাসুল (সা.) দেখিয়ে গেছেন। দুনিয়ার কোনো সম্পদ যাকে আকর্ষণ করেনি। তিনি মানুষের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তা ছিল মানবিক। তিনি একজন শত্রুর সঙ্গেও মানবিক আচরণ করেছেন। অথচ আমরা কীভাবে দুর্নীতি করে সহায়-সম্পদ গড়ে তুলবো, কীভাবে বাড়ি-গাড়ি করবো তা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। আমাদের এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
করোনা মহামারি প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব থেকে আমরা কতটুকুন সতর্ক হয়েছি? তারপরও আমরা দুর্নীতি করে যাচ্ছি। মানুষ ঠকাতে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছি। প্রশ্ন হলো, হাশরের মাঠে আমরা আল্লাহর কাছে কী জবাব দেবো ? রাসুল আমাদের কী শিখিয়ে গেছেন ? আর আমরা কী করে বিদায় নিচ্ছি ?
প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, এই করোনায় ২৬২ জন বিচারক ও আইনজীবী মারা গেছেন। করোনায় কত লোক চলে গেল, তারপরও আমরা কি সতর্ক হয়েছি? এর থেকে আমরা কি কোনো শিক্ষা নেব না? আমরা কতটা মানবিক হয়েছি?
হযরত মুহাম্মদ (সা.) জীবনে অনেক কম্প্রোমাইজ করে হুদায়বিয়ার সন্ধিসহ অনেক কাজ করেছেন। যদিও তাতে মুসলমানদেরই বিজয় হয়েছে। বিশ্বের প্রথম লিখিত সনদ মদিনার সনদের মাধ্যমে সব সম্প্রদায়ের মাধ্যমে এক জাতি গঠনের কথা বলা আছে। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি যাতে না হয় সেটিও বলা আছে।
আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির সভাপতিত্ব করেন। এতে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো: নূরুজ্জামান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন প্রমুখ বক্তৃতা করেন। এ সময় হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্ট বারের সর্বস্তরের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বারের সম্পাদক অ্যাডভোকট আব্দুন নূর দুলাল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।