Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভূমিকম্পে টালমাটাল হবে হিমালয় ডেকে আনতে পারে মহাপ্রলয়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ভারতের ভূমিকম্প বিশারদদের মতে, ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে টালমাটাল হতে চলেছে হিমালয় পর্বতমালা। এই মাত্রার ভূমিকম্প ডেকে আনতে পারে মহাপ্রলয়। আর তাদের কথার সাথে একমত হয়েছেন দীর্ঘ দিন ধরে হিমালয়ের ওপর গবেষণা চালানো মার্কিন বিশেষজ্ঞরাও। ভারতের বেঙ্গালুরুর ‘জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চ’ এর ভূকম্পবিদ সি পি রাজেন্দ্রনের নেতৃত্বে চালানো এক গবেষণায় এ প্রলয়ের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
সম্প্ররতি ‘জিওলজিকাল জার্নাল’ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে হিমালয়ের তলার প্লেটে চাপ বাড়ছে। প্লেটের একটি অংশ, আরেকটি অংশের ওপর কয়েকশ বছর ধরে চাপ বাড়িয়েই চলেছে। অন্তত একটি ৮.৫ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
নেপালের মোহনখোলা এবং ভারতের চোরগলিয়া অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালানো হয়েছে। স্থানীয় স্তরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পাশাপাশি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো এবং গুগল আর্থের বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে এলাকার ভূপ্রকৃতির পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন বিজ্ঞানীরা। এরপরই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন ভারতীয় ভূতত্ত্ববিদদের এই দলটি।
গবেষক রাজেন্দ্রনের দাবি, মাটির তলার চাপ যে জায়গায় পৌঁছেছে, সেখানে একটি অংশ, অন্য অংশের থেকে প্রায় ১৫ মিটার সরে যেতে পারে। মাটির তলার এই ১৫ মিটার সরনের প্রভাব বহুগুণে বেড়ে পৌঁছবে ওপরে। যার ভয়াবহতা বিচার করার জায়গায় এই মুহ‚র্তে নেই বিজ্ঞানীরা।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে নেপাল হিমালয়ে ভ‚কম্পনের তীব্রতা ছিল ৮.১, যাতে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল গোটা দেশ। প্রাণ হারিয়েছিলেন ৯০০০ মানুষ। ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল অর্থনীতি যা থেকে এখনও পুরোপুরি বেরোতে পারেনি নেপাল। ২০০১ সালে গুজরাত ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল রিখটার স্কেলে ৭.৭, যা কেড়ে নিয়েছিল অন্তত ১৩ হাজার প্রাণ।
বিজ্ঞানীদের দলটি হিসেব করে দেখেছেন হিমালয়ে শেষবার এই মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল ১৩১৫ থেকে ১৪৪০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে। তার পরে আর কোনও বড় ভূমিকম্পের শিকার হয়নি কেন্দ্রীয় হিমালয়ের একটি বিরাট অংশ। যে কারণে মাটির তলায় চাপ বেড়েই চলেছে। এখন হিমালয় এই ভূমিকম্পের মাধ্যমে সেই চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করবে এবং সেই দিন আসন্ন।
জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধে সি পি রাজেন্দ্রন বলেন, এই মাত্রার ভূমিকম্পে হলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে উত্তর ভারত। এই কম্পনের পরিণতি হবে মারাত্মক। কোনও কিছু না ভেবে হিমালয়ে তৈরি হচ্ছে নানা জনপদ। নিজের মতো পরিবেশ তৈরি করছে মানুষ। এই প্রলয় সামাল দেয়ার কোনো প্রস্তুতি এই মুহূর্তে ভারতের হাতে নেই। গত কয়েক বছর ধরেই হিমালয়ের বিভিন্ন অংশে আমরা ছোট ছোট কম্পন আমরা লক্ষ্য করছি, যা আসলে বড় মাত্রায় কেঁপে ওঠার লক্ষণ।
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রজার বিলহ্যাম দীর্ঘদিন ধরে হিমালয়ে ভূকম্পনের মাত্রা নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন। তার কথায়, ভারতীয় বিজ্ঞানীরা যে সতর্কবার্তা দিয়েছেন, তা একদম সঠিক। শক্তিশালী একটি ভূমিকম্পের সময় আসন্ন। যদিও সেই ভূমিকম্পের তীব্রতা নিয়ে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা বোধহয় একটু বেশি সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। আমাদের হিসেবে এই ভূকম্পনের তীব্রতা রিখটার স্কেলে ৮.৭ ছুঁতে পারে। আর এই ভূমিকম্পের প্রভাব পড়বে ভারতের পূর্ব আলমোড়া থেকে শুরু করে নেপালের পশ্চিম পোখরা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ