Inqilab Logo

সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে প্রশাসন শঙ্কিত

নির্বাচন সামনে রেখে মাঠে ৫ সংস্থা

সাখাওয়াত হোসেন | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

জাতীয় পত্রিকার আদলে ২২ ভুয়া ওয়েবসাইটে সক্রিয় অর্ধশত গ্রুপ
এনামুল ফের রিমান্ডে : নতুন গ্রেফতার ২
নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার আদলে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচারে জড়িত অর্ধশত চক্রকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের গ্রেফতার ও নেপথ্যে জড়িতদের ধরতে এরই মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ ৫ সংস্থা মাঠে নেমেছে। শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরে থেকেও এসব চক্রের সদস্যরা অপপ্রচারে লিপ্ত থাকায় শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন প্রশাসনের নীতি নির্ধারনী পর্যায়ের কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার আদলে ২২ ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচার করছে ওই চক্রের সাথে জড়িতরা। এদের মধ্যে এনামুল হকসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন তদন্তে জড়িত আ্ইন-শৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
র‌্যাবের মিডিয়া উইং প্রধান মুফতি মাহমুদ খান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার আদলে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে আস্থার জায়গাটা নষ্ট করা হচ্ছে। এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সারাদেশে সক্রিয় রয়েছে র‌্যাব। এদের গ্রেফতারে কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের অপ্রচারে শংকা থাকলেও এর সাথে জড়িত অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ ধরনের কার্যকলাপ প্রতিরোধে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি, র‌্যাব ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা সক্রিয় রয়েছেন। এ সব সংস্থার কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিং করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইন-শৃংখলা বাহিনীর শীর্ষ দুই কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার আদলে ভুয়া বা নকল ওয়েবসাইট তৈরির সাথে জড়িতরা শুধু দেশেই সক্রিয় নয়, এদের একটি অংশ দেশের বাইরে থেকে কাজ করছে। দেশের ভেতরে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হলেও বিদেশে অবস্থানরতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন খুবই কঠিন।
মিথ্যা, অতিরঞ্জিত ও বানোয়াট সংবাদ প্রচারের বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের মধ্যে এক ধরনের শংকা রয়েছে উল্লেখ করে কর্মকর্তাদ্বয় বলেন, এ ধরনের বিষয় নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে ধারনা খুব একটা নেই। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা, অতিরঞ্জিত ও বানোয়াট সংবাদ প্রচার করে বিভ্রান্ত ও উত্তেজিত করে তোলার আশংকা থেকেই যায়।
সূত্র জানায়, নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার আদলে নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচারের অভিযোগে গ্রেফতার এনামুল হককে ফের একদিন রিমান্ডে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফাইরুজ তাসনীম বৃহস্পতিবার শুনানিশেষে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিন দিনের রিমান্ডশেষে এনামুলকে এদিন আদালতে হাজির করে আরও সাত দিনের হেফাজতের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কমলাপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের এসআই মিজানুর রহমান।
আদালতে দাখিল পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচন সামনে রেখে গত কয়েক মাস ধরে প্রথম আলো, বাংলা ট্রিবিউন, বিবিসি বাংলার মত বিভিন্ন নিউজ পোর্টালের আদলে বেশ কিছু ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে বানোয়াট ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। মূল ওয়েবসাইটের নামের সঙ্গে একটি হরফ যোগ করে দিয়ে একই রকম লোগো ও ইউআরএল ব্যবহার করা হচ্ছে এসব ক্ষেত্রে। সেসব ভুয়া খবর ফেইসবুকেও ছড়ানো হচ্ছে, ফলে বিভ্রান্ত হচ্ছে পাঠক। এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর গত ২৪ নভেম্বর এনামুলকে রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।
মামলায় বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণারত এনামুল অন্তত ২২টি ওয়েবসাইট নকল করে সেগুলোতে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে আসছিলেন।
র‌্যাব সদরদপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারি পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, বুধবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও গাজীপুরের টঙ্গী থেকে কামাল হোসেন (২৩) ও মো. আল আমিন (৩০) নামের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। বিভিন্ন পত্রিকার ওয়েবসাইটের আদলে নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে তারা মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচার করে আসছিল। দুজনের মধ্যে কামালকে মোহাম্মদপুর থেকে এবং আলামিনকে টঙ্গী থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, গ্রেফতার দু’জন নির্বাচন সামনে রেখে অনলাইনে ভুয়া খবর ছড়িয়ে দেশ-বিদেশে ‘সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন করার’ চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। গত আগস্টে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় গুজব ছড়িয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিতেও তারা ভূমিকা রাখে।



 

Show all comments
  • MD Liton ১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৪১ এএম says : 0
    এসব ভূয়া ওয়েবসাইটগুলা বেশীরভাগ'ই প্রবাস থেকে নিয়ন্ত্রন করা হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Salim Khan ১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৪১ এএম says : 0
    যারা অপপ্রচার গুলো শেয়ার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হউক।
    Total Reply(0) Reply
  • Mak Milon ১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৪২ এএম says : 0
    শাস্তি না দিয়ে এদের আসল ওয়েবসাইট বানানোর চাকরি দেয়া দরকার। কারণ, এদের মেধা আছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Shohag Mushfiq ১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৪২ এএম says : 0
    অপপ্রচার করার জন্য মিছেমিছি একটা ওয়েবসাইটে দীর্ঘ সময় নষ্ট করবে এটা অযৌক্তিক
    Total Reply(0) Reply
  • Sumon Mohhamod ১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৪৩ এএম says : 0
    ওদের কঠিন, বিচার, করা দরকার।।জানি,এই,ধরনের ঘটনা, আর,কেউ না করে
    Total Reply(0) Reply
  • Emon Khan ১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৪৩ এএম says : 0
    ভাই রে এত কিছু না বলে শাস্তি দেওয়ার পর ওদের একটা আইসিটি বিভাগে চাকরি দিয়ে কর্মের সুযোগ করে দিয়া যাই কি দেখেন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ