পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, ঋণ বিতরনের পর সেই অর্থ যথাযথ ব্যবহার হয় কি না তা মনিটরিং করতে হবে। তিনি বলেন, ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। ঋণ যে কাজে নেয়া হচ্ছে সে কাজে ব্যবহার হচ্ছে কি-না তা মনিটরিং করতে হবে।
গতকাল মেধাবীদের জন্য আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের শিক্ষা বৃত্তি ও সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ লাবু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফরমান আর চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমের আওতায় প্রতিবছর ৮০০ মেধাবী শিক্ষার্থীকে চার কোটি টাকার শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করবে এআইবিএল। এরই অংশ হিসেবে গতকাল ২০১৮ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ২০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়। আগামি চার বছর বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকে মাসিক তিন হাজার ও প্রতি বছর এককালীন ৮ হাজার টাকা করে বৃত্তি পাবে। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান হাফেজ মো. এনায়েত উল্লাহ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী চৌধুরী, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আমির উদ্দিন, সদস্য আব্দুল মালেক মোল্লা, মো. হারুন-অর-রশীদ খাঁন, মো. আনোয়ার হোসেন, বদিউর রহমান, ইঞ্জি. খন্দকার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, আহামেদুল হক, নিয়াজ আহমেদ, ড. মো. শফিউল হায়দার চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন, এম কামাল উদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
ব্যাংকিং খাতে কোন তারল্য সংকট নেই উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, বর্তমানে যথেষ্ঠ তারল্য আছে। এটা নিয়ে সন্দেহ করার কোন কারণ নেই। আমরা অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যে আছি। এখন শুধু আমাদের কর্পোরেট রেসপনসিবিলিটি বা ম্যানেজমেন্ট পূরণ করতে হবে।
কৃষিঋণের সুদ নিয়ে তিনি বলেন, প্রতি বছর আমরা কৃষি ঋণ বিতরণের একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিলেও অধিকাংশ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক বিশেষ করে বিদেশি ব্যাংকগুলো মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটউটের (এমএফআই) মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করছে। সেটা ঠিক আছে। কিন্তু ঋণের সুদ কিন্তু আর ৯ শতাংশের মধ্যে থাকছে না। সুদের হার দ্বিগুনের বেশি হারে চলে যাচ্ছে। কারণ এমএফআইর সুদের হার অনেক বেশি। এতে সুবিধাভোগী কৃষকদের অনেক বেশি সুদ দিতে হচ্ছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কৃষি ঋণ বিতরণের সিদ্ধান্ত আল আরাফাহ ব্যাংকের একটি সময়োপযোগী ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ বলে মনে করেন গভর্নর। এতে কৃষি ঋণ সরাসরি কৃষকের কাছে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আল আরাফাহ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কম থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করে গভর্নর বলেন, যেখানে দেশে অবস্থিত বিদেশী বাণিজ্যিক ব্যাংকের নন পারফর্মিং লোন ৭ শতাংশের ওপরে এবং ব্যাংকিং খাতে ডবল ডিজিটে রয়েছে সেখানে আল আরাফাহ ব্যাংকের ৫ শতাংশ। এদিক দিয়ে ব্যাংকটি প্রশংসনীয়।
ব্যাংকটির ঋণ ও আমানত রেশিও (এডিআর) নিয়ে তিনি বলেন, আল আরাফাহ ব্যাংকের ঋণ এবং আমানতের রেশিও একটু বেশি আছে। আমানত বৃদ্ধি পাচ্ছে ১৩ শতাংশের বেশি এবং ঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৪ শতাংশের বেশি। এটি পরিমান মত আনার কথা বলেন।
গভর্নর জানান, দেশের ব্যাংকিং খাতে সিএসআর ব্যয় প্রায় ১৯ গুন বেড়েছে। ২০০৯ সালে মোট ব্যয় হয়েছিল ৫৫ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের জুনশেষে ব্যাংকগুলো সিএসআর খাতে ব্যয় করেছে ১ হাজার ৪৯ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে বর্তমানের চেয়ে ব্যাংক কম ছিল ১২-১৩টি। ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি প্রশংসনীয় ব্যাপার।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ফজলে কবির বলেন, তোমাদের মনে রাখতে হবে তোমরা মেধার জোড়ে বৃত্তি পেয়েছ, কারও দয়ায় নয়। তোমরা সুনাগরিক হবে, যেখানে থাক দেশের ও মানব সেবায় অবদান রাখবে।
আব্দুস সামাদ লাবু বলেন, ব্যাংকটি প্রথম থেকে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত। এর রয়েছে একটি শক্তিশালী ইসলামী শরিয়াহ কমিটি। এ কমিটি বছরশেষে কোনো সন্দেহজনক আয় পেলে তা হিসাব থেকে বাদ দেয়। তিনি বলেন, প্রতি বছর ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা সন্দেহজনক আয় হিসেবে বাদ দেয় ইসলামী শরিয়াহ কমিটি। এরপর আমাদের ব্যাংকের আয় প্রকাশ করা হয়। তিনি বলেন, শতভাগ শরিয়াহ সম্পন্ন ব্যাংকটি কখনও আপোষ করেনি ভবিষ্যতেও আপোষ করবে না।
বর্তমানে আমানতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যাংকটির আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বিনিয়োগ করা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। তিনি বলেন, আমরা যখন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করি তখন তা শুধু বাণিজ্যের জন্য নয় মানবিক সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই ছিল মূখ্য উদ্দেশ্য। ফরমান আর চৌধুরী বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে সুনাগরিক এবং দেশ ও দেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত করার কথা বলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।