মনোনয়নে গড়মিল হলে গৃহ আগুনে পুড়বে সিলেট আওয়ামীলীগ পরিবার। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এমন আশংকা বিরাজ করছে তৃণমূলে। দীর্ঘ ১০ বছরের শাসন ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণে সরকার দলীয় এমপি নিজেদের আখের গোছাতে গিয়ে হয়ে পড়েছেন বিতর্কিত। একই সাথে কর্তৃত্ব আর নেতৃত্ব কেন্দ্রিক আধিপত্য গড়তে গিয়ে দল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন তারা। তাদের এহেন আচরণের তৃণমূলে চাপা ক্ষোভের পাশাপাশি প্রকাশ্যে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটছে। এতে করে বহুধা বিভক্ত হয়ে পড়ছে তৃণ আওয়ামীলীগ। তাদের সামনে একটি-ই টার্ম কার্ড আসন্ন নির্বাচন। এই নির্বাচনে দল বিচ্ছিন্ন বলয় নির্ভর এমপিরা মনোনয়ন লাভ করলে তারা প্রতিবাদ, প্রতিরোধে নামার প্রস্তুতি মাথায় রেখেছেন। এতে করে কল্পনাতীত অনৈক্য সৃষ্টি হবে নৌকার ভোটারদের মধ্যে। যার ফলশ্রুতিতে আগামী নির্বাচনে নৌকার করুন দশা হয়ে যেতে পারে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে সর্বমহলে।

সিলেটের ৬টি নির্বাচনী আসনের মধ্যে ৪টি আওয়ামীলীগ ও ২টি জাতীয় পাটির হাতে চলে যায়। এই ৬ এমপির মধ্যে কেউই ব্যক্তি জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেননি। তবে ১ আসনে এমপি আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও সিলেট ৬ আসনে এমপি নুরুল ইসলাম নাহিদের অবস্থান আলাদা। অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার কারনে তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অংগনে আলোচিত সমালোচিত হলেও তাদের মর্যাদায় গৌরববোধ করেন স্থানীয় ভোটাররা। তব্ওু স্থানীয়ভাবে দলের মধ্যে গ্রহনযোগ্য অবস্থানে নেই তারা। তাদের নিয়ে দলের অভ্যন্তরে রয়েছে চাপা ক্ষোভ, অসন্তোষ। এই দুই এমপি বা মন্ত্রী ও মনোনয়ন নিয়ে আসলেও তাদের পক্ষে দলের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ থাকেব বলে মনে করছেন সচেতন রাজনীতিক বিশ্লেষকরা। এছাড়া সিলেট ৩ ও ৪ আসনে রয়েছেন নৌকার সাবেক দুই এমপি। তারা এবার মনোনয়ন প্রত্যাশি। তাদের মধ্যে সিলেট ৩ আসনে সবচেয়ে বেকায়দায় রয়েছেন এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। দলে তার মতো চরম খারাপ অবস্থায় সিলেটে অন্য কোন প্রার্থী নেই। প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি এতোই জটিল ও করুন যে তাকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটের মাঠে কাজ করবে দলের নেতাকর্মীরা এমন ভাবলে, টাস্কি খেতেই হবে। কোন সমীকরনে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে মেনে নিবে না। তার সাথে দুরত্বের পর্যায়টা নেতাকর্মীদের বলা বাহুল্য। ৪ আসনের এমপি প্রার্থী ইমরান আহমদ নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধ না হলে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। তার বহি:প্রকাশ নির্বাচনী মাঠে ও ফলাফলে উঠে আসবে । সিলেট ৫ ও ২ আসনে জাপার দুই এমপি এবার মহাজোটের মনোনয়ন পেলেও ভোটের মাঠে তার একেবারে অপাংক্তেয়। তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগের শক্ত অবস্থান যেমন, সেই সাথে তো প্রতিপক্ষদের বিরোধীতা অনিবার্য। এতে করে নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিপক্ষের চেয়ে নিজেদের সমর্থিত দলের মধ্যে কঠিন চ্যালেঞ্জ মুখে পড়বেন তারা। যদি এর বিকল্প হিসেবে নতুন পুরাতন মিলে দলে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে সমর্থ হয় মহাজোট, তাহলে আশাতীত ফলাফল সহ দলে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের দেখা মিলবে।