এডিট করা যাবে পাঠানো মেসেজ! অতি প্রয়োজনীয় ফিচার আনছে হোয়াটসঅ্যাপ
অ্যাপেল কিংবা টেলিগ্রামের মতো অ্যাপগুলিতে মেসেজ পাঠিয়ে দেয়ার পরও তাতে কোনও ভুল থাকলে এডিট করা
দিন যত যাচ্ছে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা ততই বেড়ে চলেছে। বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ সবার পছন্দের তালিকায় রয়েছে ফেসবুক। কিন্তু আমাদের এই শখের জিনিস টা কতো টুকু নিরাপদ হ্যাকারের কবল থেকে! দিন যত চাচ্ছে প্রযুক্তির সাথে পাল্লা হ্যাকিং এর কৌশলও পাল্টে যাচ্ছে হ্যাকারা নিত্য নতুন উপায় বের করছে। আমরা নিরাপদ রাখতে পেরেছি আমাদের ফেসবুক একাউন্ট টি?
রাখা চেষ্টা করেছি হয় তো বা, কতোটুকু পেরেছি। ফেসবুক আইডি হ্যাকিং এর জন্য জনপ্রিয় পদ্ধতি গুলো হচ্ছে, পাসওয়ার্ড রিকভারি, ফিশিং, কীলগার, সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারি, সেশন হাইজেকিং, ম্যান ইন ডা মিডল অ্যাটাক, ব্লট ফোর্স অ্যাটাক ইত্যাদি।
হ্যাকিং থেকে মুক্তির জন্য কিছু সতর্কতা এবং কি কি উপায়ে হ্যাকিংয়ের কবলে পড়তে পারেন, সেই বিষয়ে নিচে কিছু আলোচনা করছি।
১. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার
এমন একটি পাসওয়ার্ড নির্বাচন করুন, যাতে হ্যাকার সহজে তা ভাঙতে না পারে। নিজের নাম, শহর, জন্ম সাল, প্রিয় ব্যাক্তি নাম না দেওয়াই উত্তম। যেমন- Abc@123!fb
আবার, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড নির্বাচন করার মনে রাখতে হবে যেন তা আপনার মনে থাকে। না হয় নিজেই বিপদে পড়বেন। হ্যাকাররা প্রথমে brute force attack এর মাধ্যমে পাসওয়ার্ড ভাঙ্গার চেষ্টা চালায়।
তাই শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই। একটি নিরাপদ ফেসবুক আইডির প্রথম ও অন্যতম শর্ত হচ্ছে পাসওয়ার্ড । উপরে উল্লেখিত নিয়মে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলে তা ভাঙ্গা অসম্ভব।
২. ই-মেইল
যে মেইল দিয়ে ফেসবুক একাউন্ট খোলা হয়েছে, সেই মেইল একাউন্ট নিরাপদ রাখা। একটি নাম্বার এবং একটি মেইল আইডি দিয়ে ভেরিফাইড করে রাখা প্রয়োজন। যাতে হ্যাকার অন্তত মেইল আইডি রিকভার না করতে পারে।
আর কোন ভুতুড়ে মেইল থেকে মেইল আসলে তা ডিলেট করে দেওয়াই উত্তম। এবং এই মেইল আইডি গোপন রাখাই ভাল। ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অন্য আরেকটি ই-মেল আইডি অ্যাড করে রাখুন।
যদি আপনার একাউন্ট হ্যাক হয়েও যায় সেক্ষেত্রে ফেসবুক আপনার দ্বিতীয় ই-মেইলে আপনার অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধারের জন্য তথ্য পাঠাবে। এবং পুনরুদ্ধার করা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
৩. অন্য পিসিতে লগইন
অন্যের কম্পিউটারে, সাইবার ক্যাফে বা ল্যাব এ লগ ইন না করা ভাল। কারণ সেই সব পিসিতে আপনার ব্যবহার করা পাসওয়ার্ডটি অটো সেইভ হওয়ার কোন ব্যবস্থা থাকতে পারে। আপনি লগইন করার সাথে সাথেই লগইন তথ্য কোন একটা মেইলে চলে যাবে।
এরপরও অনেক সময় জরুরী প্রয়োজনে অন্য পিসিতে লগইন করার প্রয়োজন হতে পারে। যদিও করতে হয় ব্যবহার শেষে ব্রাউজারের cache, history ক্লিন করে দিলে কিছুটা বিপদ মুক্ত থাকা যাবে।
৪. ওয়াই ফাই
Man in the middle attack এর মাধ্যমে, যখন কোন ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে এ যুক্ত থাকবেন তখন একই ওইফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে এমন কেউ পাসওয়ার্ড বের করে ফেলতে পারবে। শেয়ার নেটওয়ার্ক তাই কিছুটা রিস্কি অবশ্যই। তাই সেই রকম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করলে আপনার অগোচরে আপনার ফেসবুক হ্যাক করে কেউ আপনার সকল তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন, সতর্ক থাকুন।
৫. অপরিচিত বন্ধু
অচেনা কাউকে ফ্রেন্ড লিস্টে এড করার ভেবে দেখা ভালো। কারণ হ্যাকার আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকলে তা সে সুযোগ হিসাবে কাজে লাগাবে। অর্থাৎ হ্যাক করতে হলে হ্যাকারকে আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকতে হবে। অপরিচিত কোন সুন্দরী মেয়ের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পেলেই তার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করার আগে কয়েকবার ভেবে দেখা উচিত। কিংবা যাদের প্রোফাইলে কোন ছবি নাই, যাদের অরিজিনাল প্রোফাইল নাম নাই, তাদেরকে ফ্রেন্ড তালিকাতে না রাখাটাই নিরাপদ।
৬. সন্দেহজনক লিংক
মেসেঞ্জারে অথবা নিউজ ফিড সন্দেহজনক কোনো লিংক দেখলে তা এড়িয়ে যেতে হবে। এই ধরণের লিংক ফিশিং লিংক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফিশিং হচ্ছে ফেসবুকের একটি ফেইক লগ ইন পেইজ । হ্যাকারদের মূল লক্ষ্য থাকে টার্গেটকে সেই পেইজে লগইন করানো।
ফিশিং লিংক গুলো দেখলে সহজে বুঝা যায়। বর্তমানে wapka, tk এই ধরনের সাইট গুলো ফিশিং এর জন্য বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। কোন লিংকে ক্লিক করে লগইন না করলেই এটি থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়। সুরক্ষিত থাকার জন্য উপায় হলো ,যখন ফেসবুক ওয়েবসাইটে ঢুকবেন তখন খেয়াল করবেন https সহ ফেসবুক ওয়েবসাইট লিংক দেখাচ্ছে কিনা।
৭. প্লে স্টোর ছাড়া অ্যাপ্লিকেশন
প্লে স্টোর ছাড়া কোন গেম, অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার এবং অন্যের পাঠানো কোনো লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বাহিরের কোন অ্যাপ্লিকেশন হয়তো হ্যাকারের টুলসও হতে পারে। এতে করে নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনবেন। ইদানীং কালে প্লে স্টোরের অ্যাপস এর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকাটা জরুরী। এই সব অ্যাপসের মাধ্যমে আপনার ফেসবুকের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি আপনার মোবাইলের এসএমএস থেকে শুরু করে গ্যালারীতে রাখা সকল ছবি কিংবা ভিডিও আপনার অগোচরে হ্যাকারের হাতে চলে যাচ্ছে।
৮. ফেসবুক account এর login approvals,code generator option on করুন এবং trusted contacts add করে নিন।
৯ . কীলগার (keylogger)
Keylogger হচ্ছে এমন একটি সফটওয়্যার যা ডিভাইসে ঢুকিয়ে দিলে কম্পিউটারে যা টাইপিং করা হবে তা keylogger file এ রেকর্ড করে হ্যাকারের কাছে পাঠাতে সক্ষম। ফলে আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে কোন ঝামেলা পোহাতে হয় না।
keylogger কোন একটি ফাইলের সাথে যুক্ত করে দিয়ে ডিভাইসে ফাইলটি চালালেই তার তথ্য পেয়ে যাবে। keylogger গান,ছবি যে কোন ফাইলের সাথে যুক্ত করা যায়। এটা থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য যে কোন জায়গা থেকে কিছু ডাউনলোড করা হতে বিরত থাকতে হবে।
কিছু ডাউনলোড করলে সেটি অ্যান্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করে নেওয়া উচিত। keylogger থাকলে অ্যান্টিভাইরাস তা ধরতে পারে।
একই ভাবে , অ্যান্ড্রোয়েড মোবাইল
হ্যাক করা সম্ভব। তবে এটিকে RAT(Remote Administration Tool) বলা হয়। এটি থেকেও একই উপায়ে সুরক্ষিত থাকা যায়।
প্রতিনিয়ত আমরা বাধ্য হয়ে হোক কিংবা নেশার কারনে হোক ফেসবুক ব্যবহার করছি। সচেতন না থাকলে এ ফেসবুক আমাদের জন্য অনেক বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে। তাই ফেসবুক ব্যবহারে নিরাপত্তার বিষয়টাতে সর্বোচ্চ সচেতন থাকুন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।