Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নির্বাচনে রাজনীতিকদের দলীয় মনোনয়নে অগ্রাধিকার চায় সিলেটে তৃণমুল নেতাকর্মীরা

ফয়সাল আমীন | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০১৮, ৭:৩২ পিএম

দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রবাসী অধ্যূষিত সিলেটের ৬ টি আসনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে রাজনীতিক প্রার্থীদের মনোনয়নের প্রত্যাশা করছে প্রধান দু‘দল আওয়ামীলীগ-বিএনপির তৃণমুল কর্মী সমর্থকরা। বিশেষ করে আ‘লীগে প্রার্থী মনোনয়নের তুলনামুলক ভাবে রাজনীতিকদের মূল্যায়ন করলেও বিএনপিতে ব্যবসায়ীদৈর প্রাধান্য বেশি দেখা গেছে অতীতে। এতে করে নেতৃত্বশূন্যতায় হতাশা দেখা দেয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের ১০ বছর বিএনপির সাবেক এমপিদের রাজপথে কোনে ভূমিকাই দেখা যায়নি। তারা আরাম আয়েশ ব্যবসা বাণিজ্য করেছেন দিব্যি। অপরদিকে সাধারন নেতাকর্মীরা রাজনীতিক নিপীড়নে হয়ে পড়ে দিশেহারা। তাদের পাশে দাড়ানোর মতো কোন ভরশাপূর্ণ নেতাই ছিলেন না মাঠে। সেই এমপিরা দলের পরিচয়ে সংসদে গিয়ে দুধ-মুধ খেয়ে আখের গোছালেও রাজনীতিক ময়দানে তাদের অনুপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। এমনিতেই বিএনপির স্থানীয় নেতৃত্ব ব্যবসায়ীরা দখল করে নিয়েছেন। টাকার বিনিময়ে পদ পদবী অলংকিত করা যায় বিএনপিতে এমন সহজ হিসেব রয়েছে নেতাকর্মীদের মন মগজে। ত্যাগী বা ত্যাগ বিএনপির নেতৃত্ব পৌছার মান-দন্ড হিসেবে বিবেচিত না হ্ওয়ায় সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে মাথা উচু করে রাজপথে দাড়াতে পারেনি বিএনপি। যদিও সরকার দল ও পুলিশ বাহিনীর প্রতি আঙ্গুল দেখিয়ে নিজদের ব্যর্থতা চাপা দেওয়ার ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়ে যায় বিএনপি। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতায় দেখা যায়, দলের নেতৃত্ব বা এমপি হওয়ার খায়েশধারীরা নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান করে বসে থাকে দলীয় কর্মসূচীতে অবস্থান না নিয়ে। সেকারনে এমপি পদে মনোনয়ন ধারীদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধে কোন মামলা মোকদ্দমা নেই। তারা রাজপথেও নেই। কর্মী বান্ধব বা দলের নেতাকর্মীদের পাশে না থেকে সময় মতো টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনে নেওয়ার মানসিক ব্যক্তিরাই এখন দলের এমপি হওয়ার প্রতিযোগীতার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। সিলেটের ৬টি আসনে এমন চিত্রই এখন বাস্তবতা। কিন্তু তুলনামুলক ভাবে আওয়ামীলীগে রাজনীতিক পরিচয়ে এমপি প্রার্থী হওয়ার সংখ্যাই বেশি। মন মেজাজ সেই ভাবে গড়ে তুলেছেন। আ‘লীগে রাজনীতিক পরিচয় মনোনয়ন লাভে যেখানে বিবেচনা, সেখানে বিএনপিতে টাকাই যেন মনোনয়ন নিশ্চিতের যোগ্যতা হওয়ার রাজনীতিক আগ্নঘাতি প্রবনতা। এহেন অবস্থায় এবারও টাকা ওয়ালাদের আধিক্যে দলের প্রকৃত রাজনীতিক মনোনয়ন প্রত্যাশিরা কোনঠাসা হয়ে উঠছেন। কিন্তু নির্বাচনী এই পরিবেশ বা ধারা সক্রিয় করে তুলতে জেল জুলুম ত্যাগ তীতিক্ষার সবটুকুই উজাড় করে দিয়েছে রাজনীতিকরা। কিন্তু দলের মনোনয়নের বাজারে তারা পেছনের সারিতে । কোন মূল্যায়ন নেই বা দলে তাদের নিয়ে তেমন কোন উদ্যাগ্ও লক্ষনীয় হচ্ছে না। এতে করে রাজনীতিক ও ব্যবসায়িক সুবিধা ভোগী নেতৃত্বের বিরাট বুঝাপাড়ার ফারাক চলছে বিএনেিত। এই ঘাটতি দলের হাই কমান্ড আমলে না নিলে মাঠ রাজনীতিতে হারিয়ে যেতে পারে বিএনপি এমন আশংকা করছেন অনেকে। সেকারনে সিলেটের তৃণমুল নেতাকর্মীরা মনে করেন ব্যবসায়িক নেতৃত্বের চেয়ে রাজনীতিক নেতৃত্ব উপযোগী ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার বিকল্প নেই। এর মধ্যে দিয়ে দলের রাজনীতি সহ দেশ জাতির স্বার্থ সংহত হবে। কর্মী সমর্থকরা তাদের পাশে থেকে রাজনীতির মানসিকতায় উন্নিত হবে। বিগত দলীয় সাংসদদের বেশিরভাগই ছিলেন ব্যবসায়ী। তাদের ক্ষমতাকালে ব্যবসায়ী মানসিকতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে সুবিধাভোগী নেতাকর্মীরা। রাজনীতিকে ব্যবহার করে ব্যবসায়ীভাবে প্রতিষ্টা অনেকে পেল্ওে দলের জন্য তাদের কোন অবদান নেই। কিন্তু যারা রাজনীতিক মানসিকতায় ছিল তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ব্যবসায়িক এমপিদের দাপুটে। কিন্তু দলের সেই রাজনীতিক কর্মীরা এখনও মাঠে ময়দানের ঠিকে রয়েছেন সরকার দলের রোষানলে পড়ে। তবে ব্যবসায়িক নেতারা ্ও সাবেক এমপিরা খুবই নিরাপদে। সেই নিরাপদ স্থানে থেকে এর্বাও মনোনয়নের দৌড়ে কোমর বেধে মাঠে নেমেছেন তারা। তাদের সাথে শরিক হয়েছেন আরো ব্যবসায়িক ব্যক্তিরা। তারা মনে করছেন টাকা দিয়েও মনোনয়ন লাভে সমর্থ হবেন তারা। টাকা যেখানে কথা বলে ষেখানে রাজপথে দলের জন্য জানবাজী রাখার প্রশ্ন উঠে না তাদের জন্য। তারা ঠান্ডা হাওয়ায় বসে টাকার পাহাড় গড়বেন, সরকার দলের সাথে আতাঁত করবেন, সময় মতো মনোনয়ন কিনে নিবেন। সংসদে গিয়ে রাজনীতির চেয়ে ব্যবসাকে মজবুত করবেন, এটাই তাদের উদ্দেশ্য। অতীতে বিএনপিতে এমন হয়েছে বলে সেই ধারনায় পথ চলছেন তারা। তবে দলের হাই কমান্ড এমন অবস্থার বিপরীতে কি করে সে বিষয়ে উদগ্রিব দলের নেতাকর্মীরা।

 

 

 

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মনোনয়ন

১৭ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ