পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইতিহাসের অনার্স ক্লাসের ছাত্রদের উদ্বোধনী ক্লাসেই নাকি শেখানো হয়, ‘হিস্টরি রিপিট ইটসেলফ’ সোজা বাংলায় বলতে গেলে যার অর্থ ‘দাঁড়ায় ইতিহাসের পূনরাবৃত্তি বারে বারে ঘটে।’
বাংলাদেশের একাদশতম সংসদ নির্বাচনের নানা রকম অ্যাকশান, সাসপেন্স, ক্লাইমেক্স যেন ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। দেশের বৃহত্তম ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপি নিজেরা ব্যাকফুটে থেকে সামনে এগিয়ে দিয়েছেন ব্যারিস্টার ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, বঙ্গবীর টাইগার সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্নাদের। ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট এর আদলে। ’৪৭-এ পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মদাতা ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগাররা তখন স্বপ্নেও ভাবেননি যুক্ত ফ্রন্টের হাতে তাদের পতন ঘটতে পারে। পতন, তাও আবার শোচনীয় পতন!
পর্যবেক্ষকরা দেখছেন, বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির জনকের দল আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঠিক আইয়ুব খানের উন্নয়নের এক দশকের মত ক্ষমতা ধরে রাখা ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাচ্ছিল্য করে বলছেন, ঐক্যফ্রন্টে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, বা কে আছেন তাদের মাঝে প্রধানমন্ত্রী হবার মত?
পর্যবেক্ষকদের মতে, অবশ্য নির্বাচনে প্রতিপক্ষের প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শন করতে গিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের মনে একটা সংশয়েরও ছাপ লক্ষ্য করা গেছে, হয়তো তাদেরও মনে হচ্ছে নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জিততেও পারে!
অভিজ্ঞদের অনেকেই কিন্তু আইয়ুব খানের শক্তহাতে দেশ চালনার পাশাপাশি উন্নয়ন ঘটানোর মত শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনায় মিল খুঁজে পাচ্ছেন। আইয়ুব খান যেমন বঙ্গবন্ধুর মতো নেতাকে জেলে পোরাবার সাহস দেখিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে জেলে পুরে শেখ হাসিনা অবশ্য তার চেয়েও দুঃসাহসের পরিচয় দিয়েছেন। আইয়ুবের কারাগারে শেখ মুজিব আত্মজীবনী লেখার মত কাগজ কলম পেলেও আত্মজীবনী লেখা তো দূরের কথা, তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। ক্ষমতায় থেকে আইয়ুব খান ‘ফ্রেন্ডস নট মাস্টার্স’ নামে একটি বই লিখেছিলেন। বই শেখ হাসিনাও লিখেছেন। তাকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্রও। অত কিছুর পরও ’৭০ এর নির্বাচনে ইস্ট ওয়েস্ট পাকিস্তানে আইয়ুবের দল জিততে পারেনি। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হিসেবে বাংলাদেশের একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ১৪ দল আইয়ুব খানের দলের মত হেরেও যেতে পারে, এমন সম্ভাবনা কিন্তু কেউ উড়িয়ে দিচ্ছে না!
’৭০ এর নির্বাচন হয়েছিল এমন এক সরকারের অধীনে যে ওই নির্বাচনে জেতা অসম্ভব মনে করেছিলেন মও. ভাসানীসহ অনেকে। কিন্তু দূরদর্শী বঙ্গবন্ধু কিন্তু বুঝে শুনেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। ফলও পেয়েছিলেন হাতে-নাতে। তখন বঙ্গবন্ধুর নিকটজন ছিলেন, তরুণ ব্যারিস্টার ড. কামাল হোসেন। সেই কামাল হোসেনই এখন ঝানু ও প্রাজ্ঞ হিসেবে ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে মূলত বিএনপিরই হাল ধরেছেন। সংশয় ও কারচুপির আশঙ্কা সত্তে¡¡ও অংশ নিচ্ছেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। বঙ্গবন্ধু যেমন তৎকালীন সরকারের সাথে বারবার নিষ্ফল আলোচনায় বসেছিলেন, এখন ড. কামালও সরকারের সাথে আলোচনায় বসছেন। ফল আসছে না, তবুও আলোচনায় বসছেন, কৌশলে বল ঠেলে দিচ্ছেন সরকারের কোর্টে। যেন সরকারের ভাবমর্যাদা নষ্ট হয়, কেটে যায় বিএনপির বিরুদ্ধে আরোপিত সন্ত্রাসী চিত্র। যতই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসছে, পর্যবেক্ষকরা তাকিয়ে আছেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে কি না তা দেখার জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।