নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনদিনে ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চারদিনে টেস্ট জিতেছিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও যে একই পারফম্যান্স প্রত্যাশা ছিল তা নয়। তাই বলে সিলেটে ওমন হার নিশ্চয় কারো কাছে কাম্য ছিল না। মিরপুর টেস্ট ছিল তাই টাইগারদের মান রক্ষার লড়াই। সেই লড়াইয়ে ভালোমত জিতলেও ভক্ত-সমর্থকদের মন জয় করতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ বাহিনী।
একটা টেস্ট জয় তো তখনই পূর্ণতা পায় যখন তার গায়ে কোন কলঙ্ক না থাকে। জয়ী ম্যাচে দূরদৃষ্টি দিলে বেশ কয়েকটি ক্ষুত চোখে পড়তে বাধ্য। প্রথমেই আসবে টপ অর্ডারদের আত্মহুতির গল্পের কথা। ওদিকে নতুন বলে কিছুই করতে পারেননি মুস্তাফিজ-খালেদরা। ফিল্ডিংও যে দুর্বলতা ছিল তা তো ম্যাচে মোট ছয় ছয়টি ক্যাচ মিস সেই কথাই বলে। ফিল্ডারদের তৈলাক্ত হাতের কারণেই তো অভিষেক ম্যাচে উইকেটশূণ্য থাকতে হয়েছে খালেদ আহমেদকে। তবে শেষ পর্যন্ত যে ভালোয় ভালোয় দুই ম্যাচ সিরিজে হার এড়ানো গেছে তাতেই সই।
কিন্তু বাংলাদেশের কাছে কী এমন পরফম্যান্স কাম্য ছিল? বিশেষ করে ভগ্ন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে? উত্তরটা অবশ্যই হবে ‘না’। এমন পারফম্যান্সে পুরোপুরি খুশি নন স্বয়ং দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও, ‘আমি পুরোপুরি খুশি না। কারণ প্রথম এবং এই টেস্টটি যদি আপনারা দেখেন তাহলে দেখবেন যে আমরা ওপেনিংয়ে বেশ সংগ্রাম করেছি। ঐ সময়টায় দল বেশ চাপেই পড়ে গিয়েছিল।’
ঢাকা টেস্টে রানের দেখা পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিঠুন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে দলের বাকি সদস্যরা ব্যাট হাতে বেশ নিষ্প্রভ ছিলেন। ব্যাটিংয়ে যে সংগ্রাম করতে হয়েছে সেটি তাই ‘অধরা’ হয়ে থাকেনি বোর্ড সভাপতির কাছে, ‘প্রথম ইনিংসে মুশফিক অসাধারণ ব্যাটিং করেছে এবং পরবর্তীতে রিয়াদও শতক হাঁকিয়েছে। তবে মিরাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দুই ইনিংসেই মিরাজ একটি ভালো ভূমিকা রেখেছে। মিথুনও দ্বিতীয় ইনিংসে রান করেছে। সবমিলিয়ে আমি বলব যে ভালো হয়েছে কিন্তু আমাদের অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে।’
বিশেষ করে টপ অর্ডারের ব্যর্থতা ভাবাচ্ছে পাপনকে। তিনিও ভালামতই জানেন দলের শীর্ষ সারির ব্যাটসম্যানরা রান না পেলে বাকি ব্যাটিং অর্ডারে চাপ পড়ে। যদিও ঢাকা টেস্টে সেই চাপ শক্ত হাতে সামলেছে মিডল অর্ডার। তবুও এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন নাজমুল হাসান, ‘এমন অবস্থা থাকলে টপ অর্ডাররা ব্যর্থ হয় এবং তিনটি উইকেট পড়ে গেলে দল অনেকটাই চাপের মুখে পড়ে যায়। টপ অর্ডারে আমি শুধু ওপেনিংয়ের দুইজনের কথা বলছি না। আমরা এর আগের যে টেস্টটি খেলেছি সেখানে আমরা মুশফিক, রিয়াদের কাছ থেকেও রান পাইনি। এটিও আসলে অনেক শঙ্কার বিষয়।’
ইনজুরির কারণে সিরিজে দলে ছিলেন না সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। এজন্য বাড়তি দায়িত্ব পড়ে দুই সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুরের কাঁধে। তবে এই দুজন রানে ফেরায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পাপন, ‘তামিম, সাকিবের অনুপস্থিতিতে যদি মুশফিক, রিয়াদ না রান করতে পারে তাহলে তো স্কোর হবেই না তা বোঝাই যাচ্ছিল। তবে সর্বোপরি এই টেস্টে যা ভালো লেগেছে সেটি হল মুশফিক এবং রিয়াদ রানে ফিরেছে।’
শুধু সিনিয়রদের রানে ফেরাই নয়, বোর্ড সভাপতিকে স্বস্তি এনে দিচ্ছে অপেক্ষাকৃত নতুন তথা জুনিয়র ক্রিকেটারদের আশাব্যাঞ্জক পারফরম্যান্স, ‘আমাদের লিটন দাস অনেক ভালো করছে। সৌম্য সরকার একটি ম্যাচে এসে দারুণ খেলে গিয়েছে, ওয়ানডেতে দেখেছেন। ইমরুলও ভালো খেলছে এশিয়া কাপ থেকে। মিঠুনও ভালো করছে। টেস্টেও সে ভালো ব্যাটিং করল। মিরাজ ভালো করছে, তাইজুলও ছিল আগে থেকে টেস্টে। সব মিলিয়ে আপনারা যদি দেখেন যে ওদের অবদান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং সঠিক সময়ে তারা অবদান রাখতে পেরেছে বলেই কিন্তু আমরা অনেকগুলো ম্যাচ জিততে পেরেছি এই ম্যাচ সহ। ওদের অবদান রাখাটা এটাই প্রমাণ করে যে আমাদের পাইপলাইনে খেলোয়াড় আছে।’
তবে সব ফরম্যাটে নতুনরা ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে না পারায় বোর্ড সভাপতির কপালে ফুটে উঠেছে চিন্তার ভাঁজ, ‘এটাও দেখবেন যে টি-২০ এবং ওয়ানডেতে লিটন, ইমরুল এত সুন্দর ওপেন করার পরও টেস্টে কিন্তু তাদের একেবারেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এটা তো অবশ্যই আমাদের একটি চিন্তার বিষয়। ওদেরকে আরও বেশি পরিণত হতে হবে এই টেস্ট কন্ডিশনেও। তাহলে আমি মনে করব যে দলটি একটি ব্যালেন্সড দল হয়েছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।