পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সর্বত্র উৎসবের আমেজ। সরগরম রাজনৈতিক দলের কার্যালয়। নেতাদের বাসা-বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মী সমর্থকদের ভিড়। পাড়ায় মহল্লা চায়ের দোকান সবখানে জমজমাট আলোচনা। একই চিত্র অফিস আদালতেও। বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের রাজনীতির মাঠ এখন বেজায় গরম। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে বিএনপির একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণার পরপরই পাল্টে যেতে থাকে দৃশ্যপট। গায়েবি মামলায় হুলিয়া আর ধরপাকড় উপেক্ষা করে আড়াল থেকে বের হয়ে আসতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়ার এই ঘোষণায় তৃণমূলেও ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। টানা একযুগ কার্যত বন্দিদশা থেকে ‘মুক্তি’- এই ‘মুক্তি’ চিরস্থায়ী করার প্রত্যয় নেতাকর্মীদের চোখে মুখে। গণতন্ত্র আর ভোটের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে বিজীয় হতে চান সবাই। ভোটের লড়াইয়ে প্রধান প্রতিপক্ষের নেমে পড়ায় ভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া আওয়ামী লীগে। টানা দশ বছর ক্ষমতায় থাকা দলের নেতাকর্মীরাও বুঝে গেছেন সামনে কঠিন লড়াই। তফসিল ঘোষণার পর থেকে পুলিশ প্রশাসন কিছুটা নিরপেক্ষ থাকলেও এ ভ‚মিকা কতদিন স্থায়ী হয় তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
লড়াইয়ের প্রস্তুতিও চলছে উভয় শিবিরে। একদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট। অন্যদিকে বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। দুই পক্ষেই নির্বাচনী যুদ্ধে নামছে সর্বশক্তি নিয়ে। দীর্ঘদিন পর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আভাস পেয়ে প্রার্থী হতে চান অনেকে। রীতিমতো মনোনয়ন সংগ্রহের হিড়িক পড়েছে। সব আসনেই প্রার্থীর ছড়াছড়ি। চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে আওয়ামী লীগের টিকিট পেতে ২২৫ জন নেতানেত্রী দলের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিএনপির ধানের শীষ পেতেও শতাধিক নেতা দলের ফরম তুলেছেন। অনেকে এখনও ঢাকায় অবস্থান করছেন। আজ শুক্রবার পর্যন্ত দেওয়া হবে মনোনয়ন ফরম।
প্রধান দুই দলের পাশাপাশি মহাজোটের শরিক এরশাদের জাতীয় পার্টি, বিএনপির শরিক এলডিপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন। গতকাল পর্যন্ত রিটার্নিং অফিসার, সহকারি রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয় থেকে শতাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। বিএনপি ও জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতা কারাবন্দি। কারাগারে থেকেও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকে। অন্তত ছয়জন নেতার মনোনয়নপত্র জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। নির্বাচনে প্রার্থী হতে দীর্ঘ লাইন অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা পেতে গড়ে ১৪ জন ফরম সংগ্রহ করেন। বিএনপিরও প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থী আছেন। নারীরাও এবার পিছিয়ে নেই। বিপুল সংখ্যক নেত্রী আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী হতে চান। আছেন ব্যবসায়ী, আইনজীবী, চিকিৎসকসহ পেশাজীবীরাও। এবারও চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসনে বড় দুই দলের ভিআইপি প্রার্থীরা ভোটে নামছেন। প্রার্থীর তালিকায় আছেন মরহুম নেতাদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যাসহ পরিবারের সদস্যরাও।
চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) আসনে বিএনপির মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন ১৩ জন। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনসহ আওয়ামী লীগের ফরম নিয়েছেন নয়জন। মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়–য়াও। বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলাম ইউসুফও মনোনয়ন পত্র নিয়েছেন। তার পুত্র ব্যবসায়ী নিয়াজ মোরেশদ এলিট নিয়েছেন আওয়ামী লীগের ফরম।
চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে খাদিজাতুল আনোয়ার সনিসহ ২৫ জন আওয়ামী লীগের ফরম নিয়েছেন। আর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, সাবেক বিচারপতি ফয়সল মাহমুদ ফয়জীসহ ফরম নিয়েছেন ১২ জন। চট্টগ্রাম-৩ (স›দ্বীপ) আসনে মাহফুজুর রহমান মিতাসহ আওয়ামী লীগের ১৪ জন মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। মোস্তফা কামাল পাশাসহ বিএনপির ফরম নেন আট জন। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড) আসনে দিদারুল আলম এমপিসহ ১৭ জন ফরম সংগ্রহ করেছেন। বিএনপির কারাবন্দি যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী এবং সাবেক সচিব ও আইজিপি এ আই ওয়াই বি সিদ্দিকীসহ দলের ফরম নিয়েছেন ১০ জন।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে আওয়ামী লীগের এম এ সালামসহ ১০ জন ফরম সংগ্রহ করেছেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, তার পুত্র ব্যারিস্টার মীর মো. হেলাল উদ্দিনসহ ফরম নিয়েছেন ১১ জন। এই আসনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ ইবরাহীম বীরপ্রতীক ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন চাইবেন। মহাজোটের প্রার্থী হতে পারেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীসহসহ চার জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, গোলাম আকবর খোন্দকার, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরীসহ বিএনপির ফরম নিয়েছেন বেশ কয়েকজন নেতা। চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনীয়া) আসনে ড. হাছান মাহমুদ, বিএমএ নেতা ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরীসহ চার জন ফরম সংগ্রহ করেন। এই আসনে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, হুম্মাম কাদের চৌধুরীসহ বিএনপির মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন ১০ জন।
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসন থেকে নুরুল ইসলাম বিএসসিসহ ১৭ জন আওয়ামী লীগের ফরম নেন। বিএনপির ফরম নিয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ খানসহ কয়েক জন। এবারও মহাজোটের প্রার্থী হতে পারেন জাসদের মঈনুদ্দিন খান বাদল। চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নুরুল ইসলাম বিএসসিসহ ২৬ জন ফরম সংগ্রহ করেছেন। বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন, মহিলা দলের বেগম ফাতেমা বাদশাসহ অনেকে দলের ফরম নেন। ।
চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-হালিশহর) আসনে ডা. আফছারুল আমিন, সাবেক সিটি মেয়র এম মনজুর আলমসহ আওয়ামী লীগের ফরম নিয়েছেন ১৭ জন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানসহ বিএনপির ফরম নিয়েছেন ৭ জন। চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে এমপি এম এ লতিফসহ আওয়ামী লীগের ফরম নিয়েছেন ১৭ জন। বিএনপির ফরম নিয়েছেন শুধুমাত্র আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে শামসুল হক চৌধুরীসহ ৯ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। সাবেক এমপি গাজী মো. শাহজাহান জুয়েলসহ বিএনপির ফরম নিয়েছেন আট জন। চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদসহ চার জন ফরম নিয়েছেন। সরওয়ার জামাল নিজামসহ বিএনপির ফরম নিয়েছেন পাঁচজন। চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে নজরুল ইসলাম চৌধুরীসহ ২৩ জন মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। ডা. মোহসিন জিল্লুর করিমসহ বিএনপির ফরম নিয়েছেন ছয় জন। এই আসনে ঐক্যফ্রন্টের একক প্রার্থী হতে পারেন এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসন আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুল ইসলাম আমিনসহ ১৮ জন মনোনয়ন ফরম নেন। বিএনপির শেখ মো. মহিউদ্দীনসহ সাত জন নিয়েছেন দলের ফরম। চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীসহ ১২ জন ফরম সংগ্রহ করেছেন। জাফরুল ইসলাম চৌধুরীসহ বিএনপির ফরম নিয়েছেন আট জন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।