পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন সোমবার সংসদ নির্বাচনের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর থেকে পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করার কথা ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি নির্বাচন করতে রাজি হওয়া বিরোধী দলগুলোর নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আংশিক দাবি মিটাতেই এ তারিখ পিছানো হয়েছে। খবর আল-জাজিরা।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ও অমিমাংসিত প্রধান রাজনৈতিক বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সরকারের সাথে আলোচনার দাবি জানানোর মধ্যে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের এ ঘোষণা দেয়া হল। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এখনো নির্বাচন একমাস পিছানো, বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দেয়া এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা নয়, নির্বাচনকালিন বিশেষ মন্ত্রীসভা গঠনের দাবি জানাচ্ছে।
অন্যদিকে শেখ হাসিনা ও তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জোর দিয়ে বলছে, আসন্ন নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্যগণ ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় থাকা উচিত। পরস্পরের প্রতি রাজনীতিবিদদের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা অনাস্থা এবং ক্ষতিকর অনমনীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতির কারণে বাংলাদেশের বিগত চারটি জাতীয় নির্বাচন (১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে। ২০১৪ সালের সংসদীয় নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময়েই নির্বাচনকালীণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাংবিধানিক বিধান বিলুপ্ত করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী দল নির্বাচন বর্জন করায় ক্ষমতাসীন দল ৫০ শতাংশ সংসদীয় আসন বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় পেয়ে যায়। এই নির্বাচনের পর থেকেই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অবস্থা নিয়ে সমালোচনা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা, কেউ কেউ ২০১৪ সালের নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন পর্যন্ত বলেছেন।
এই অবস্থা যদি বিদ্যমান থাকে এবং আগামী নির্বাচন ২০১৪ সালের মতো পরিবেশেই হয়, শেখ হাসিনা হয়তো খুব সহজেই টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসতে পারবেন। টানা ১০ বছরেরও বেশী সময় ধরে ১৭ কোটি মানুষের দেশ শাসন করা সহজ ব্যাপার নয় এবং ১৯৭১ সাল থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে কোন সামরিক কিংবা রাজনৈতিক নেতাই এ ব্যাপারে সাফল্য অর্জন করতে পারেননি।
দুর্বল বিরোধীদলের তুলনায় শেখ হাসিনা একজন কর্তৃত্বপূর্ণ নেত্রী। তার রয়েছে অসাধারণ রাজনৈতিক দক্ষতা ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তীক্ষ্ন দৃষ্টি। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক বিরোধীদের ধ্বংস ও পাশাপাশি রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে ধর্মভিত্তিক ও ধর্মনিরপেক্ষ দুই ক্ষেত্রেই অনেক বন্ধু তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। ১০ বছরের শাসনের পরে, শেখ হাসিনার দল তাদের মতাদর্শ অনুযায়ী পছন্দের লোকদের বাংলাদেশের প্রধান রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর সব পর্যায়ে নিয়োগ করে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। এর ফলে তার দলকে ক্ষমতায় থাকা নিয়ে কোন বিরোধের সম্মুখিন হতে হয়নি।
শেখ হাসিনার অধীনে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন: হাসিনার শক্ত শাসন বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এনেছে, যার ফলে গত দশ বছরে দর্শনীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল বছরে ১,৩৩৫ ডলার। ২০১৩ সালের থেকে যা ৪০ শতাংশ বেশী। একই সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় বেড়েছিল যথাক্রমে ১৪ ও ২১ শতাংশ। মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ ভারত এবং পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে। ২০২৪ সালে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতাও বাংলাদেশ অর্জন করেছে।
কার্যত একদলীয় রাষ্ট্র: বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্রমশ কর্তত্ববাদী হয়ে উঠছে এবং কিছু ক্ষেত্রে, এটি এখন কার্যত এক দলীয় একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, যেখানে রাজনৈতিক বিরোধীদের, এমনকী জনগণের মূল সাংবিধানিক অধিকারও শাসকদলের করায়ত্ত হয়ে পড়েছে।
গত ১০ বছরে নির্বিচারে গ্রেফতার, আটক, গুম, এবং রাজনৈতিক ব্যাক্তিদেরকে নির্বিচারে হত্যাকান্ড আশংকাজনকভাবে বেড়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ এবং ‘মাদক-নির্মূল’ অভিযানের নামে সম্পূর্ণ দায়মুক্তির সাথে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী নিয়মিতভাবে সরকারের রাজনৈতিক বিরোধীদের হত্যা করার মতো ক্রিয়াকলাপে নিয়োজিত থাকছে।
সরকারের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী আচরণে গত এক দশকে, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল ও তাদের সহযোগিরা দেশের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রগুলো একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে নিরাপদে আশ্রয়ে পাচার হয়েছে এবং আয় বৈষম্য আকাশ ছুঁয়েছে। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ে ‘ধনীদের সম্পদ বৃদ্ধির’ তালিকায় স্থান পেয়েছে।
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলির রাজনৈতিকীকরণের ফলে খেলাপি এবং অপরিশোধিত ঋণের বিপদজনক বৃদ্ধির সাথে তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। শুধুমাত্র ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালেই মোট খেলাপি ঋণ পর্যন্ত প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।