Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংসদ ভেঙে না দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হত -শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:৩৯ এএম

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনাকে হত্যার চেষ্টা হচ্ছিল বলে দাবির পরও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের দলের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার ও তার সরকারকে বরখাস্ত করা নিয়ে ক্রমেই জটিল হচ্ছে দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি। সঙ্কট নিরসনের উপায় হিসেবে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্ধারিত সময়ের দুই বছর আগেই নির্বাচন ঘোষণা করলেও তাকে উপেক্ষার পথে হাঁটছেন বরখাস্ত প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রেমাসিংহে। এমনকি ভেঙে দেয়া সংসদের স্পিকারও। এ নিয়ে গতকাল প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার আদেশ সঠিক নয় দাবি করে প্রধান তিনটি দল দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন। তাদের দাবি প্রেসিডেন্ট অন্যায়ভাবে সংসদ ভেঙে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। এটা তিনি করতে পারেন না বলে দলগুলোর পক্ষে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা বলেছেন, সংঘাত এড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। পার্লামেন্ট ভেঙে না দিলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারতো। সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতো বলে তার দাবি।

একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনার ‘অবৈধ নির্দেশ’ পালন না করতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ করেছেন শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার কারু জয়সুরিয়া। তিনি বলেছেন, পার্লামেন্ট সদস্যদের অধিকার ‘কেড়ে’ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। গত শুক্রবার সেখানকার পার্লামেন্ট ভেঙে দেন সিরিসেনা। এরপর স্পিকার কারু জয়সুরিয়ার সমালোচনা করেন অনেকে। তারা বলেন, স্পিকারের অন্যায় আচরণের কারণে সিরিসেনা ওই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
২৬শে অক্টোবর নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী রণিল বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। তার স্থানে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে। স্থগিত করেন পার্লামেন্ট। এর মধ্য দিয়ে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা এক মারাত্মক সাংবিধানিক সঙ্কটে পড়ে। সিরিসেনা প্রথমে ১৬ই নভেম্বর পর্যন্ত পার্লামেন্টের কর্মকান্ড স্থগিত করেন। পরে তিনি ১৪ই নভেম্বর পার্লামেন্ট অধিবেশন ডাকেন। কিন্তু এর মাঝেই গত শুক্রবার পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। একই সঙ্গে আগামী ৫ই জানুয়ারি আগাম নির্বাচন ঘোষণা করেন।
অপরদিকে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে ৫ জানুয়ারি আগাম নির্বাচনের ঘোষণাকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানী কলম্বোতে। মোমবাতি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন বরখাস্ত প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকরা। তারা বলছেন, আগাম নির্বাচন ডেকে গণতন্ত্রকেই হুমকিতে ফেলেছেন প্রেসিডেন্ট। তবে তা মানতে নারাজ সিরিসেনা। তিনি বলছেন, সংঘাত এড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। পার্লামেন্ট ভেঙে না দিলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারতো। সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতো বলে তার দাবি।
এদিকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনার নেতৃত্বাধীন ‘শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি’র (এসএলএফপি) সঙ্গে দীর্ঘ পাঁচ দশকের সম্পর্কচ্ছেদ করে শ্রীলঙ্কা পিপলস পার্টিতে (এসএলপিপি) যোগ দিয়েছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। এর মধ্য দিয়ে রাজাপাকসে নির্বাচনে সিরিসেনার দলের ব্যানারে নয় বরং নিজের নতুন দলের ব্যানারেই প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নামার ইঙ্গিত দিলেন। গত রোববার সকালে রাজাপাকসে এসএলপিপি’তে যোগদানের ঘোষণা দেন। তার সঙ্গে ৪৪ জন সাবেক এমপি’ও সিরিসেনার দল ছেড়ে এ দলে যোগ দেন। দলটি ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠার করেছিলেন রাজাপাকসের ছোট ভাই বসিল।
দলটির এক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার দল এসএলএফপি’র সাবেক ৮২ এমপি’র মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৬৫ জন পক্ষ ত্যাগ করে এসএলপিপি তে যোগ দিতে পারেন।
গত বছর রাজাপাকসের রাজনীতিতে ফেরার মঞ্চ তৈরি করতে তার সমর্থকরা নতুন করে এসএলপিপি গড়ে তোলে। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় কাউন্সিলর নির্বাচনে দলটি মোট ৩৪০টি আসনের মধ্যে দুইতৃতীয়াংশ আসনে জয়লাভ করেছে। সূত্র : ওয়েবাসইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রীলঙ্কা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ