নির্ভরতার অপর নাম মুশফিকুর রহিম। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টেও সেই পরিচয় দিচ্ছেন তিনি। বুক চিতিয়ে লড়ছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। ইতিমধ্যে ডাবল সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনন্য নজির গড়লেন মুশি। বিশ্বের প্রথম উইকেটকিপার- ব্যাটসম্যান এবং দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে দুইবার দ্বিশতক করার কীর্তি গড়লেন তিনি। এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৩ সালে গলে কাঁটায় ২০০ রান করেন এ নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। সেটিও ছিল দেশের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি।
বাংলাদেশের হয়ে ক্রিকেটের আদি ফরম্যাটে ডাবল সেঞ্চুরি আছে কেবল দুজনের-সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের। টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ ২১৭ রানের ইনিংসটি সাকিবের। ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এ ইতিহাস গড়েন। আর ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনায় ২০৬ রানের অনিন্দ্যসুন্দর ইনিংস খেলেন তামিম। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ও ড্যাশিং ওপেনার দুজনকেই ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকছে মুশফিকের সামনে।
শেষ খবর পর্যন্ত দ্বিতীয় সেশন শেষে ৭ উইকেটে ৪৮৬ রান করেছে বাংলাদেশ। ২০০ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন মুশফিক। মিস্টার পার্টনারকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনিও ফিফটি তুলে নিয়েছেন। তার সংগ্রহ ৫১ রান।
আগের দিনের ৫ উইকেটে ৩০৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম ১১১ এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শূন্য রান নিয়ে খেলা শুরু করেন। প্রথম ইনিংসে চারশ, সাড়ে চারশ ছাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে ব্যাটিং শুরু করেন তারা। তাদের অসাধারণ নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গতিতে সেই পথে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। দারুণ মেলবন্ধন গড়ে উঠে তাদের মধ্যে। কোনো উইকেট না দিয়ে প্রথম সেশনে ৬২ রান যোগ করেন তারা।
উইকেটশূন্য সেশনে বড় একটা ধাক্কা খায় জিম্বাবুয়ে। স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন দারুণ বোলিং করা টেন্ডাই চাতারা। টানা পঞ্চম ওভার করছিলেন তিনি। কিন্তু ওভার শেষ করতে পারেননি। তৃতীয় বল করার পর বাম পায়ের পেশিতে টান পান। স্ট্রেচারে দ্রুত মাঠের বাইরে নেয়া হয়। ম্যাচে তাকে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। ওভারের বাকি চার বল করেন ডোনাল্ড তিরিপানো।
সাবলীল ব্যাটিংয়ে নির্বিঘ্নে কঠিনতম সেশনটা কাটিয়ে দেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু লাঞ্চ বিরতির পর হঠাৎই কক্ষচ্যুত হন মাহমুদউল্লাহ। কাইল জার্ভিসের বলে রেজিস চাকাভাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক (৩৬)। এর আগে মিস্টার পার্টনারের সঙ্গে ৭৩ রানের জুটি গড়েন তিনি।
খানিক বাদেই তার পথ অনুসরণ করেন আরিফুল হক। ফের শিকারী কাইল জার্ভিস। তার বলে ব্রায়ান চারির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন গেল টেস্টে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার। তাকে শিকার বানানোর বদৌলতে ক্রিকেটের অভিজাত সংষ্করণে তৃতীয়বারের মতো ৫ উইকেট ঝুলিতে ভরেন জার্ভিস।