পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দু’টি লাশ পড়েছে রাজধানীতে। আহত হয়েছে শতাধিক। দু’পক্ষের মারমুখি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, বিরামহীন ইটপাটকেল নিক্ষেপে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা মুহূর্তের মধ্যে তাদের দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এর শোধ নিতে আরো বড় ধরণের সংঘর্ষের আশংকা করছেন নগরবাসী। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তাই আরিফ ও সুজন নামে দুই কিশোর নিহতের ঘটনায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। গতকাল মগবাজারে টিঅ্যান্ডটি কলোনি মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী সুধী সমাবেশশেষে সাংবাদিকদের তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের সময় কিছুটা উত্তেজনা থাকে। তবে প্রাণহানি কাম্য নয়। নির্বাচন ঘিরে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদেরকে কঠোর হাতে দমন করা হবে।
গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর আদাবরের নবোদয় হাউজিং এলাকায় আ.লীগের দু’গ্রুপে ব্যাপক সংঘর্ষের সময় দুই তরুণ নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। গতকাল সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আদাবরের ১০ ও ১৬ নম্বর সড়ক, শম্পা মার্কেট ও সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় সাধারন মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
গত ৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এটাই নির্বাচনী সহিংসতায় বড় ধরনের প্রাণহানির প্রথম ঘটনা। নিহত দুই তরুণ আরিফ ও সুজনের বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। সুজন নির্মাণশ্রমিক। আহতদের মধ্যে ২০ জনকে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রাত পর্যন্ত পুলিশ এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করেনি। থানায় কোন মামলাও হয়নি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন। আবারো দু’গ্রুপের সশস্ত্র সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন। আ.লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে গাড়িচাপায় দু’জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে মগবাজার টিঅ্যান্ডটি কলোনি মাঠে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নির্বাচনের সময় কিছুটা উত্তেজনা থাকে। তবে, প্রাণহানি কাম্য নয়। নির্বাচন ঘিরে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে।
নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির পক্ষ থেকে গণগ্রেফতারের অভিযোগ করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাউকে গণগ্রেফতার করা হচ্ছে না। যাদের নামে মামলা রয়েছে, যাদের নামে নাশকতার অভিযোগ রয়েছে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ নিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে সাদেক খান সাংবাদিকদের বলেন, যুবলীগের তুহিনের নেতৃত্বে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা হয়। আদাবর থানা যুবলীগের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম তুহিন নানকের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। জাহাঙ্গীর কবির নানক সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার আমার কর্মী-সমর্থকদের ঘটনাস্থলে কোনো মিছিল কর্মসূচি ছিল না। ফলে সংঘর্ষের কোনো প্রশ্নই আসে না। ঘটনাটি মূলত সাদেক খানের সমর্থকদের মিছিলে বিশৃঙ্খলা থেকে সৃষ্ট। অভিযোগ অস্বীকার করে তুহিন বলেন, জামায়াত-বিএনপির লোকজন আওয়ামী লীগের লেবাস নিয়ে এ ঘটনা ঘটাতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ওই আসনে এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘাতের ঘটনা ঘটে। গতকাল সকাল সাড়ে ন’টার দিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাদেক খানের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার জন্য তার কর্মী সমর্থকদের একটি গাড়িবহর মোহাম্মাদপুর আদাবরের নবোদয় হাউজিংয়ের সামনে এলে নানকের সমর্থকরা বাধা দেয়। তখন দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে তা ব্যাপক সংঘর্ষে রূপ নেয়। দু’পক্ষের মধ্যে বেশ কিছু সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অনেকেই আহত হন। আহতদের সংখ্যা শতাধিক। আরিফ ও সুজনের বন্ধু নুরুল আমিন দাবি করেন, তারা মিছিলের সময় পিকআপে ছিলেন। সে সময় মোহাম্মদপুরে বেড়িবাঁধের পাশে লোহার গেটসংলগ্ন সড়কে দুই গ্রুপের ইটপাটকেল নিক্ষেপের মধ্যে পড়ে যান তারা। ওই সময় ইটপাটকেল থেকে বাঁচতে তারা পিকআপ থেকে লাফিয়ে নেমে পড়েন। তখন তড়িঘড়ি করে চালক পিকআপ টান দিলে পিকআপের ধাক্কায় আরিফ ও সুজন আহত হন। হাসপাতালে নেয়ার পর তারা মারা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি পিকআপে করে আসা বেশ কিছু তরুণ লোহার গেটের কাছে এলে বিপরীত দিক থেকে সেই পিকআপ লক্ষ্য করে নানকের লোকজন হামলা চালায়। এরপর সবাই ছোটাছুটি করে। ওই সময় পিকআপভ্যানটি দ্রুত ঘোরাতে গেলে তার নিচে চাপা পড়ে আরিফ ও সুজন। আরিফের ভাই বলেন, যুবলীগের একটি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিল আমার ভাই। তাদের গাড়িতে হামলা হলে সে নেমে পালানোর সময় ওই গাড়িতেই পিষ্ট হয়। তাৎক্ষণিক আরিফকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নবোদয়ের পাশাপাশি আদাবরের ১০ ও ১৬ নম্বর সড়ক, শম্পা মার্কেট এলাকা এবং উত্তর আদাবরের সুনিবিড় হাউজিংয়েও একই সময়ে সংঘর্ষ বাঁধে।
স্থানীয় লোকজন জানান, সাদেক খানের মনোনয়ন কিনতে তার সমর্থকদের ধানমন্ডির আবাহনী মাঠে জড়ো হতে বলা হয়েছিল। সেখান থেকে তাদের মনোনয়ন কিনতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পথেই তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। আহত ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসু কমিশনারের ভাগনে আলী, ইদ্রিস, জাহাঙ্গীর ও জলিলের অবস্থা গুরুতর। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আদাবর থানার ওসি (তদন্ত) জামাল উদ্দিন মীর জানান, সকালে জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং সাদেক খানের দুই গ্রুপ মনোনয়নপত্র নিতে যাচ্ছিলো। এ সময় মোহাম্মদপুর নবোদয় হাউজিং এর সামনে দুই গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সমর্থকদের বহনকারী পিকআপের নিচে চাপা পড়ে ২ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। কেউ কোন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে মামলা ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে ওসি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।