পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : তেলের দাম পড়ে যাওয়ার পর এবার অর্থনীতি বহুমুখীকরণে নজর দিচ্ছে সউদি আরব। আর তাই ১৯৩২ সালে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর নীতিনির্ধারণে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে দেশটি। তারই একটি অংশ হিসেবে শীর্ষ অস্ত্র উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত অস্ত্র দিয়েই দেশটি চাহিদার অর্ধেক মেটাবে। সউদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মাদ বিন সালমান জানান, সউদি আরব তার প্রয়োজনীয় অস্ত্রের শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ অভ্যন্তরীণ কোম্পানির কাছ থেকে কিনবে। তার দাবি, সউদি আরব নাটকীয়ভাবে অস্ত্র উৎপাদন বাড়াবে। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে দেশটির অস্ত্র কেনার প্রবণতা অনেকটাই কমে আসবে। সালমান বলেন, অস্ত্র উৎপাদন শিল্পে আমরা এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাইছি, যার ১০০ শতাংশ মালিকানাই থাকবে সউদি প্রশাসনের হাতে। শেয়ারবাজারেও এটি উন্মুক্ত করা হবে। সউদি আরব হচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সামরিক ব্যয়ের দেশ। আর উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র কিনতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে দেশটি। চলতি মাসের প্রথম দিকে স্টকহোমভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট’ জানায়, গত বছর সউদি আরব ৮ হাজার ৭২০ কোটি ডলারের অস্ত্র কিনেছে। ভিশন ২০৩০-এর আওতায় চলছে সউদি আরবে অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানোর এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের তোড়জোড়। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রিয়াদ বিভিন্ন ধরনের বাড়তি ব্যয় কমানোর চিন্তা করছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার কারণে সউদি আরব মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে। গত এক বছর ধরে ইয়েমেনে সামরিক অভিযান চালাতে গিয়ে এই সংকট বেড়ে গেছে অনেক বেশি। প্রতিবছর বিদেশ থেকে অস্ত্র আমদানিতে প্রচুর পেট্রোডলার ব্যয় করে সউদি আরব। এই ব্যয়েরও রাশ টেনে ধরতে চাইছে দেশটির প্রশাসন। সালমান বলেন, যখন আমি সউদি আরবের কোনো ঘাঁটিতে প্রবেশ করি, তখন দেখতে পাইÑ মারবেল পাথরে মোড়া মেঝে, সুদৃশ্য দেয়াল ও নিখুঁতভাবে সাজানো-গোছানো। আর যখন আপনি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ঘাঁটিতে প্রবেশ করবেন, তখন আপনি দেখবেন, সিলিংয়ে পাইপ ঝোলানো, অনাবৃত মেঝে। সেখানে না আছে কোনো মারবেল, না কোনো কার্পেট। সেটা সিমেন্টের তৈরি। খুবই বাস্তবধর্মী। তার মতে, ২০২০ সালের মধ্যে সউদি তেল ছাড়াই চলতে পারবে।
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক সউদি আরব সম্প্রতি তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় বাজেট ঘাটতিতে পড়েছে। ফলে গত ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো থেকে এক হাজার কোটি ডলার ঋণ নিচ্ছে দেশটি। ১৯৯০ সালে ইরাকের কুয়েত দখলের সময় ঋণ নেয়ার ২৫ বছর পর তেল রপ্তানির আয় কমে যাওয়ায় ফের ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছে দেশটি। বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারী দেশগুলোর সঙ্গে তেল উত্তোলন কমানোর আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর বিদেশি ঋণ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। গতবছর দেশটির তেল রপ্তানি আয় ২৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জুন থেকে বিশ্ববাজারে তেলের দাম দুই-তৃতীয়াংশ হ্রাস পেয়েছে। অপরিশোধিত তেলের দরপতনের পর গত বছর সউদি আরবের বাজেট ঘাটতি ৯৮ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকে। পরিস্থিতি সামলাতে সরকারি ব্যয় হ্রাস করে কর ও বিদ্যুৎ, জ্বালানির দাম বাড়ায় দেশটির সরকার। ব্লুুমবার্গ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।