Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনের পরও দেশে থাকতে পারেন এ বিবেচনায় কাজ করবেন

ইসির প্রতি আ স ম আবদুর রব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সরকারের সঙ্গে সংলাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে বিরত থাকতে নির্বাচন কমিশনকে বলেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। গতকাল নির্বাচন কমিশনের সাথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে তারা এ বিষয়টি তুলে ধরেন। এছাড়া ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনেরও দাবি জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। বৈঠক শেষে ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ, আনসারের তো যথেষ্ট ক্ষমতা নেই। কোনো বিশৃঙ্খলা হলে সেনাবাহিনী যাতে গ্রেফতার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে সেটা আমরা বলেছি। সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
আ স ম রব বলেন, আমাদের প্রস্তাব উনারা (ইসি) বিবেচনায় নিয়েছেন। আমরা বলেছি, ইসি তো নিরপেক্ষ সংস্থা। আপনারা সিরিয়াস হবেন। আপনারা নিরপেক্ষভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনে অংশ নেয় এমন সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে তারপর তফসিল ঘোষণা করবেন। এমনভাবে দায়িত্ব পালন করবেন যাতে নির্বাচনের পরও অর্থাৎ ২০১৯ সালের জানুয়ারির পরও দেশে থাকতে পারেন। সেই কথাটা মাথায় রাখবেন।
আ স ম রব বলেন, আমাদের দাবিগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে তারা কথা দিয়েছেন যে, এগুলো তারা রক্ষা করবেন। আর কয়েকটি বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারেননি, তবে পরে জানাবেন বলেছেন। দাবিগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রথম দাবি ছিল সংলাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তফসিল ঘোষণা না করা। আমরা তাদের বলেছি, অতীতের বহু নির্বাচন হয়েছে বহুবার তফসিল পিছিয়েছে, কিন্তু কোনো সমস্যা হয়নি। অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা না করে নির্বাচন হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সংসদের মেয়াদ আছে। সুতরাং তফসিল পেছালে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না।
জনাব আ স ম আব্দুর রব বলেন, আমরা কমিশনকে বলেছি, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয় না। তারা কথা দিয়েছে, এজেন্টদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তারা রেজাল্ট শিট তৃণমূল পর্যায়ে বিতরণ করবে বলেও জানিয়েছে। আমাদের দাবি, ভোট গণনার আগে এজেন্টদের কাছ থেকে কোনো সই নেওয়া যাবে না। তারপর কমিশনকে আমরা বলেছি, আপনারা ২০১৯ সালেও বাংলাদেশে থাকবেন। সেটা বিবেচনায় নিয়েই নির্বাচন করবেন। ইভিএম না দেওয়া ও সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার দাবির বিষয়ে নির্বাচন কমিশন পরে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে বলে জানান। তিনি বলেন, আলোচনায় মনে হয়েছে, তফসিল পেছানোর দাবিটি তারা বিবেচনায় নিয়েছেন।
ফ্রন্টের নেতা রব সাংবাদিকদেরকে বলেন, নির্বাচনের পরও নির্বাচন কমিশনারদেরকে এই দেশে বাস করতে হবে। পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে হবে। সেই বিষয়টিও তাদের ভেবে দেখতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল পেছানো, বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন, ইভিএম বাতিল এবং ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয় নিয়ে ইসির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা ৭ নভেম্বর সংলাপের পর ফলাফল না আসা পর্যন্ত তফসিল ঘোষণা না করতে বলেছি। তারা (ইসি) বিবেচনায় নিয়েছেন বলে তারা জানিয়েছেন।
গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও তার জোটের শরিকদের সঙ্গে সংলাপে বসে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সংসদ ভেঙে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, ইভিএম ব্যবহার না করার দাবিতে সাড়া দেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
এই অবস্থায় আগামীকাল বুধবার সীমিত পরিসরে আবার সংলাপে বসতে যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট। আর এই সংলাপ শেষে বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে সংলাপের ফলাফল জানাতে পারেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
বৈঠকের পর ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, তফসিল ঘোষণার জন্য আরো অপেক্ষা করতে অনুরোধ করেছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় নয়। উচ্চঃস্বরে কথা হয়েছে। আসলে ওনারা রাজনীতি করেন তো, উচ্চঃস্বরে বক্তৃতা করতে অভ্যস্ত তাই।
বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, জাসদ জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরকতুল্লাহ বুলু, ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও নঈম জাহাঙ্গীর। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, চার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, কবিতা খানম, রফিকুল ইসলাম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী। #



 

Show all comments
  • তানিয়া ৬ নভেম্বর, ২০১৮, ৩:০৫ এএম says : 0
    আশা করি তারা বিষয়টি বুঝবেন
    Total Reply(0) Reply
  • সাব্বির ৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:৪৯ পিএম says : 0
    আমরা শান্তি চাই
    Total Reply(0) Reply
  • মাসুদ ৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:৪৯ পিএম says : 0
    এজন্য প্রয়োজন একটি অবাধ সুস্থ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ