পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শীত আসার আগেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। কোথাও কোথাও ভোর ৬টার আগেই গ্যাস চলে যায়, আসে রাত ১২টার দিকে। রাজধানীর কোথাও গ্যাসের দেখা মিললেও দু-তিন ঘণ্টার মধ্যে আবার চলে যায়। কিছু এলাকায় চুলা জ্বলে নিবু নিবু। এতে এক বেলা রান্না করে তিন বেলা খেতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এদিকে গ্যাস সংকটের কারণ জানতে চেয়ে হাজার হাজার গ্রাহক তিতাসে অভিযোগ করেছেন বলে জানা গেছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ইনকিলাবকে বলেন, শীত আসলে গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এলএনজি গ্রিডে আসার পর সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে। কি কারণে গ্যাস সরবরাহ কম হচ্ছে। তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তার পর আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিঃ দায়িত্ব) মোঃ মোস্তফা কামাল ইনকিলাবকে বলেন, সকালে জানাতে পারলাম রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে না। জানার সঙ্গে সঙ্গে কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। আমাদের সরবরাহ কম হওয়ায় এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আমরা কাজ করছি।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার গৃহিণী গভীর রাতে রান্নার কাজ শেষ করে রাখেন। কেউ কেউ সিলিন্ডারে গ্যাসে রান্না-বান্না করতে বাধ্য হচ্ছেন। তীব্র গ্যাস সংকটে ওর্য়াডে ওর্য়াডে এবং পাড়ায় পাড়ায় খাবারের দোকানে ভিড় করছে মানুষ। গ্যাস সংকটের কারণে গাড়ির গ্যাস নিতে সিএনজি ফিলিং স্টেশনে দীর্ঘ লাইন চোখে পড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্রাহকদের অভিযোগে জানাগেছে, অনেকের ঘরে সপ্তাহ ধরে গ্যাস নাই। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে, মোহাম্মদপুর, বাসিলা, লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুর টাউন হল, কাটাসুর, কাদিরাবাদ হাউজিং, শেখেরটেক, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, টোলারবাগ, গুদারাঘাট, শাহ্ আলী থানার ডি ব্লক, এফ ব্লক, সি ব্লক, রূপনগর আবাসিক এলাকা, শিয়ালবাড়ী,দারুসসালাম থানা এলাকার গাবতলী, যাত্রাবাড়ী কদমতলী থানাসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের সংকট চলছে। তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা গেছে, আগে গ্যাসের ঘাটতি ছিল ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট। প্রতি বছর শীতের কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, গ্যাস উৎপাদন হয়েছে ২৬৪৯ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদা ছিল ৪৪৩৩ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে ১০০ মিলিয়ন কম পওয়া যাচ্ছে। শীতের সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও সার কারখানাগুলো চালু থাকলে সমস্যা দেখা দেয়।
শীত এখনো আসে নাই তার আগে মিরপুর ১২, কালসী, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও তালতলার কিছু কিছু কে গ্যাসের সমস্যার কথা জানান এলাকার গ্রাহকরা। তাদের বেশির ভাগের বাড়িতে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। এর মধ্যে কয়েকটি এলাকায় এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। দুপুরের পর যেসব বাড়িতে গ্যাস আসে তা আবার রাত ৮টার পরেই চলে যায়। গ্যাস সংকটে পরে অনেকের গৃহস্থালির কাজ করতে হয় ভিন্ন উপায়ে। কিছু কিছু বাসা সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেছে। তবে নিম্ন আয়ের মানুষের সে সুযোগ নেই। টানা গ্যাস সংকটে পরে অনেকের আবার হোটেলের খাবারের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। পাইপলাইনে গ্যাস কম থাকায় সব চেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবী মানুষ। এসব এলাকার শ্রমজীবী মানুষের অবস্থাও একই রকম। তাদেরকে রান্নার জন্য উঠতে হয় খুব ভোরে। ৬টার আগেই আবার গ্যাস চলে যায় বলে সব রান্নাবান্না এর আগেই সারতে হয়। এদিকে গ্যাস সংকটের কবলে পরে সিএনজি ফিলিং স্টেশন দেখা যায় গাড়ির দীর্ঘ লাইন।
মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বাসিন্দার ফৌজিয়া বেগম বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে তার পরিবারের সদস্যরাও বাসার খাবার খেতে পারছে না। তিনি বলেন, গ্যাস বিলতো মাস শেষে ঠিকই নিচ্ছে। এক টাকাও কম রাখে না কোনো মাসে। কিন্তু রান্না করার সময় আমরা লাইনে কোনো গ্যাসই পাই না। এটা রীতিমতো আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে।
রাজধানীর যাত্রবাড়ী এলাকার বাসিন্দা রিনা বেগম বলেন, গত ৩/৪ দিন ধরে গ্যাসের সমস্যায় পড়ছেন। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠার আগেই গ্যাস চলে যায়। বিকালে গ্যাস আসলেও দুই তিন ঘণ্টা পরে পুনরায় চলে যায়। অনেকদিন ধরে রান্না করে তার বেগ পেতে হচ্ছে। আবার এক বেলা রান্না করেও তাকে তিন বেলা খেতে হয়। তিনি বলেন, শীত আসার আগেই প্রতিবছর এমন সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু সরকার এ ব্যাপারে কোনো সমাধ্যান করে না অথচ গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করছে। দুই ছেলে নিয়ে পরিবারের খাওয়া-দাওয়া ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।
শ্যামলীর বস্তির শাহানাজ বেগম বলেন, আমি অন্যের বাসায় কাজ করি। তিনটা বাসায় কাজ করতে হয়। গ্যাস সংকট দেখা দেয়ার পরে প্রায় দুই একটি বাসার রান্না বাকি রেখে চলে আসতে হয়। নিজের বাসার রান্না করতে যেয়ে দেখি গ্যাস নাই। গ্যাস আসার জন্য অপেক্ষা করতে হয় গভীর রাত পর্যন্ত। মাঝেমধ্যে দুপুরে রান্নার সুযোগ হয় তবে সব রান্না শেষ করতে পারি না। মিরপুর শেওড়াপাড়ার আবু সাইদ বলেন, আমাদের বাসায় গ্যাস থাকে তবে একেবারেই কম। শুধু ভাত রান্না করতেই এক ঘণ্টার উপরে লেগে যায়।
গ্যাস সংকটের কথা স্বীকার করে নিরীক্ষা বিভাগ উপমহাব্যবস্থাপক আ. ছা. মু. জিয়াউল হক ইনকিলাবকে আজ সকালে আমার বাসাও গ্যাস ছিলনা। এটা কেন হচ্ছে তা আমরা জানতে চেয়েছে। এ সমস্যা দ্রুত সমাধন করার চেষ্ট চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।