মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
শ্রীলংকার রাজনৈতিক সঙ্কট নবম দিনে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা রোববার নতুন গেজেট ঘোষণা করে জানিয়েছেন ১৪ নভেম্বর পার্লামেন্ট অধিবেশন বসবে। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে সিরিসেনা জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেসকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, দ্রুততম সময়ে তিনি অধিবেশন ডাকবেন। বরখাস্তকৃত প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিঙ্গেকে সরিয়ে দেয়া এবং মাহিন্দা রাজাপাকসাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেয়ার পর ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়ায় সিরিসেনা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।
এদিকে সরকার থেকে ঘোষণা ছাড়াই বাদ পড়া ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) বলেছে, তারা সতর্কভাবে নজর রাখছে তাদের দল থেকে কাদেরকে ভাগানো হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, বহু মিলিয়ন রুপি এবং মন্ত্রিত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদেরকে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসার পক্ষে টানা হচ্ছে।
রাজাপাকসা গ্রুপের প্রতি প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনার সমর্থন রয়েছে। তারা এখন পর্যন্ত নয়জনকে ইউএনপি এবং তাদের জোট থেকে নিজেদের পক্ষে টানতে পেরেছেন। এদের মধ্যে তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (টিএনএ) দলের এক সদস্যও রয়েছেন। গত সপ্তাহে ১২ জন ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসেবে এবং দুইজন ডেপুটি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন এবং সপ্তাহের শেষ দিকে রাজাপাকসার তিনজন কট্টর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
এদিকে, ইউএনপি-এসএলএফপি জোটের মেগাপোলিস মন্ত্রীর মতো কয়েকজন মন্ত্রী ২৬ অক্টোবরের পরে নিয়োগকৃত মন্ত্রীদের মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং বরখাস্তকৃত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্গেকে সরকারি বাসভবন ছাড়তে বলা হলেও এখনও তিনি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন টেম্পল ট্রিজে বাস করছেন।
ইউএনপি তাদের দিক থেকে তাদের সব সদস্যের উপর ২৪ ঘন্টা নজর রাখছে, যাতে তারা কোনভাবেই অন্য পক্ষে না যেতে পারে। তবে, রাজাপাকসা এবং সিরিসেনা যেভাবে তাদেরকে রাজনৈতিক জগৎ থেকে পুরোপুরি সরিয়ে দিতে চাচ্ছেন, সেটা ঠেকানোর জন্য তারা পার্লামেন্টে নতুন প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনবেন। লিডার অব দ্য হাউজ লক্ষণ কিরিয়েলা লিখিতভাবে স্পিকারকে জানিয়েছেন যে, নতুন নিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসার ব্যাপারে বা তার পরে নিযুক্তদের ব্যাপারে পার্লামেন্টের কোন আস্থা নেই। চিঠিতে বলা হয়েছে যে, “প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার মাহিন্দা রাজাপাকসা অথবা ২৬ অক্টোবরের পর যাদের নিযুক্ত করা হয়েছে, তাদের ব্যাপারে হাউজের কোন আস্থা নেই।”
ইউএনপি সূত্র জানিয়েছে, অধিবেশন বসার প্রথম দিনেই বিষয়টি ভোটাভুটিতে দেয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন স্পিকার।
ইউএনপি যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে যে, “সংবিধানের ৪৬(১) এবং ৪৮ ধারা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী মারা গেলে, পদত্যাগ করলে, পার্লামেন্টের সদস্যপদ বাতিল হলে বা সরকারের নীতি এবং বাজেটের প্রশ্নে আস্থা ভোটে হেরে গেলেই কেবল তার পদ শূণ্য হবে।”
ইউএনপি সূত্র বলেছে, ইউএনপি সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ রয়েছে এবং সাংবিধানিকভাবে তারা এসএফএফপি-এসএলপিপি সরকারকে হারিয়ে দিতে চায়।
তবে, মাহিন্দা রাজাপাকসার জনপ্রিয়তার জন্য তড়িঘড়ি করে নেয়া ‘দ্য ভোট অব অ্যাকাউন্ট’ আর্থিক পরিকল্পনাকে হারিয়ে দেয়া ইউএনপির জন্য এখনও সম্ভব, যদিও এমপিদের পক্ষ বদলের কারণে তাদের সদস্য সংখ্যা দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছে কিন্তু তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের (টিএনএ) ১৫ সদস্যের সমর্থন এখনও তাদের পক্ষে রয়েছে।
টিএনএ’র একজন সদস্য রাজাপাকসার পক্ষে চলে যাওয়ার পর টিএনএ উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে কারণ শোনা যাচ্ছে টিএনএ এমপিদের আরও চারজন রাজাপাকসার পক্ষে যেতে আগ্রহী। টিএনএ দলের অফিশিয়াল অবস্থান হলো তারা রাজাপাকসার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবকে সমর্থন করবে এবং নতুন সিরিসেনা-রাজাপাকসা সরকারের ভোট অব অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ভোট দেবে।
ইতোমধ্যে, ব্যাপকভাবে যেটা ধারণা করা হচ্ছে যে, টিএনএ’র মনোভাব বদলানোর চেষ্টা করছে রাকাপাকসা পক্ষ। সাবেক প্রেসিডেন্টের ছেলে নামাল রাজাপাকসা রোববার এক টুইটে বলেছেন যে, যুদ্ধের পর সব তামিল বন্দীদের ছেড়ে দেয়ার যে দাবি রয়েছে, সেটা পূরণ করা হতে পারে।
তামিল ভাষায় করা টুইটে নামাল লিখেছেন, “প্রেসিডেন্ট (মৈত্রিপালা) সিরিসেনা এবং প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসা এ ব্যাপারে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নিবেন।”
তবে, টিএনএ সূত্র জানিয়েছে যে, মাহিন্দা রাজাপাকসা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর টিএনএ দলের নেতা আর সাম্পানথান তার সাথে দেখা করে তাকে পরিস্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, যারা তামিলদের স্বায়ত্বশাসন দেয়ার ঘোষণাসহ সংবিধান সংশোধন করবে এবং তামিল জনগণের সব দাবি মেনে নেবে, তাদেরকে সমর্থন দেবে টিএনএ। তবে, শুক্রবার দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে রাজাপাকসার নিয়োগ ‘অসাংবিধানিক’ এবং তারা এই নিয়োগের বিরোধিতা করবে।
এদিকে, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে যে, বর্তমান সাংবিধানিক সঙ্কট যদি পার্লামেন্টারি নির্বাচনের দিকে যায় (যদি ভোট অব অ্যাকাউন্ট পরাজিত হয়), তাহলে তারা রাজাপাকসার ইচ্ছা মতোই চলবেন, যিনি নতুন নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।