পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নগরীতে আরও একটি খুনের ঘটনা ঘটলো। স্বামী মো. জয়নাল স্ত্রী রোকসানা আক্তারের (২৮) গলা কেটে হত্যা করেন। লোমহর্ষক এই ঘটনাটি ঘটে গতকাল (বৃহস্পতিবার) ভোরে নগরীর বাকলিয়া থানার তুলাতলী আলী ভবনে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে থানার ওসি প্রণব কুমার চৌধুরী জানান, পারিবারিক কলহের জেরে এই খুন। ছুরি দিয়ে রোকসানার গলা কেটে পালিয়ে যায় জয়নাল। পাশের বাড়ির লোকজন চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক রোকসানাকে মৃত ঘোষণা করেন। খুনের পর থেকেই লাপাত্তা জয়নাল।
মঙ্গলবার সকালে নগরীর পাঠানটুলিতে স্ত্রী পারভীন ও শাশুড়ি হোসেনে আরাকে শ্বাসরোধে খুনের পর পালিয়ে যায় স্বামী আবদুল মতিন। এর আগে নগরীর ছোটপুলে স্ত্রী সুমি ইসলামকে খুনের পর মাথা বিচ্ছিন্ন করে স্বামী। মস্তকবিহীন লাশ বস্তায় ভরে নর্দমায় ফেলা হয়। আর কর্তিত মস্তক ফেলা হয় কয়েক কিলোমিটার দূরে দীঘির পাড়ে। এর আগেও নগরীতে স্বামীর হাতে স্ত্রী, স্ত্রীর হাতে স্বামী, শ্যালকের হাতে দুলাভাই, বন্ধুর হাতে বন্ধু আর ভাইয়ের হাতে ভাই খুনের ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রামে একের পর এক স্বজনের হাতে স্বজন খুনের ঘটনায় সর্বত্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। যাদের কাছে জীবন সবচেয়ে বেশি নিরাপদ হওয়ার তাদের হাতেই প্রাণ যাচ্ছে। স্বজনের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে আপনজনের হাত। পুলিশ বলছে-মূল্যবোধের অবক্ষয়, পারিবারিক কলহ, টাকা পয়সা নিয়ে দ্ব›দ্বসহ নানা কারণে এমন খুনের ঘটনা বেড়েই চলেছে।
নগরীর পাঠানটুলিতে মা-মেয়ে খুনের ঘটনায় জড়িত প্রধান সন্দেহভাজন আবদুল মতিন ধরা পড়েনি। পুলিশ বলছে-সে ঠান্ডা মাথায় জোড়া খুন করে হাওয়া হয়ে গেছে। সে কোন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতো না। প্রয়োজনে স্ত্রী ও শাশুড়ির ফোন ব্যবহার করতো। এলাকার কারো সাথেও তার কোন সম্পর্ক ছিলো না। এসব বিশ্লেষণ করে পুলিশ বলছে মতিন এ ধরনের অপরাধ হয়তো আগেও করেছে। পেশাদার অপরাধীদের সাথে তার যোগাযোগ থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করেন ডবলমুরিং থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম। তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মতিনকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। প্রাথমিক তদন্ত এবং স্বজনদের দেওয়া তথ্যে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে স্ত্রী ও শাশুড়িকে খুনের ঘটনায় মতিনই জড়িত।
শুক্রবার রাতে নগরীর ছোটপুলের একটি নর্দমা থেকে অজ্ঞাত এক তরুণীর মস্তকবিহীন বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মামলা তদন্ত করতে গিয়ে স্বামী জাহিদ হোসেন রাজুকে (২৮) গ্রেফতার করে। পরে তার দেখানো মতে, স্ত্রী সুমি ইসলামের কর্তিত মস্তকটি উদ্ধার করা হয়। সুমি আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকায় একটি বুটিক হাউসে কাজ করতেন। সে পরকীয়ায় জড়িত এমন সন্দেহ থেকে তাকে খুন করার কথা স্বীকার করেন রাজু। আর খুনের পর লাশ কাটা ও গুম করতে তাকে সাহায্য করেছে এক বন্ধু দম্পতি।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর নগরীর ইপিজেড থানা এলাকায় পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে ডেকে এনে শ্যালক ব্যবসায়ী সাঈদ হোসেনকে খুন করে লাশ মাটি চাপা দেওয়া হয়। এই ঘটনায় নিউমুরিং এলাকার বড় মাঝির বাড়ির মো. কবিরের ছেলে এরফান উদ্দিন কবির (২৬) ও তার ছোট ভাই আরমান কবির (২৪) এবং তাদের তালতো বোনের স্বামী মো. জিকুকে গ্রেফতার করা হয়। সাঈদ হোসেন পাওনা টাকা আনতে যায় ভগ্নিপতি এরফান কবিরের কাছে। তার কাছ থেকে তিনি আট লাখ টাকা পেতেন। পরে তাকে হত্যা করে লাশ মাটি চাপা দেওয়া হয়। কয়েক দিন পর এরফানদের বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত স্থানে গর্ত ভরাটের চিহ্ন দেখে পুলিশ গর্তটি খুড়ে সাঈদের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে।
গেল ১৮ আগস্ট চীন থেকে আত্মীয়-স্বজন কাউকে কিছু না জানিয়ে চট্টগ্রামে এসে সাবেক স্বামীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হন রোকসানা আক্তার পপি নামে এক তরুণী। তিনি চীনের একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ব্যবসায়ী মো. মাঈনুদ্দিনকে (৩০) খুন করে লাশ ফয়’স লেকের একটি রেস্ট হাউসে রেখে পালানোর সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। গ্রেফতারের পর রোকসানা আক্তার পপি ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক স্বামীকে খুনের দায় স্বীকার করে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন বিয়ে বিচ্ছেদের পরও মাঈনুদ্দিন তাকে ফেসবুকে বিরক্ত করতেন। আর তাতে ক্ষুদ্ধ হয়ে তিনি তাকে খুন করেন। স্কুল পড়া অবস্থায় রোকসানা প্রেম করে বিয়ে করেন মাঈনুদ্দিনকে। ২০১৫ সালে মাঈনুদ্দিন-রোকসানা দম্পতির বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর রোকসানার ওমানপ্রবাসী বাবা তাকে ডাক্তারি বিষয়ে লেখাপড়ার জন্য চীন পাঠিয়ে দেন।
গত ১৫ জুলাই দাদি মনোয়ারা বেগম (৯৭) এবং ফুফু রুপালী ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল অফিসার শাহ মেহেরুন নেছা বেগমকে (৬৭) কুপিয়ে হত্যা পর লাশ বাড়ির পানির রিজার্ভ ট্যাঙ্কে ফেলে দেয় মুশফিকুর রহমান। নগরীর টাইগার পাসের ফ্লোরাপাস আবাসিক এলাকার একটি বাড়িতে এই জোড়াখুনের ঘটনায় গ্রেফতারের পর মুশফিক দায় স্বীকার করে। শিশুকালে বাবার মৃত্যুর পর থেকে দাদি আর চীরকুমারি ফুফুর হাতে লালিত-পালিত হয় সে। দেড় বছর আগে দাদি ও ফুফুর অনুমতি না নিয়েই নিজের পছন্দ মতো বিয়ে করে ফেলেন মুশফিকুর। তখন মনোমালিন্য হলে তাকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। ব্যবসা করার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে না পেয়ে দাদি ও ফুফুকে খুন করা হয়েছে বলে জানায় মুশফিক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।