Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পরিবারের দু’বেলা আহার যোগাড় করতে পারছেন না অনেকেই

বিশাল ব্যয়ের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতায় গুজরাটের কৃষক

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য স্ট্যাচু অব ইউনিটি আগামীকাল ৩১ অক্টোবরেই উদ্বোধন করতে চলেছে ভারত। কিন্তু তার আগেই এর বিরোধিতা করতে শুরু করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। ভারতের লৌহমানব খ্যাত স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা সরদার বল্লভভাই প্যাটেলের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কোটি কোটি ডলার খরচ করে গুজরাটে তৈরি করা হয়েছে এ ভাস্কর্য। এখন একদিকে চলছে এটি উন্মচনের প্রস্তুতি। আর অন্যদিকে বাড়ছে পানির অভাবে জমিতে সেচ দিতে না পারা কৃষকদের ক্ষোভ। বিবিসি জানায়, বল্লভভাই প্যাটেলের ১৮২ মিটার উঁচু এ ব্রোঞ্জ ভাস্কর্যটি তৈরিতে প্রায় ২ হাজার ৯৯০ কোটি রুপি খরচ হয়েছে। যার অর্ধেকের কিছু বেশি খরচ দিয়েছে গুজরাট সরকার। বাকি অর্থ এসেছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং জনগণের দেওয়া চাঁদা থেকে। অথচ রাজ্যের কৃষকরা পানির অভাবে জমিতে ঠিকমত সেচ দিতে পারছেন না। ৩৯ বছরের কৃষক বিজেন্দ্র তাদভি তার তিন একর ফসলি জমিতে সেচের ব্যবস্থা করতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের মত গুজরাটের কৃষকরাও সেচের জন্য বৃষ্টি ও পাম্প দিয়ে মাটির নিচ থেকে তোলা পানির উপর নির্ভরশীল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে গুজরাটে টানা খরা এবং অনাবৃষ্টির কারণে মাটির নিচের পানির স্তরের উচ্চতা কমে গেছে। যে কারণে বেশিরভাগ পাম্প দিয়ে পানি উঠছে না। ফসল উৎপাদ হ্রাস পাওয়ায় কৃষকদের আয় কমে গেছে। ২০১৫ সাল থেকে বাড়তি আয়ের জন্য বিজেন্দ্র ভাস্কর্য নির্মাণ ক্ষেত্রে গাড়ি চালান। ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, “সরকারের উচিত দানবাকৃতির ভাস্কর্য না বানিয়ে বরং ওই অর্থ কৃষকদের অবস্থার উন্নয়নে ব্যয় করা।” ২০১৬ সালে রাজ্য সরকার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুজরাটের অনেক জেলায় কৃষকদের আয় এতটাই কমে গেছে যে তারা পরিবারের জন্য দু’বেলা আহার যোগাড় করতে পারছেন না। সেখানে এমনকি প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায়ও ধস নেমেছে। কয়েকটি এলাকা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয়রা বলছেন, “আমরা সরকারকে প্রশ্ন করতে চাই: কেন তারা কৃষকদের সমর্থন এবং তাদের জীবন মান উন্নয়নে এ ধরনের উদ্যোগ নিতে পারছেন না?” গুজরাট প্রদেশের আহমেদাবাদ থেকে ২শ’ কিমি. দূরে নর্মদা নদীর ওপর এক পাথুরে দ্বীপে তৈরি করা হয়েছে ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’। আকৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’র দ্বিগুণ এটি। পুরো প্রকল্পে আরো বানানো হচ্ছে- জাদুঘর, গবেষণাকেন্দ্র, তিন তারকা হোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র। জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকবে বল্লভভাইয়ের জীবনীসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন। বিশাল এ প্রকল্পের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বহু আদিবাসী। প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেকেরই জমি নিয়েছে সরকার। জমির বদলে ক্ষতিগ্রস্তদের কিছু আর্থিক সাহায্য দিলেও তাদেরকে বিকল্প জমি বা চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি সরকার পূরণ করেনি। তাই আদিবাসীরা এ ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভাস্কর্য

২০ ডিসেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ