Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

পুলিশের কাছে ডাকাতির মামলার তথ্য নেই

তুরাগে দুই ট্রাক শ্রমিকের লাশ

আবদুল্লাহ আল মামুন | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০১৮, ১:০২ এএম

রাজধানীর তুরাগ থেকে উদ্ধার হওয়া দুই ট্রাক চালকের পেশাগত পরিচয় নিয়ে দ্ব›েদ্বর সৃষ্টি হয়েছে পুলিশ ও পরিবারের ভিন্ন তথ্যের কারণে। পুলিশের দাবি, তুরাগের দিয়াবাড়ী কাশবন থেকে উদ্ধার হওয়া ইমান শেখ ও কামাল শেখ ‘ডাকাত’ দলের সদস্য। যদিও তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলার তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া তাদের মৃত্যুর বিষয়ে পরিষ্কারভাবে কোন কিছুই জানা নেই পুলিশের।

এদিকে নিহত দু’জনের সম্পর্কে কোন খোঁজ খবর না নিয়েই পুলিশ তাদের ‘ডাকাত’ হিসেবে প্রচার করছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতদের পরিবার ও স্বজনরা। তারা সন্দেহ করছেন- তদন্ত ভিন্ন দিকে প্রভাহিত করতেই পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
নিহত ইমান শেখের স্ত্রী রোকসানা বলেন, আমার স্বামী ডাকাত ছিল না। পুলিশ কেন তাকে আপনাদের কাছে তাকে ‘ডাকাত’ হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে, কেন তাকে ‘ডাকাত’ বলছে আমি বুঝতে পারছি না। রোকসানার মতো একইভাবে পুলিশের অভিযোগে ক্ষুব্ধ নিহত কামালের স্ত্রী চাঁদনি বেগম। তিনিও একই দাবি করে বলেন, কামাল ‘ডাকাত’ ছিল না। পুলিশ কেন তাকে ‘ডাকাত’ বলছে আমি জানি না।
তুরাগ থানার ওসি নূরুল মুত্তাকিন গতকাল বলেন, ইমান ও কামালের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের নগরকান্দায়। নগরকান্দা থানায় তাদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ডাকাতির মামলা ছিল। তবে তাদেরকে কারা, কেন, কিভাবে হত্যা করেছে সে বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, লাশ পচে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত কোন ক্লু পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় নিহতদের আত্মীয় বেলাল বাদী হয়ে তুরাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার ওসি মিজানুর রহমান গতকাল বলেন, ওই দু’জন ডাকাত ছিল কিনা আমার জানা নেই। আমি এই থানায় যোগ দেওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। পূর্বে কোন মামলা ছিল কিনা সেটিও আমার জানা নেই। এছাড়া ঢাকা থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত তুরাগ থানার কোন পুলিশ কর্মকর্তা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
পুলিশের দুটি থানার ঊর্ধ্বতনদের এমন পরস্পর বিরোধী তথ্যে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন ভুক্তভোগী দুটি পরিবার। যদিও তারা বিষয়টি নিয়ে বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ইমান শেখের স্ত্রী রোখসানা বলেন, আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। এই নিয়ে আর কিছু বলতে পারব না।
কামাল শেখের স্ত্রী চাঁদনি আক্তার বলেন, তার সন্দেহ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার স্বামীকে আটক করেছিল। কিন্তু কারা তাকে হত্যা করেছে-এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। এ ব্যাপারে কথা বললে আমরা বিপদে পড়তে পারি। গরীব মানুষ তাই চুপ থাকায় ভাল।
গতকাল বিকালে এ বিষয়ে তুরাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) দুলাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। তদন্তে এখনও তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। মৃতদেহ পচে যাওয়ায় তাদের শরীরের আঘাত সনাক্ত করা যায়নি। এ অবস্থায় তারা লাশের ফরেনসিক প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষায় আছেন।
উল্লেখ্য, গত ২২ অক্টোবর দিয়াবাড়ীর কাশবন থেকে অর্ধগলিত দুটি লাশ উদ্ধার করে তুরাগ থানা পুলিশ। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে রহস্যজনক আচরণ করছে থানা পুলিশ।
নিহত ইমানের স্ত্রী রোকসানা দাবি করেন, তার স্বামীর কোন শক্রু ছিল না। ঢাকার গাবতলীতে ট্রাকের শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ১৪ অক্টোবর থেকে খোঁজ পাচ্ছিলেন না স্বামীর। মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। এরপর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে গিয়ে স্বামীর গলিত লাশ সনাক্ত করেন। স্বামী হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।
##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ