কুষ্টিয়ায় স্কুল ছাত্র মুতাসসিম বিন মাজেদ ওরফে হৃদয় (১৪) অপহরন ও হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা দায়রা ও জজ আদালত (নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল) এর বিচারক মুন্সী মোঃ মশিয়ার রহমান এই রায় ঘোষনা করেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন শহরের কালিশংকরপুর এলাকার গাফফার খানের ছেলে সাব্বির খান, হাউজিং এ ব্লকের আজম আলীর ছেলে হেলাল উদ্দিন ড্যানী ও ভেড়ামারা উপজেলার দশমাইল ক্যানেল পাড়ার মৃত মসলেম শেখের ছেলে আব্দুর রহিম শেখ ওরফে ইপিয়ার। রায় ঘোষনার সময় প্রধান আসামী সাব্বির খান উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুই আসামী পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া শহরতলীর মোল্লাতেঘরিয়া পূর্বপাড়া এলাকা থেকে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ৮ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র হৃদয়কে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের ৪ দিন পর অপহরণকারীরা হৃদয়ের মা তাসলিমা খাতুনের কাছে ফোন করে মুক্তিপণ হিসাবে ১২ লাখ টাকা দাবি করে। পরবর্তীতে বহু দেন-দরবার শেষে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে অপহরণকারীরা হৃদয়কে ছেড়ে দিতে সম্মত হয়।
অপহরণকারীদের কথামত ২ জুন গোপনে নির্দিষ্ট স্থানে ২ লাখ টাকা পৌঁছে দেয় হৃদয়ের মা তাসলিমা খাতুন। তারপরও অপহরণকারীরা হৃদয়কে ফেরত না দিলে হৃদয়ের মা বাদি হয়ে কুষ্টিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০’র ৭/৮ ধারা আইনে মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে আটক করে। আটককৃতদের তথ্যনুযায়ী ৩রা অক্টোবর সন্ধ্যায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে কুষ্টিয়া হাউজিং এলাকা থেকে আজব আলী’র ছেলে অপহরণকারী হেলাল উদ্দীন ওরফে ড্যানী (২২) কে আটক করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে হৃদয়কে অপহরণ করার কথা অপকটে স্বীকার করে জানায়, ভেড়ামারার ১০ মাইল এলাকার মসলেম শেখ’র ছেলে আব্দুর রহিম ওরফে ইপিআর’র মাধ্যমে অপহৃত হৃদয়কে হত্যা করে ভেড়ামারা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের ১০ মাইল নামক স্থানে ফখরুলের ইটভাটার পাশে মিজানুর রহমানের জমিতে লাশ পুতে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ ঐ স্থানে অভিযান চালিয়ে হৃদয়ের গলিত লাশ উদ্ধার করে।
কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি এ্যাড. আকরাম হোসেন দুলাল জানান, পুলিশের দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে আদালত দীর্ঘ স্বাক্ষ্য শুনানী শেষে এই হত্যাকান্ডে সন্দেহাতীত ভাবে আসামীর জড়িত থাকার প্রমান পাওয়ায় এই রায় ঘোষনায় আসামীদের মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রদান করেছে আদালত।