আওয়ামী লীগের ইতিহাসই ভোট ডাকাতির নির্বাচন, ভোটারবিহীন নির্বাচন বলে মন্তব্য করেছেন
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেছেন, “দেশে সময়মতো নির্বাচন হবে। বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ বহাল থাকবে। যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলার ক্ষমতা আওয়ামী লীগ ও সরকারের আছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে পরিষ্কার তিনি সুষ্ঠু ও সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান না, গায়ের জোরে নির্বাচন করতে চান। জোর করে ক্ষমতাকে আকঁড়ে ধরে রাখতে চান। এ সরকারের আমলে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, হবেও না।
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আরেকটি একতরফা নির্বাচন হবে না, এদেশের মানুষ হতে দিবে না। সিটি নির্বাচনের স্টাইলে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। জনগনের দাবি ও আন্দোলনকেই তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেন। সেজন্য সরকার প্রধান তাঁর অমুল্যধন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এখন পুলিশি শক্তির উপরই ভরসা করছেন। সেজন্য নিরীহ নিরস্ত্র বিরোধী দলকে মোকাবিলার হুমকি দিচ্ছেন। অবশ্য যুগে যুগে দেশে দেশে জন-অধিকারের পক্ষে গণতান্ত্রিকামী মানুষদের আন্দোলনকে ষড়যন্ত্র হিসেবে চিত্রিত করেছেন একনায়ক স্বৈরাচাররা। সরকার প্রধানের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নীতির প্রতি যাদেরকে তিনি অবাধ্য মনে করছেন তাদের ঠিকানা হচ্ছে কারাগারে।
তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে চুড়ান্ত ক্র্যাক ডাউন শুরু করেছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। এ যেন বাতি নিভে যাওয়ার আগে হঠাৎ জ্বলে উঠা। গুপ্তহত্যা, বিচারবর্হিভুত হত্যা, গুম, খুন, বিরোধী মত দলন-নিপীড়নের সঙ্গে দেশজুড়ে চলা গণগ্রেফতারের গতি এখন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, দেশের জনগন যেন সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এক অন্ধকারাচ্ছন্ন গ্রামে ভয়ার্ত দিন কাটাচ্ছে। সারাদেশটাকে ভুতুরে বাড়িতে পরিণত করা হয়েছে। লাশের পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান। কিন্তু মানুষ আরতো বেশি দিন চুপ করে বসে থেকে শুধু আহাজারি করবে না। মৃত্যু ভয় জয় করে গণতন্ত্রের নির্ভয় সোনালি দিন ফিরিয়ে আনতে সকল শক্তি নিয়োগ করবে। বর্তমান দুঃশাসনের অবসান সময়ের ব্যাপার মাত্র।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রেফতারের বিষয়ে রিজভী বলেন, গতকাল মানহানির মামলায় দেশের প্রতিথযশা আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে সরকার। মানহানি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা নজিরবিহীন ঘটনা। গণতন্ত্র পূণরুদ্ধারের আন্দোলনকে ব্যহত করতেই এ গ্রেফতার। তাছাড়া ব্যারিস্টার মইনুল জামিনে ছিলেন, তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একজন ব্যক্তিও। শুধুমাত্র অপশাসনের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলাটাকেই অপরাধ হিসেবে গন্য করছে সরকার। রাতে কোর্ট বসিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা সকলের কাছে পরিষ্কার। কারণ গতকাল প্রধানমন্ত্রী যখন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন মইনুল হোসেন একটি মামলায় জামিন পেয়েছেন, তার বিরুদ্ধে আরও মামলা করেন বাকীটা আমরা দেখছি। এ ঘোষনার কয়েক ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলো, তাকে গ্রেফতার করা হলো।
তিনি বলেন, মানহানি মামলায়তো প্রথমেই গ্রেফতারি পরোয়ানা নজির নেই। প্রথমে সমন জারি করে আসামি পক্ষের বক্তব্য নেওয়া হয়। আসামি পক্ষ উপস্থিত না হলে পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের গ্রেফতার সম্পূর্ণ বেআইনি। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের মুক্তি দাবি করেন।
একইসাথে সারাদেশে গায়েবি মামলার পর এখন গণগ্রেফতার চলছে অভিযোগ করে
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, চট্টগ্রামে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশকে কেন্দ্র করে গতকাল
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম ও চট্টগ্রাম মহানগর
বিএনপির
সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করকে আটক করেছে পুলিশ। গতরাতে সিলেট ও চট্টগ্রামে
বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশির নামে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে পুলিশ। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারের খবর আমরা পেয়েছি।