পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গণতন্ত্র সুসংহত এবং উন্নয়নের ধারা জনগণের দোরগোরায় পৌঁছে দিতে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার আহবান জানিয়েছেন ঢাকা সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মূখ উপ সহকারী মন্ত্রী এলিস ওয়েলস। তিনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অবাধ, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দেওয়া অঙ্গীকার রক্ষা করার আহবান জানিয়ে যাচ্ছি। গতকাল রেডিশন ব্ল হোটেলের মাধবী হলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ঢাকায় কর্মরত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লম বার্নিকাট উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন দেবে না। তবে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে মৌলিক অধিকার (বিশেষ করে বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা) রক্ষা করা এবং জনমতের প্রতিফলন ঘটে তা নিশ্চিত করতে বলেছি। বিশেষ করে ঢাকায় অংশ নেওয়া বৈঠকগুলোতে আমি যুক্তরাষ্ট্রের এ বার্তাটি পৌঁছে দিয়েছি।
এলিস ওয়েলস বলেন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সন্ধিস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলের মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকগুলোতে এটা স্পষ্ট ছিল যে একটি অবাধ, মুক্ত, বিধিসম্মত ও আন্তসংযুক্ত অঞ্চলের রূপকল্পের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই কাছাকাছি। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি এবং বিকাশের উপর মনযোগ দিয়ে, দারিদ্র হ্রাসে অর্ধেকেরও বেশি জনগোষ্ঠী থেকে এক তৃতীয়াংশেরও নিচে নামিয়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের স্থায়ী অগ্রগতিকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্য ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে এবং বঙ্গোপসাগরে স্থিতিশিীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখাতে পারে বাংলাদশ।
সফরতর মার্কিন উপ-মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ভারত প্রশান্ত মহাসগরীয় কৌশলের সমর্থনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আমরা সম্প্রতি বাংলাদেশকে ৪ কোটি ডলার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছি। বৈদেশিক সামরিক সহায়তা হিসেবে দেওয়া এ অর্থে বাংলাদেশের উপকূলীয় রাডার ব্যবস্থার মানোন্নয়ন, টহল নৌ-যান বহরের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ এবং সম্প্রসারিত সামুদ্রিক কার্যক্রম পরিচালনায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর সবগুলোই আমাদের ‘বঙ্গোপসাগর উদ্যোগ’ এর (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ) অংশ। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি গতিশীল আর তা দ্রুত বেড়ে চলছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনিক কাঠামোগুলো জোরদার করা গেলে তা এ দেশের ভবিষ্যৎ সাফল্যকে এগিয়ে নেবে। আর এ কারণেই আমরা বাংলাদেশ সরকারকে জনগণের মৌলিক অধিকার বিশেষ করে বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা করা এবং জনমতের প্রতিফলন ঘটার প্রতি জোর দিতে বলেছি। এ অবস্থায় অবাধ, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দেওয়া অঙ্গীকার রক্ষা করার আহবান জানিয়ে যাচ্ছি।
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার কক্সবাজারের অভিজ্ঞতার কথা বলি, আমি রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের মাত্রা ও বিশালতা গভীরভাবে অনুভব করেছি। এই মানবিক সঙ্কট মোকাবেলায় অব্যাহতভাবে সহৃদয়তা দেখানো এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার জান্য আমি বাংলাদেশ সরকার ও এদেশের জনগণকে ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই। সঙ্কটের একেবারে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নতুন শরণার্থীদের গ্রহন, খাবার বিতরণ এবং রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যুগিয়ে যাওয়াসহ অনেক দায়িত্ব পালন করা জতিসংঘ ও অন্যান্য বেসরকারি সংগঠনগুলোর কাজেও আমি মুগ্ধ। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজেদের শক্তি ও অদম্য চেতনা দেখেও আমি বিস্মিত। তারা নিজেরা মারাত্মক নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছে বা প্রত্যক্ষ করেছে। কিন্তু এ বেহাল অবস্থায়ও তারা নিজেদের আত্মপরিচয় ও ঐক্য ধরে রাখতে সচেষ্ট রয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ সমস্যা মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মানবিক সহায়তা হিসেবে নির্দিষ্ট করে বাংলাদেশকে ৩৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বেশি অর্থ দিয়েছি।
এলিস বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে স্বেচ্ছায় নিজ দেশের বাসভূমিতে নিরাপদে ও মর্যাদার সাথে ফিরে যেতে পারে সে রকম অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার জন্য সুপারিশ পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের জন্য দেশটির সরকারকে তাগিদ দিয়ে আসছি আমরা। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব পাওয়া ও স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার সংক্রান্ত সুপারিশগুলো। আর তা করতে আমাদের সাহায্যেরও আশ্বাস দিয়েছি। আমরা বার্মার নিরাপত্তা বাহিনীর যে সদস্যরা সহিংসতার জন্য দায়ী তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনারও তাগিদ দিয়ে যাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।