পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম নগরীতে গত ২৪ ঘণ্টায় মিলেছে চার অজ্ঞাত লাশ। তাদের মধ্যে দুই জন নারী, দুই জন পুরুষ। নগরীর কোতোয়ালী ও চান্দগাঁও থানা এবং রেল পুলিশ এ চারজনের লাশ উদ্ধার করে। তাদের কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। আর তাই বেওয়াশি হিসাবে এ চারজনের লাশ দাফন করেছে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম।
গতকাল (রোববার) দাফন করা হয় আনুমানিক ৫০ বছর বয়সী এক মহিলা এবং ৩২ বছর বয়সী এক তরুণীর লাশ। দু’টি লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। তার আগের দিন শনিবার দুই পুরুষের লাশ দাফন করা হয়। আনুমানিক ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির লাশ পাওয়া যায় চান্দগাঁও থানা এলাকায়। প্রায় সমবয়সী অপরজনের লাশ পাওয়া যায় কোতোয়ালী থানা এলাকায়।
এ নিয়ে গতকাল পর্যন্ত চলতি বছরের ৯ মাস ২১ দিনে ২৩৬ জনের বেওয়ারিশ লাশ দাফন করলো আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। ২০১৭ সালে ৩০১ জনের এবং তার আগের বছর ৩১৬ জনের বেওয়ারিশ লাশ দাফন করা হয়। এ হিসেবে প্রতিমাসে ২৫ জনের বেশি বেওয়ারিশ লাশ পাওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ ২৮ ঘণ্টায় মিলছে একটি অজ্ঞাত লাশ। আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে এ সংখ্যা। এর ফলে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক বাড়ছে।
এদের বিশাল অংশ আসছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেওয়ারিশ লাশ মিলছে সড়কে। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতাল থেকেও বেওয়ারিশ লাশ আসছে এ সংস্থার কাছে। মর্গ থেকে আসা বেওয়ারিশ লাশের বিরাট একটি অংশ গুপ্তহত্যার শিকার। নাম পরিচয় পাওয়া না যাওয়ায় এসব গুপ্তখুনের রহস্যও উদঘাটন করা যাচ্ছে না। সম্প্রতি মীরসরাইয়ে কথিত জঙ্গি আস্তানায় র্যাবের অভিযানে নিহত দুইজনের লাশও বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। তার আগে নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকায় র্যাবের মাদক বিরোধী অভিযানে নিহত একজনের লাশও বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।
পুলিশ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ ও আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় অজ্ঞাত লাশের বেশিরভাগই ছিল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত লোকজন। কিন্তু মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন বিশেষ করে মোবাইল ফোনসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় খুব সহজেই দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিচয় মিলছে। এক্ষেত্রে মিডিয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিচয় সহজে নিশ্চিত হওয়ায় দুর্ঘটনায় বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা কমে আসছে। বর্তমানে বেওয়ারিশ লাশের বিরাট একটি অংশ নির্মম খুনের শিকার জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খুনিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লোকজনকে তুলে এনে খুন করে লাশ গুম করছে। আলামত নষ্ট করার জন্য এক এলাকায় খুন করে অন্য এলাকায় লাশ ফেলে যাচ্ছে। পরিচয় পাওয়া না যাওয়ায় তাদের বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করতে হচ্ছে। আবার নাম পরিচয় না যাওয়ায় খুনের রহস্য উদঘাটন কিংবা খুনিদের চিহ্নিত করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।
২০১৬ সালে চট্টগ্রামে যে ৩১৬ জন বেওয়ারিশ হয় তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে পাওয়া গেছে ১৯৭ জনের লাশ। সড়ক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৮৭ জনের লাশ। এছাড়া চমেক হাসপাতাল থেকে ৯ জনের, রৌফাবাদ শিশু সনদ থেকে ৩ জন এবং আরও কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে কয়েকজনের লাশ পাওয়া যায়। তবে হাসপাতাল এবং ফুটপাতে নিহত হতদরিদ্রদের লাশও দাফন করছে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। হতদরিদ্র এসব মানুষের স্বজনদের লাশ দাফন করার মতো সামর্থ না থাকায় পরিচয় থাকার পরও তারা বেওয়ারিশের কাতারে সামিল হচ্ছেন। তবে এ সংখ্যা খুবই কম বলে জানান আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কর্মকর্তারা।
এদিকে পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় গুপ্তহত্যার মামলা তদন্তেও গতি আসছে না। অজ্ঞাত কোন লাশ পাওয়ার পর ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তে খুনের প্রমাণ পাওয়া গেলে পুলিশের পক্ষ থেকে থানায় হত্যা মামলা হয়। তবে লাশ অজ্ঞাত থাকায় মামলা তদন্তে গতি আসে না। লাশের পরিচয় যেখানে অজানা সেখানে খুনির পরিচয় জানাও কঠিন হয়ে পড়ে। নগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, নগরীতে এ ধরনের অসংখ্য মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। কিছু কিছু মামলায় দীর্ঘদিন পর নিহতের পরিচয় জানা গেছে, খুনের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। তবে বেশিরভাগ মামলার তদন্তে গতি আসছে না।
অজ্ঞাত কোন লাশ পাওয়ার পর পুলিশের পক্ষ থেকে তা মিডিয়ায় প্রচার করার জন্য পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট থানায়ও লাশের ছবি ও শনাক্ত করার মতো কিছু আলামত সংরক্ষণ করা হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দীর্ঘদিনেও এসব লাশের পরিচয় পাওয়া যায় না। এ কারণে মামলার তদন্ত শেষ হয় না। আর এ সুযোগটি নেয় পেশাদার খুনিরা। নির্দিষ্ট একটি জায়গায় খুনের পর অন্য জায়গায় লাশ ফেলে যাওয়া হয়। পরিচয় শনাক্ত করার মতো কোন আলামত তারা রাখে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।