Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইন্দোনেশিয়ায় নারীদের পুলিশ হতে দিতে হবে কুমারিত্ব পরীক্ষা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০১৮, ৮:০৮ পিএম

পৃথিবীতে সাম্যতা আসেনি, সাদা-কালো, ধণী-দরিদ্র, এমনকি নারী-পুরুষ এর সমানাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি একবিংশ শতকের এই আধুনিক পৃথিবিতে। ইন্দোনেশিয়ান নারীদেরকে দেশটির পুলিশে যোগদান করার জন্যে হতে হবে সুন্দর, এমনকি দিতে হবে কুমারিত্ব পরীক্ষাও!
পুরুষশাসিত সমাজ ব্যবস্থা নারীদেরকে অবমুক্ত হতে দিতে চায়না, তাদের সমকক্ষ হয়ে নারীদের বৈষম্যহীণ বিশ্ব গড়ার সুযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে এমন অবমাননাকর শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। ইন্দোনেশিয়া পুলিশে যেসব নারী যোগ দিতে চান তাদের ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নামের একটি আদিম ও অপমানজনক পরীক্ষা দিতে হবে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হবে ওই নারী কুমারী কি-না। ‘এবিসি নিউজ’
পরীক্ষার শর্ত হিসেবে বা অফিসিয়াল প্রয়োজন হিসেবে বইগু পুস্তিকে না থাকা সত্ত্বেও, এখনও এটি প্রচলিত ‘নৈতিকতা বা শারীরিক পরীক্ষা’ই রয়ে গিয়েছে। পুরুষশাসিত সমাজের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটির পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিতে হলে নারীদের দিতে হবে এমন অপমানজনক কুমারিত্ব পরীক্ষা।
সম্প্রতি দেশটির পুলিশ বাহিনীতে নারী সদস্য নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। তাদের ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পুলিশে চাকরি পেতে হলে নারীদের কুমারী হওয়ার কথা বলা হয়েছে। শুধু কুমারী নয়, তাদের সুন্দরীও হতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর ইন্টারনেট দুনিয়ায় এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মুখপাত্র আন্দ্রিয়াস হারসনো বলেন, “ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ বিশ্বাস করে যে সমাজ এমন একজন মহিলা পুলিশ অফিসারকে গ্রহণ করবে না যার যৌন সম্পর্ক নিয়ে দুর্নাম আছে বা যৌনকর্মী তাদের এমন মন্তব্য এবং শর্ত নারীদের ছোট করে, যা নারী স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় অন্যতম বাধা।”
ইন্দোনেশিয়ার নারী জাকিয়া যার পরিচয়ের সুরক্ষার জন্য নামের শেষাংশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, এবিসি হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কর্তৃক প্রাপ্ত অভিযোগে ‘এবিসি নিউজ’কে বলা হয়েছে যে, তিনি এই বছরের শুরুতে পুলিশ অফিসার হওয়ার জন্য তার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিলেন। পরীক্ষাটি কোন মেডিক্যাল ডাক্তার নেয়নি বলে জাকিয়া অভিযোগ করে।
‘তাদের ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ এতটাই অপমানজনক ও পীড়াদায়ক যা ধর্ষণের সঙ্গে তুলনা করে চলে। যতবার আমি ভাবি কি হয়েছিল, আমি কাঁদি, আমার আর বাঁচতে ইচ্ছে করেনা তখন।
জাকিয়া একজন মার্শাল আর্ট অ্যাথলেট,ব্যায়ামের কারণে এমন অনেক ভাবেই নারীর গোপনাঙ্গের পরিবর্তন আনতে পারে। ‘একদিন আমি পড়ে গিয়েছিলাম একটি কাঠের টুকরোতে আমার স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত লাগে যার ফলে আমার গোপনাঙ্গের ক্ষতি পারে,আমি নিশ্চিত না’ বললেন জাকিয়া।
তার মা তাকে চিন্তা করতে নিষেধ করেছিল, পুলিশের সঙ্গে সাক্ষাতকারে জাকিয়া বারবার নিজের কুমারিত্বের কথা বলেছিলেন তবুও তিনি পরীক্ষার ২য় অংশে বাদ পড়ে যান।
বছরের পর বছর ধরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গ্রুপের চাপের পর কুমারিত্ব পরীক্ষাটি আর আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হয়নি, তবে অকল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির শ্যারন গ্রাহাম ডেভিস দ্বারা প্রকাশিত এই গবেষণায় পাওয়া গেছে যে এখনও পুলিশ নিয়োগের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্তের অংশ এই পরীক্ষা। সূত্র: নিউজ উইক।



 

Show all comments
  • noor mohammad ২১ অক্টোবর, ২০১৮, ৯:৫০ পিএম says : 1
    চমৎকার। বাংলাদেশে ও এ নিয়ম চালু করা উচিৎ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইন্দোনেশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ