নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জিম্বাবুয়ে সিরিজে ওয়ানডে দলে জায়গা না পেয়ে মনটা খারাপই হওয়ার কথা সৌম্য সরকারের। হয়েছিলোও তাই। তবে একটু আনন্দ পেতে চেয়েছিলেন ‘ছুটির’ কথা ভেবে। জাতীয় লিগ খেলতে দলের সঙ্গে ছিলেন খুলনায়, সেখান থেকে সাতক্ষীরা ১১৫ কিলোমিটার, সোয়া তিন ঘণ্টার পথ। পূজোর ছুটিটা এই ফাঁকে কাটিয়ে আসা যাবে বাড়ী থেকে। কোথায় কী? আবারও ডাক পড়লো বিসিবির। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচের নেতৃত্ব দিতে হবে।
এশিয়া কাপের মাঝপথে তার প্রয়োজনীয়তা এতটাই অনুভব হলো, ইমরুল কায়েসের সঙ্গে তাকে উড়িয়ে নেওয়া হলো আরব আমিরাতে। ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে করলেন মূল্যবান ৩৩ রান। কিন্তু তাকে রাখা হয়নি দেশের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। প্রস্তুতি ম্যাচে আবার তাকেই করা হলো অধিনায়ক। অধিনায়ক হিসেবে নেমেই তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। তিন অঙ্ক ছুঁয়েই হেলমেট খুলে দিলেন লাফ। ওই লাফের মধ্যেই একটু দেখিয়ে দেওয়ার আভাস সৌম্যর। তার এই লাফটা না দিলে শুধু প্রস্তুতির মোড়কেই থেকে যেত ম্যাচটা। একতরফা পানসে ম্যাচ থেকে প্রাপ্তি বলতে এই ওপেনারের সেঞ্চুরি আর ইবাদত হোসেনের ৫ উইকেট। ১১ ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচ শেষ করে এসেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে না থাকা সৌম্য। ৮ উইকেটের জয় পেয়েছে বিসিবি একাদশ।
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্রিকেট মাঠগুলো তার হাতের তালুর মতোই চেনা। এই প্রতিষ্ঠানের হাওয়া-বাতাসেই বেড়ে ওঠে আজকের সৌম্য সরকার হয়েছেন। আঁতুড়ঘরেই গতকাল জ্বলে উঠল এই ওপেনারের ব্যাট। বিসিবি একাদশের সামনে মাত্র ১৭৯ রানের লক্ষ্য। এত অল্প রান তাড়া করতে নেমে সেঞ্চুরি তুলে নেওয়াটা বড় অর্জনই বটে। তার ওপর নেমেছেন তিনে। ষষ্ঠ ওভারে ওপেনার মিজানুর রহমান রান আউট হয়ে ফিরে গেলে ক্রিজে আসেন সৌম্য। ৫৮ বলে ফিফটি ছুঁয়েছেন, ১০৯ বলে পেয়েছেন সেঞ্চুরি। ৩৮ ওভারে সৌম্য সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার খানিক পরই শেষ হয়েছে প্রস্তুতি ম্যাচ। ১০২ রানে অপরাজিত ছিলেন সৌম্য।
তবে তার আগে অধিনায়ক সৌম্যর জন্য কাজটা সহজ করে রেখেছিলেন তরুন পেসার ইবাদত। তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান না থাকায় জিম্বাবুয়ের ভালো করার আশা দেখেছিলেন কাইল জার্ভিস। জিম্বাবুয়ে পেসারের এই আশা প্রস্তুতি ম্যাচেই ধাক্কা খেল। ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। এতটুকুই কেবল আশার খবর জিম্বাবুয়ের জন্য। মাসাকাদজার ১০২ রানের সঙ্গে বাকি ১০ ব্যাটসম্যান মিলে যে যোগ করতে পারলেন ৭১ রান! জিম্বাবুয়ে গুটিয়ে যায় ১৭৮ রানেই।
ধ্বংসযজ্ঞটা চালিয়েছেন ইবাদত হোসেন। পেসার হান্টের আবিষ্কার এই বোলার চার বলের ব্যবধানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। সব মিলিয়ে জিম্বাবুয়ের ইনিংসে তার বোলিং ফিগার ৯-৩-১৯-৫। আরেক পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন ৩২ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ইবাদত রীতিমতো বুলডোজার চালিয়েছেন। শুরুতে তার আঘাতেই মূলত ৪৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের চেনা দুই ‘শত্রু’ মাসাকাদজা আর হ্যামিল্টন চিগুম্বুরা মিলে ১২৪ রান যোগ করে পাল্টা আঘাতের শঙ্কা যেই না জাগিয়েছেন, আবার ইবাদত। ৪৫তম ওভারে টানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেন। হ্যাটট্রিকটা না হলেও চার বলের মধ্যে তুলে নিলেন তিন উইকেট।
জিম্বাবুয়ের ইনিংসে একাই লড়াই চালিয়ে গেছেন মাসাকাদজা। ১৪ চার ও ১ ছক্কায় ১৩৮ বলের ইনিংসটি দিয়ে ওয়ানডে সিরিজের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিলেন তিনি। কিন্তু বাকি ব্যাটসম্যানরা মুখ থুবড়ে পড়েছেন বিসিবি একাদশের পেস আক্রমণের সামনে। মাসাকাদজার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর এলটন চিগুম্বুরার (৪৭)। বাকি নয়জনের স্কোর পাশাপাশি বসালে হয়ে যায় মোবাইল নম্বর! এর মধ্যে ‘ডাক’ মেরেছেন তারিসারি মুসাকান্দা আর তেম্বা মাভ্তুা।
বিসিবি একাদশ-জিম্বাবুয়ে একাদশ
প্রস্তুতি ম্যাচ, বিকেএসপি-৪
টস : জিম্বাবুয়ে
জিম্বাবুয়ে ইনিংস রান বল ৪ ৬
মাসাকাদজা বোল্ড ইবাদত ১০২ ১০৯ ১৪ ১
আরভিন ক জাকির ব ইবাদত ১ ৩ ০ ০
টেলর এলবি ব সাইফউদ্দিন ৬ ৫ ১ ০
উইলিয়ামস ক মোসাদ্দেক ব ইবাদত ১ ৮ ০ ০
রাজা এলবি ব মোহর ৯ ১৩ ২ ০
মুর ক সাইফউদ্দিন ব ইমরান ৪ ১৭ ০ ০
চিগুম্বুরা বোল্ড সাইফউদ্দিন ৪৭ ৮৩ ৪ ১
মুসাকান্দা ক আফিফ ব ইবাদত ০ ২ ০ ০
মাভুতা এলবি ব ইবাদত ০ ১ ০ ০
তিরিপানো বোল্ড সাইফউদ্দিন ৩ ৩ ০ ০
ডব্লু মাসাকাদজা অপরাজিত ০ ০ ০ ০
অতিরিক্ত (নো ১, ও ৪) ৫
মোট (৪৫.২ ওভার, অলআউট) ১৭৮
উইকেট পতন : ১-৭ (আরভিন ২.৫ ওভার), ২-১৪ (টেলর, ৩.৬ ওভার), ৩-১৫ (উইলিয়ামস, ৬.৩ ওভার), ৪-২৮ (রাজা, ৯.৫ ওভার), ৫-৪৭ (মুর, ১৫.৬ ওভার), ৬-১৭১ (চিগুম্বুরা, ৪৩.৬ ওভার), ৭-১৭৫ (মুসাকান্দা, ৪৪.৩ ওভার), ৮-১৭৫ (মাভুতা, ৪৪.৪ ওভার), ৯-১৭৬ (মাসাদাকজা, ৪৪.৬ ওভার), ১০-১৭৮ (তিরিপানো, ৪৫.২ ওভার)
বোলিং : ইবাদত ৯-৩-১৯-৫, সাইফউদ্দিন ৭.২-০-৩২-৩, মোহর ৪-১-১৮-১, সৌম্য ৫-২-৯-০, ইমরান ৫-১-২৮-১, নাঈম হাসান ৮-০-৩২-০, আরিফুল ৩-১-১৪-০, মোসাদ্দেক ৩-০-১৩-০, আফিফ ১-০-১৩-০।
বাংলাদেশ ইনিংস রান বল ৪ ৬
মিজানুর রান আউট ৮ ২০ ১ ০
ফজলে ক মুসাকান্দা ব রাজা ১৩ ৩৪ ১ ০
সৌম্য অপরাজিত ১০২ ১১৪ ১৩ ১
মোসাদ্দেক রিটায়ার্ড নট আউট ৩৩ ৪৮ ২ ১
আরিফুল অপরাজিত ৯ ১৮ ০ ১
অতিরিক্ত (লেবা ৬, ও ১০) ১৬
মোট (৩৯ ওভার, ২ উইকেট) ১৮১
উইকেট পতন : ১-১১ (মিজানুর, ৫.৫ ওভার), ২-৫২ (ফজলে, ১৪.৪ ওভার)।
বোলিং : জারভিস ৫-২-৯-০, চাতারা ৫-০-২৪-০, রাজা ৬-০-২১-১, এনগারাভা ৫-০-২৫-০, তিরিপানো ২-০-১৭-০,মাভুতা ৪-০-২৬-০, উইলিয়ামস ৪-০-২০-০, মিরে ২-০-১৬-০, নাইয়ুম্বু ৫-০-২৭-০, মাসাকাদজা ১-০-৬-০।
ফল : বিসিবি একাদশ ৮ উইকেটে জয়ী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।