পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ইনকিলাব ডেস্ক ঃ স্মার্টফোনসহ চীনের তৈরি বেশকিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে ভারত। নিম্নমানের এবং নিরাপত্তা কোড মেনে তৈরি করা হয়নি, এমন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন ও অন্যান্য পণ্য এ তালিকায় থাকছে। খবর ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস। বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতের গুরুত্বপূর্ণ বাজার ভারত। বিশেষ করে দেশটির স্মার্টফোন বাজার দ্রুত প্রসার লাভ করছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রকে টপকিয়ে শিগগিরই স্মার্টফোনের দ্বিতীয় বড় বাজার হবে এটি।
অন্যদিকে স্মার্টফোন উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে চীন অন্যতম। বিশ্বের নামকরা স্মার্টফোন নির্মাতারা ডিভাইস উৎপাদনের জন্য দেশটির ওপর নির্ভরশীল। পাশাপাশি হুয়াওয়ে, শাওমি, অপ্পোর মতো চীনের রয়েছে বেশকিছু স্মার্টফোন ব্র্যান্ড, যেগুলো বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে ক্রমে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। ভারতের বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা চীনের স্মার্টফোন উৎপাদন শিল্প খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। গত সোমবার ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ লোকসভায় বলেন, সঠিক ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল স্টেশন ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি (আইএমইআই) নম্বর না থাকা কিংবা অন্যান্য নিরাপত্তা কোড না মেনে যেসব ডিভাইস তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো নিষিদ্ধ করা হবে। অর্থাৎ যেসব ডিভাইসে নিরাপত্তা ফিচার নেই, সেগুলো নিষিদ্ধ করা হবে। পাশাপাশি চীন থেকে চুরি করে আনা পণ্যও নিষিদ্ধের আওতায় পড়বে। যদিও ঠিক কোনো কোনো ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন ও পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে, তার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে ডব্লিউটিও রুলসের কারণে কোনো দেশ থেকে আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারণ এর সঙ্গে রাজনৈতিকসহ বেশকিছু বিষয় জড়িত। তিনি বলেন, ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ৪ হাজার ৮৬৮ কোটি ডলার। একই সময় দু’দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫১৬ কোটি ডলার।
নির্মলা অভিযোগ করে বলেন, ভারতের দ্রুত বর্ধনশীল খাত, যেমন টেলিকম ও পাওয়ারসংশ্লিষ্ট খাতে পণ্য রফতানি করছে চীন। কিন্তু চীনের বাজারে ভারত মাঝারি মানের পণ্য রফতানি করে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে। মূলত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদারে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈশ্বিকভাবে অনলাইন নিরাপত্তা ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের ওপর মার্কিন সরকারের গোপন নজরদারির বিষয়টিও ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সেবা বন্ধের মাধ্যমে স্থানীয় নিরাপত্তা জোরদারে কাজ করছে বিশ্বের অনেক দেশ। বলা হচ্ছে, মাত্র এক মাস আগেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইন্টেলিজেন্স শাখা ‘ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই)’ নজরদারির বিষয় ধরা পড়ে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের ওপর নজরদারি করতে মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন স্মেশঅ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছিল। অবশ্য বিষয়টি নজরে আসায় ওই অ্যাপ তাৎক্ষণিকভাবে গুগুল প্লে স্টোর থেকে সরিয়ে ফেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ; যা ডিজিটাল নিরাপত্তা জোরদারেরই একটি অংশ। পাশাপাশি ভারত সরকার পরিচালিত ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকমিউনিকেশন্স (ডিওটি) ২০১৭ সালের মধ্যে ফিচার এবং স্মার্টফোন সরবরাহের ক্ষেত্রে প্যানিক বাটন যুক্ত করা বাধ্যতামূলক করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারত অনাকাক্সিক্ষত যেকোনো ধরনের ঘটনা এড়াতে ডিজিটাল নিরাপত্তা জোরদারে আটঘাট বেঁধেই নেমেছে। দেশটি চীনের তৈরি স্মার্টফোনের বড় বাজার। কিন্তু এ বাজারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে চীনের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। ফলে বৈশ্বিকভাবে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের মতো মোবাইল ডিভাইসের মূল্য বৃদ্ধি হতে পারে। এমনটি হলে দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান স্মার্টফোন বাজারগুলো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।