Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় প্রয়োজন পাউবোর সংস্কার’

“জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল উপক‚লীয় বাঁধ নির্মাণ ও টেকসই নিরাপত্তায় প্রয়োজন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংস্কার” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ নির্মাণে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন একটি দীর্ঘ মেয়াদী প্রক্রিয়া। সব ধরনের জটিলতা এড়াতে বাঁধ নির্মাণ পরিকল্পনা গ্রহণ, পরিবীক্ষণ এবং বাস্তবায়নে স্থানীয় জনগণসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের যুক্ত করারও দাবি উঠেছে। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। বিশ^ব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশু সংস্কার প্রয়োজন। বোর্ডের মাঠ পর্যায়ের কর্মপরিকল্পনায় ভুক্তভোগীদের পরামর্শ নেয়া উচিত বলেও সেমিনারে বক্তারা উল্লেখ করেন। 

গতকাল বরিশালে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ‘কোস্ট’ আয়োজিত “জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল উপক‚লীয় বাঁধ নির্মাণ ও টেকসই নিরাপত্তায় প্রয়োজন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংস্কার” শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে বক্তারা আরো বলেন, নদী ভাঙনপ্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করে তাতে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে না। বরং পাউবোর প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। তাই নদী ভাঙন প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধিসহ ক্ষতিগ্রস্থদের সম্পৃক্ততা রাখা এখন সময়ের দাবি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কোস্ট ট্রাস্টের পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা ফাহমিদা আমিন। উন্নয়ন সংস্থা আইসিডিএ’র আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার মোঃ ইউনুস। আইসিডিএর সভাপতি আনোয়ার জাহিদ-এর সভাপতিত্বে এ সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছেলেন পাউবো বরিশাল জোন-এর প্রধান প্রকৌশলী সাজিদুর রহমান সরদার। বরিশাল জেলার নদী ভাঙন কবলিত বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধি ও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষরা সেমিনারে অংশ নেন।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, পাউবোর কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় জনগনের অংশগ্রহণের প্রয়োজন। তাহলে বাঁধ নির্মাণ, নদী ভাঙন প্রতিরোধসহ পাউবোর কার্যক্রমে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে চলমান কার্যক্রমের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনার সুযোগও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বরিশাল সদর উপজেলার নদী ভাঙন কবলিত চরবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহাতাব হোসেন সুরুজ বলেন, চরবাড়িয়ার লামচরি থেকে চরআবদানি পর্যন্ত ভাঙন প্রতিরোধে একটি প্রকল্প অনুমোদন হলেও বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ নেই। অথচ প্রতিদিনই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা কীর্তনখোলায় বিলীন হচ্ছে। বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন সুগন্ধা নদীর ভাঙন কবলিত এলাকায় পাউবোর প্রতিরোধ কার্যক্রম নিয়ে জনমনে অসন্তোষ রয়েছে। কারণ ঠিকাদার নদীর নিচে বালুর বস্তা ফেলানোর নামে কি ফেলছে তা সাধারণ মানুষ জানে না।
সংসদ সদস্য তালুকদার মোঃ ইউনুস পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রমে আরো স্বচ্ছতা আনতে জনগণের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন উল্লেখ করে বলেন, নদী ভাঙন প্রতিরোধে পাউবোর কার্যক্রমে আরো গতি প্রয়োজন।
পাউবোর দক্ষিণ জোনের প্রধান প্রকৌশলী সাজিদুর রহমান সরদার বলেন, জনবল সঙ্কট এবং পর্যাপ্ত বরাদ্দের অভাবে পাউবো বাঁধ নির্মাণ ও নদী ভাঙন প্রতিরোধে যথাযথ ভ‚মিকা রাখতে পারছে না। তিনি বলেন, গত অর্থ বছরে বরিশাল অঞ্চলের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য ৪৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হলেও পাওয়া গেছে মাত্র ৪১ কোটি টাকা। ফলে বাঁধ সংস্কার ৎসহ নদী ভাঙনপ্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয় না। প্রকৌশলী সাজিদুর রহমান সরদার বলেন, ভাঙনকিংবা জলোচ্ছ¡াসের ঝুঁকিতে আছে এমন সব এলাকার অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রকল্প নেওয়া হয়। পাউবোর কার্যক্রমে যথেষ্ট স্বচ্ছতা রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। যেসব প্রকল্প পাউবো মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করে তা মনিটরিংয়ের জন্য রয়েছে কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্স রয়েছে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জলবায়ু পরিবর্তন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ