মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব সংক্রান্ত সা¤প্রতিক গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞদের কোনো ‘বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ রয়েছে। পৃথিবীর উষ্ণতা ক্রমে বাড়তে থাকার পেছনে আদৌ মানুষের ভূমিকা আছে কিনা - তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মি. ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে দেয়া সাক্ষাৎকারে কিছুদিন আগে প্রকাশিত হওয়া গবেষণায় পরিবেশ বিজ্ঞানীদের হুঁশিয়ারি সম্পর্কে এসব মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীরা সবাই একমত হয়েছেন যে জলবায়ু পরিবর্তন আসলে মানবসৃষ্ট কারণে ঘটে। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্ত:সরকারি প্যানেল (আইপিসিসি) - যারা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে গবেষণায় পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় সংস্থা - তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে সতর্ক করেছে যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পরিবেশের তাপমাত্রায় স্বাভাবিক তারতম্য মানুষের কার্যক্রমের প্রভাবে ব্যাপক মাত্রায় পরিবর্তিত হচ্ছে। তাঁদের মতে, বৈশ্বিক শিল্পায়ন শুরু হওয়ার সময় থেকে এখন পর্যন্ত পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, এই গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হলে ‘সমাজের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে অতিসত্বর, ব্যাপক আকারে এবং নজিরবিহীন’ পরিবর্তন আনতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে ট্রাম্প কী বলেছেন?
পরিবেশবিদদের সুপারিশ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবেন কিনা, সেবিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে রবিবারের সাক্ষাৎকারে মি. ট্রাম্প বলেন তাদের ‘বড় ধরণের রাজনৈতিক অভিসন্ধি’ রয়েছে।
আমার মনে হয় না জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি একটি ভাঁওতা।
কিন্তু তারা (বিজ্ঞানীরা) যেরকম বলছে তা করতেই হবে, এমনটাও মনে করি না আমিগ্ধ, বলেন মি. ট্রাম্প। মি. ট্রাম্প বলেন, এই খাতে তিনি ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করতে যেমন রাজি নন, তেমনি পরিবেশ বিজ্ঞানীদের সুপারিশ বাস্তবায়ন করে লক্ষাধিক কর্মসংস্থানও নষ্ট করতে চান না। একপর্যায়ে মি. ট্রাম্প বলেন যে তাপমাত্রা ‘হয়তো আবার খুবই স্বাভাবিক হয়ে যাবে’ - তবে তা কীভাবে হতে পারে সেবিষয়ে আলোকপাত করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এ বিষয়ে আগে কী বলেছেন ট্রাম্প?
২০১৬ সালে নির্বাচনী প্রচারণার সময় জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুটিকে ধাপ্পাবাজি বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মি. ট্রাম্প। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করার পর থেকে এবিষয়ে পরিষ্কারভাবে কোনো পক্ষই নেননি তিনি। তবে প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে - এমনটা ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে হওয়া প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র বাদে পৃথিবীর ১৮৭টি দেশ একমত হয়েছিল।
প্যারিস চুক্তি থেকে প্রত্যাহারের সময় মি. ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না - এমন একটি সমাধান খোঁজার লক্ষ্যে আবারো আলোচনা করতে আগ্রহী তিনি।
মি. ট্রাম্পের ঐ বক্তব্যের পর আবারও গুঞ্জন ছড়িয়ে পরে যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে মনগড়া হুমকি বলে মনে করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে জাতিসংঘের মার্কিন দূত নিকি হেইলি পরে নিশ্চিত করেন যে ‘জলবায়ু পরিবর্তন যে আসলেই হচ্ছে তা বিশ্বাস করেন মি. ট্রাম্প›।
জলবায়ু পরিবর্তন: ১.৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পৃথিবীকে কীভাবে বদলে দিতে পারে?
জলবায়ু পরিবর্তন আসলে কতটা ভয়াবহ হুমকি?
গত সপ্তাহে প্রকাশিত আইপিসিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয় যে শুধুমাত্র বৃহৎ পরিসরে, ব্যয়সাপেক্ষ পরিবর্তনের মাধ্যমেই জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকানো সম্ভব। ২০১০ সালের তুলনায় ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৪৫% কমিয়ে আনা এবং কয়লার ব্যবহার প্রায় শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষকরা সতর্ক করেছেন যে পৃথিবী বাসী যদি জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে না পারে, তাহলে বিশ্বের আবহাওয়া ধ্বংসাত্মক রূপ নিতে পারে। তখন একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, সাগরের পানির তাপমাত্রা ও অম্নতা বৃদ্ধির মত বিপর্যয়ের মুখে পরবে পৃথিবী। এমনকি চাল, গম, ভুট্টার মত প্রয়োজনীয় ফসল উৎপাদনও ব্যাহত হবে ব্যাপকভাবে। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।