মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইস্তাম্বুলে সউদী আরবের দূতাবাসের ভিতর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছেন এ ঘটনার তদন্তকারীরা। তারা আরো বলছেন, এই হত্যাকান্ড পরিচালনার জন্য সউদী আরব থেকে ইস্তাম্বুলে গিয়েছিল ১৫ সদস্যের একটি দল।
জামাল খাসোগি সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের একজন সমালোচক, এবং বেশ কিছুকাল ধরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছিলেন। তাকে হত্যা করা হয়েছে - এমন ধারণার পক্ষে কোন প্রমাণ দেয়নি তুর্কী পুলিশ, এবং সউদী কর্মকর্তারা একে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
খাসোগির সাথে হাতিস চেঙ্গিজ নামে একজন তুর্কী মহিলার প্রণয় চলছিল। হাতিসকে নিয়েই তিনি ইস্তাম্বুলের সউদী দূতাবাস ভবনে এসেছিলেন। হাতিস বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন এবং খাসোগি দূতাবাসের ভেতরে যান। কিন্তু খাসোগি আর বেরিয়ে আসেন নি।
শনিবার তুরস্কের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তদন্তে প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পুলিশ পেয়েছে তা হলো, ইস্তাম্বুলে সউদী আরবের দূতাবাসের ভিতরে হত্যা করা হয়েছে জামাল খাসোগিকে। তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এটা পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকান্ড। তাকে হত্যা করে ঘটনার পরপরই তার মৃতদেহ দূতাবাস থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
তবে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে সউদী আরব। তুরস্কের দু’জন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে শনিবার এ কথা লিখেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। সউদী আরবের শাসকগোষ্ঠীর তীব্র সমালোচক এই সাংবাদিক। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্টেরও একজন সংবাদদাতা। গত বছর সউদী আরবের শাসকগোষ্ঠী যখন ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালোনো শুরু করে তখন তিনি দেশ ছেড়ে যান। তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তুরস্কের যুবতী হাতিসের সঙ্গে। তাকে বিয়ে করার জন্য গত মঙ্গলবার জামাল খাসোগি ইস্তাম্বুলে সউদী আরবের দূতাবাসে প্রবেশ করেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে। কিন্তু ওই দূতাবাসের ভিতরে প্রবেশের পর তার আর কোনো হদিস পাওয়া যায় নি।
হাতিস জানান, তিনি দূতাবাসের বাইরে অপেক্ষা করেন মঙ্গলবার দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। কিন্তু তিনি জামাল খাসোগিকে দূতাবাস থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেন নি। বুধবার সকালবেলা দূতাবাস খোলার সময় তিনি আবার সেখানে উপস্থিত হন। হাতিস আরো বলেন, জামাল খাসোগি তাকে বলেছিলেন যদি তিনি দূতাবাস থেকে বের না হন - তাহলে তিনি যেন তুর্কী প্রেসিডেন্টের একজন উপদেষ্টাকে ফোন করেন।
জামাল খাসোগির রহস্যজনক নিখোঁজের ঘটনা সউদী আরব এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের স¤পর্কে নতুন করে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। কারণ, কাসোগি তার লেখাতে প্রিন্স সালমানের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, মি. খাসোগি একজন সউদী নাগরিক এবং তার কি হয়েছে তা জানতে তিনি খুবই ব্যগ্র, তারা তুর্কী সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। তিনি বলেন, “আমি যা বুঝতে পারছি তা হলে তিনি (মি. খাসোগি) দূতাবাসে ঢুকে আবার কয়েক মিনিট বা ঘন্টাখানেক পরই বেরিযে যান, তবে আমি নিশ্চিত নই। আমরা তদন্ত করছি।” তিনি আরো বলেন, “দূতাবাস ভবন নিজ ভূখন্ডের মর্যাদা ভোগ করে কিন্তু তদন্তকারীরা ভেতরে ঢুকতে চাইলে অনুমতি দেয়া হবে, এবং তাদের কোন কিছু লুকানোর নেই।”
ওয়াশিংটন পোস্টের সম্পাদকীয় পেজের এডিটর ফ্রেড হিয়াত বলেন, “জামালের হত্যার খবর যদি সত্য হয়, তাহলে বিষয়টি ভয়ঙ্কর এবং রহস্যময়। জামাল একজন প্রতিশ্রুতিশীল এবং সাহসী সাংবাদিক ছিলেন। তিনি দেশের প্রতি ভালবাসা থেকে লিখতেন। পাশাপাশি তিনি মানুষের প্রতি সম্মান এবং বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিলেন।”
সউদী আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সউদী প্রেস এজেন্সি রোববার সকালে ইস্তাম্বুল দূতাবাসের একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ভিত্তিহীন এসব অভিযোগের জন্য কড়াভাবে নিন্দা জানায় দূতাবাস। জামাল খাসোগিকে হত্যা করার যে অভিযোগ করা হয়েছে তা তুরস্কের কোনো কর্মকর্তার কাছ থেকে এসেছে কিনা তা নিয়েও এতে সংশয় প্রকাশ করা হয়। ঘটনা তদন্তে তুরস্কে একটি টিম পাঠিয়েছে সউদী আরবও।
বিবিসির এক সংবাদদাতা জানায়, তুরস্ক ও সউদী আরবের সম্পর্ক এখন তিক্ত অবস্থায় আছে এবং একজন সুপরিচিত সউদী ভিন্নমতাবলম্বীকে তুরস্কের মাটিতে রাষ্ট্রীয় মদদে হত্যার ব্যাপারটি প্রমাণিত হলে তা আরো বিরূপ হবে। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যেই সউদী রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ ঘটনা সম্পর্কে ব্যাখ্যা চেয়েছে। সূত্র: এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।