Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লিটনের প্রথম

‘চমক’ জাগানিয়া ওপেনিং

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

তামিম ইকবাল ইনজুরিতে পরার পর পরীক্ষা নিরীক্ষা কম হয়নি। কোন কিছুতেই যেন কাজ হচ্ছিল না। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে চমকের কথা জানিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। বলেছিলেন কাউকে দেখা যাবে যে কি না কখনোই জাতীয় দলের হয়ে ওপেন করেননি। ফাইনালে দেখাও গেল তা। দুর্দশা কাটাতে মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়ে ওপেনিং করিয়ে সত্যিই ফাইনাল চমকটি দিয়েছেন মাশরাফিই। সেটিও ফল পেলো হাতে হাতে।

এই জুটিতে এশিয়া কাপের এবারের আসরে প্রথমবারের মতো পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট হারাল না বাংলাদেশ। লিটন-মিরাজের ব্যাটে ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশ তোলে ৬৫। দূর্দান্ত এই শুরুর পর থেমে থাকেনি লিটন। তুলে নিয়েছেন নিজের অনেক আরাধ্য ফিফটি, সেটিকে পূর্ণতা দিয়েছেন তিন অঙ্কের ম্যাজিকেল ফিগারে। ২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে ঢাকায় ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল লিটনের। এরপর খেলেছেন ১৭টি ওয়ানডে। সেঞ্চুরি তো দূরের কথা, ফিফটিও ছিল না। অবশেষে সেই ভারতের বিপক্ষেই নিজের গেড়ো খুললেন লিটন। নিজের ক্যারিয়ারের মেইডেন ফিফটি থেকে তুলে নিলেন সেঞ্চুরিও।

প্রথম ফিফটিতে পৌঁছানোর জন্য যেন বড় কোনো মঞ্চের অপেক্ষায় ছিলেন লিটন দাস। এশিয়া কাপের ফাইনালের মতো মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ছুঁয়েছেন নিজের প্রথম ওয়ানডে ফিফটি। ৩৩ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় পঞ্চাশ রানে যান লিটন। ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে এটি দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটি। ২০০৩-০৪ মৌসুমে ভিবি সিরিজের ফাইনালে দেশটির বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের করা ৩২ বলের ফিফটি এখনও দ্রুততম।

চমক জাগানো মিরাজকে নিয়ে জুটিতে দল পেয়েছেন শতরানের জুটি। দল ও জুটির রান তিন অঙ্কে নিতে দুই ব্যাটসম্যান খেলেন ১০৭ বল। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের পর এটাই বাংলাদেশের প্রথম শতরানের জুটি। সেই সঙ্গে ভারতের বিপক্ষেও উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের সেরা জুটির রেকর্ড স্পর্শ করেছেন দু’জনে। ভারতের বিপক্ষে ২০১৫ সালে তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার উদ্বোধনী জুটিতে করেছিলেন ১০২ রান।
এমন দিনটি পূর্ণতা পেতে দরকার ছিলো আরো বড় কিছু। সেটিও এসেছে লিটনের জীবনে। ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দ্বাদশ ওভারে রবীন্দ্র জাদেজার করা প্রথম বলটিকে স্কয়ার ড্রাইভে বাউন্ডারি ছাড়া করে। লিটনের ভালো শুরু প্রায়ই শেষ হয় বাজে শটে। রবীন্দ্র জাদেজাকে চার হাঁকিয়ে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর হতে যাচ্ছিল তার আরেকটি মঞ্চায়ন। অফ স্টাম্পের বাইরের বল ব্লগ সুইপ করে তুলে দিয়েছিলেন ক্যাচ। তবে মিডউইকেটে যুজবেন্দ্র চেহেল অনেক উঁচুতে ওঠা বল মুঠোয় নিতে না পারায় বেঁচে যান এই ওপেনার। পরে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। কেদার যাবদের করা চতুর্থ বলটিকে লং অনে ঠেলে দিয়ে ১ রান নিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ৮৭ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগার স্পর্শ করেন। শেষ পর্যন্ত ১১৭ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১২১ রানে কুলদ্বিপ যাদবের বলে স্প্যাম্পড হয়ে ফেরেন লিটন।

এর আগে ওয়ানডেতে তার ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংস ছিল তিনটি। ২০১৫ সালের ২১ জুন ভারতের বিপক্ষে ৩৬ রান করেন। ২৪ জুন ভারতেই বিপক্ষেই করেন ৩৪ রান। আর চলতি এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিলেন ওয়ানডে ক্যারিয়ার সেরা ৪১ রানের ইনিংস। আজ সেটাকে ছাড়িয়ে করলেন প্রথম অর্ধশতক। সেখান থেকে প্রথম শতক।

এশিয়া কাপ ফাইনাল
বাংলাদেশ-ভারত, দুবাই
টস : ভারত
বাংলাদেশ ইনিংস রান বল ৪ ৬
লিটন স্ট্যাম্পড ব কুলদ্বীপ ১২১ ১১৭ ১২ ২
মিরাজ ক রাইডু ব যাধব ৩২ ৫৯ ৩ ০
ইমরুল এলবি ব চাহাল ২ ১২ ০ ০
মুশফিক ক বুমরাহ ব যাধব ৫ ৯ ১ ০
মিথুন রান আউট ২ ৪ ০ ০
মাহমুদউল্লাহ ক বুমরাহ ব কুলদ্বীপ ৪ ১৬ ০ ০
সৌম্য রান আউট ৩৩ ৪৫ ১ ১
মাশরাফি স্ট্যাম্পড ব কুলদ্বীপ ৭ ৯ ০ ১
নাজমুল রান আউট ৭ ১৩ ০ ০
মুস্তাফিজ অপরাজিত ২ ৫ ০ ০
রুবেল বোল্ড বুমরাহ ০ ২ ০ ০
অতিরিক্ত (লেবা ২, ও ৫) ৭
মোট (অলআউট, ৪৮.৩ ওভারে) ২২২
উইকেট পতন : ১-১২০ (মিরাজ), ২-১২৮ (ইমরুল), ৩-১৩৭ (মুশফিক), ৪-১৩৯ (মিথুন), ৫-১৫১ (মাহমুদউল্লাহ), ৬-১৮৮ (লিটন), ৭-১৯৬ (মাশরাফি), ৮-২১৩ (নাজমুল), ৯-২২২ (সৌম্য), ১০-২২২ (রুবেল)।
বোলিং : ভুবনেশ্বর ৭-০-৩৩-০, বুমরাহ ৮.৩-০-৩৯-১, চাহাল ৮-১-৩১-১, কুলদ্বীপ ১০-০-৪৫-৩, জাদেজা ৬-০-৩১-০, যাধব ৯-০-৪১-২।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এশিয়া কাপ

২৯ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ