নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের নিভু নিভু স্বপ্নটা হঠাৎ করেই যেন প্রাণ ফিরে পেল। শেষ ওভারে আফগানিস্তানের প্রায়োজনীয় ৮ রানের হিসাব মেলাতে না দেয়া তো তারই নামান্তর। এমন জয় দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। মাশরাফি বাহিনীও তাই এখন পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালের স্বপ্নে বিভোর।
এরপরও বলতে হবে এবারের এশিয়া কাপের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ভারত-পাকিস্তানের একপেশে ম্যাচ। অর্ধযুগ হয়ে গেল দু’দলের মধ্যকার কোন দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হয় না। আইসিসি ও এসিসি ইভেন্টই দু’দলের লড়াই আস্বাদন করার একমাত্র পথ। এবারের এশিয়া কাপে তো ইতামধ্যে দুইবার মুখোমুখি হয়ে গেছে তারা। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো দুই শ্যাচেই ক্রিকেটীয় উত্তাপ রয়ে গেল কেবল খাতা কলমে। গেল বছর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল পাকিস্তান। সেই পাকিস্তানই এবার ভারতের কাছে রিতিমত নাস্তানুবুধ হয়ে হারল দুই ম্যাচেই। প্রথমে গ্রুপ পর্বে ৮ উইকেটে। এরপর সুপার ফোর পর্বে ৯ উইকেটের আরো বড় ব্যবধানে। উপমহাদেশের চিরবৈরী দুই দলের ক্রিকেট মহারণের রোমাঞ্চ বলতে গেলে শেষ করে দিয়েছে রোহিত শর্মার ভারত।
কেন এমন হলো? পাকিস্তান দলে তো পারফর্ম করা খেলোয়াড়ের ঘাটতি নেই। স্পিন-পেস মিলে এখনো তাদের রয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলিং লাইন আপ। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? এর উত্তর দিয়েছেন দলের কোচ মিকি আর্থার। তার মতে, পরাজয়টা নাকি মানসিক। আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি থেকেই পাকিস্তানের এই ভেঙে পড়া।
টুর্নামেন্টে আফগানস্তানের কাছে বাংলাদেশের হাবুডুবু খাওয়ার ঘটনাও কিন্তু টাইগার প্রেমিকদের কম বিষ্ময় উপহার দেয়নি। গ্রুপ পর্বের পরাজয় তবুও মেনে নেয়া গেলেও সুপার ফোর পর্বে পরশু যেভাবে হারতে হারতে শেষ বলে গিয়ে বাংলাদেশ জিতেছে সেটাও অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত। বিশেষ করে ক্রিকেটে নবাগত একটা দলের বিপক্ষে এমন পারফর্ম্যান্স মেনে নেয়া কঠিন। আফগানদের এদিন ৩ রানে হারালেও ম্যাচটিকে আতসি কাঁচের নীচে আনলে বাংলাদেশের অনেকগুলো ভুলই ধরা পড়বে।
এছাড়া মাঠের বাইরে বাংলাদেশের দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তো ঘুরছে সেই শুরু থেকেই। বিশেষ করে চোট নিয়ে তামিম ইকবালের অপ্রত্যাশিত বিদায়ের পর থেকে। টুর্নামেন্টের মাঝপথে সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েসকে অর্ন্তুক্তির বিষয়টাও অনেকে দেখছেন বাঁকা চোখে। যদিও দ্বিতীয় ম্যাচে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন ইমরুল। তবে এই দুই ব্যাটসম্যানকে যে কারণে উড়িয়ে নেয়া হয়েছিল সেই ওপেনিং সমস্যা নয়, এমনকি ওয়ান ডাউনেও নয়, ইমরুল খেলেছেন মিডিল অর্ডারে। মরুর কঠিন পিচে যেখানে রান তুলতে যুদ্ধ করতে হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের সেখানে ওয়ান ডাউনেই বা কেন সাকিবের পরিবর্তে মিথুন? আর মিডিল অর্ডারেই যদি ইমরুল খেলবেন তাহলে মুমিনুল হককে কেন দলে নেয়া? সব কিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ দল গঠনে টিম ম্যানেজমেন্টের দুরদর্শিতার অভাব রয়েছে বলেই মনে করেন ক্রিকেট বোদ্ধারা।
সে যাই হোক, এগুলো আপাতত ভাবনার বিষয় নয়। আফগানদের হারিয়ে শেষ পর্যন্ত যখন ফাইনালের সম্ভবনা জেগেছে তখন পুরো নজর দিতে হবে সেদিকে। এজন্য আগামীকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে জিততেই হবে বাংলাদেশের। গ্রুপ পর্বের টানা টুই ম্যাচ জিতে আগেই ফাইনালে পৌঁছে গেছে ভারত। সেই হিসেবে দুবাইয়ে আজ ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচটি নিছক নিয়ম রক্ষার। জিতলেও বিদায় নিতে হবে আফগানদের।
একটি করে জয় থাকায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচটি পরিণত হয়েছে অঘোষিত সেমিফাইনালে। এই ম্যাচের বিজয়ী দল খেলবে ভারতের বিপক্ষে। বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ‘মানসিকভাবে বিধ্বস্ত’ পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে নাম লেখানো। দু’দলের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানও কিন্তু পাকিস্তানকে ভয় পাইয়ে দেয়ার মত। সর্বশেষ তিন ম্যাচেই যে জয় বাংলাদেশের! ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে পাকদের সেই হোয়াইটওয়াশ করার পরে যে আর ওয়ানডেতে দেখা হয়নি দু’দলের। তিন বছরে অব্যশ পাকিস্তান দলে এসেছে অনেক পরিবর্তন। তারপরও জয়ের নিশানা হাতে নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। আর এর বত্যায় ঘটলে আরো একটি ভারত-পাকিস্তান মহারণের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।