নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। এই পর্বের শুরুটা ভারতের কাছে হেরে হলেও ফাইনালের আশা এখনো ছাড়েনি টাইগাররা। সেই দিনই তা ম্যাচ শেষে জানান দেন বাংলাদেশ দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা। আর এজন্য যে মাশরাফিকে একটি জট খুলতেই হবে- টপ-অর্ডার ব্যর্থতা।
মাশরাফির কথা মতে ড্রেসিংরুতে তামিমের অনুপস্থিতির কোন প্রভাব না থাকতে পারে, কিন্তু মাঠে তো তেমনটা মনে হচ্ছে না। বিশেষ করে আফগানিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে দলের টপ অর্ডার যেভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে তাতে যে কাওকে চিন্তায় ফেলতে বাধ্য। ফাইনালের সুযোগ থাকা অবস্থাতেই তাই দ্রুত বিকল্প সিদ্ধান্ত নিতে হলো টিম ম্যানেজমেন্টকে। হঠাৎ করেই এশিয়া কাপের দলে ডাকা হয়েছে দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারকে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো দলে তাদের এই অন্তর্ভূক্তির বিষয়টা ঘটানো হয়েছে দলপতি মাশরাফিকে না জানিয়েই। সাবেক ক্রিকেট বোন্ধারাও টিম ম্যানেজমেন্টের দুরদর্শিতা নিয়ে তুলেছেন প্রশ্ন।
আচমকা কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলো টিম ম্যানেজমেন্ট? এর কারণ জানিয়েছেন দুবাইয়ে দলের সাথে থাকা বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান। তামিম ইকবাল চোটের কারণে ছিটকে যাওয়ার পর লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যর্থতাতেই বিসিবি এমন সিদ্ধান্তের পথে হেঁটেছে বলে জানান তিনি, ‘টিম ম্যানেজমেন্ট একজন ওপেনারের কথা বলেছে। আমরা ঝুঁকি না নিয়ে দুজন ওপেনারকে নিয়ে আসছি। টিম ম্যানেজমেন্ট এবং বোর্ড প্রধানের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারকে আনছি।’
অবশ্য তামিমের চোটের জন্য আগে থেকেই বিকল্প চিন্তা করেই দুবাই যাত্রা করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তাদের পারফরম্যান্স আশানুরুপ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই বিকল্প পথে হেঁটতে হচ্ছে বলে জানান তিনি, ‘আমরা কিন্তু এসব বিষয় চিন্তা করেই একজন ব্যাকআপ খেলোয়াড় নিয়ে এসেছি। যাদের আমরা ব্যাকআপ হিসেবে নিয়ে এসেছি ওরা ভালো খেলোয়াড়। ওদের দারুণ সুযোগ ছিল। লিটন ছিল, শান্ত ছিল। ওরা দুইটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু ওখানে ওরা রান করতে পারেনি। সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের এমন পরিকল্পনা নিতে হয়েছে।’
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, দলে সৌম্য-ইমরুলের অর্ন্তূক্তির বিষয়টা জানানো হয়নি মাশরাফিকে, ‘আমি মাঠে ছিলাম। এটা জানি না এখনও। এখনও পরিষ্কার নয় আমার কাছে। শুনছিলাম এ রকম কথা, তবে জানতাম না যে হয়েছে।’ তারা শনিবারই দুবাই আসছেন নিশ্চিত করা হলে আরও বিস্ময় বাড়ে অধিনায়কের কণ্ঠে। লিটন-শান্ত নিজেদের প্রমাণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন তবে ইমরুল ও সৌম্যও অফ ফর্মের জন্য দল থেকে বাদ পড়েছিলেন মনে করিয়ে দিয়ে এসময় তিনি আরও বলেন, ‘তাদের পারফরম্যান্স ভালো নয় বলেই দলে ছিল না। আবার এসে এই ধরনের টুর্নামেন্টে চাপ নিয়ে খেলাও কঠিন। আমি জানি না ওরা কৌশলগত কী কাজ করেছে। যে সমস্যার কারণে দলে ছিল না সেটা তারা ঠিক করতে পেরেছে কিনা সেটাও জানার বিষয়।’ তবে দিনশেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চ্যালেঞ্জ থাকবে আর ক্রিকেটারদের তা জয় করতে হবে বলেও জানান তিনি।
কয়েক দিনের টুর্নামেন্টে হুট করে এই রদবদল পছন্দ নয় বাংলাদেশের সাবেক তিন অধিনায়কেরও। গাজী আশরাফ লিপুর মতে,‘এটা হওয়া উচিত নয়। নির্বাচন প্রক্রিয়াটা নিয়েই পর্যালোচনা করা দরকার। বর্তমান খেলোয়াড়দের ওপর যদি আস্থা না থাকে তবে তাদের নির্বাচন কেন করা হলো?’
আরেক সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবির সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদও ভীষণ অবাক দলে হঠাৎ দুই ওপেনারের অন্তর্ভুক্তিতে, ‘ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই। আগ থেকে ভাবি না। নির্বাচকদের দূরদর্শী দৃষ্টি নেই, যেটা একটা দলের জন্য কখনোই ভালো নয়।’
বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপের অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বাংলাদেশের দুই ম্যাচই দুবাইয়ে বসে দেখেছেন। দেখেছেন মাশরাফিদের অনুশীলনও। কাল সকালে ফিরে গেছেন তার বর্তমান আবাস মেলবোর্নে। অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেই শুনেছেন ভারতের কাছে বাজেভাবে হারের কথা। এরপর দলে হঠাৎ সৌম্য-ইমরুলের যোগ দেয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ সৌম্য-ইমরুলকে ডেকে নেওয়ার কারণটাও ঠিক বলতে পারছি না। হয়তো দুজন সফল হতেও পারে। তবে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কাও আছে। দুজন সবশেষ কবে ওয়ানডে খেলেছে জানিও না। একেবারে ভুল সিদ্ধান্ত। অনেক দিন ধরে আমি এ বিষয়টি কথা বলে যাচ্ছি। একটা জাতীয় দলের নির্বাচন পদ্ধতি সব সময় স্বচ্ছ হতে হয়। আমাদের দুই নির্বাচক তো আছেনই। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ, দলের ম্যানেজার, বিসিবি সভাপতি—সবাই নির্বাচকের ভূমিকায়। এখন শুনছি অধিনায়ক জানেই না যে দুজন খেলোয়াড়কে ডাকা হয়েছে। পুরো বিষয়টা হ-য-ব-র-ল, অগোছালো অবস্থা।’ দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আরো জানান, ‘হঠাৎ ওই কন্ডিশনে যেয়েই ভালো খেলা কঠিন। হঠাৎ দুজন খেলোয়াড়কে ঝেড়ে ফেলে দেওয়ার মানে নেই। এটা সম্পূর্ণ ভুল ও অপরিণত সিদ্ধান্ত।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।