Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পোড়া ইটের ব্যবহার বন্ধ না হলে ভয়াবহ সঙ্কটে পড়বে দেশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১:০৭ এএম

রাজধানী ঢাকাসহ সকল বিভাগীয় শহরে ২০২০ সালের পর বহুতল ভবন নির্মাণে ইট ব্যবহার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন নগর উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, পোড়া ইটের ব্যবহার বন্ধ না করলে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ ও খাদ্য সঙ্কটে পড়বে দেশ। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের আয়োজনে ‘পোড়া ইটের বিকল্প কংক্রিট ব্লক’ শীর্ষক সেমিনারে নগর উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা এ দাবি জানান।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি চীন, থ্যাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর,ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়াসহ পৃথিবীর অনেক উন্নয়নশীল দেশেই এখন প্রচলিত ইটের বদলে ভবন নির্মাণে বালি, সিমেন্ট, নুড়িপাথর দিয়ে বানানো বøক ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে যেমন কমছে কার্বন নির্গমন, অন্যদিকে রক্ষা পাচ্ছে ফসলি জমি।
বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং রিচার্স ইন্সিটিটিউটের এক তথ্য উল্লেখ করে আলোচকরা বলেন, দেশে এখন বছরে কম করে হলেও ১৭ দশমিক ২ বিলিয়ন পিস ইট তৈরি হচ্ছে। প্রতি মিলিয়ন ইট তৈরিতে পোড়াতে হয় ২৪০ মিলিয়ন টন কয়লা। কয়লার পাশাপাশি গ্রামঞ্চলে বনভূমি ধ্বংস করে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও বাঁশ। ইটভাটাগুলো থেকে বছরে কম করে হলেও ৯ দশমিক ৮ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাইঅক্সাইড নির্গত হচ্ছে বায়ু মন্ডলে, যা দেশের মোট কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমনের প্রায় ২৩ শতাংশ।
বক্তারা বলেন, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মোট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ২ কোটি ১৭ লাখ একর। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে ১৯৮৪ সালে দেশে মোট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৩৮ হাজার একক। ১৯৯৭ সালে এসে কমে তা ১ কোটি ৭৪ লাখ ৪৯ হাজার একরে এবং সর্বোপরি ২০১২ সালে বাংলাদেশের আবাদি জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ কোটি ৫৪ হাজার একর। প্রতি বছর বাড়তি জনসংখ্যার কারণে আবাসন, রাস্তাঘাট, স্কুল কলেক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাঠামো নির্মাণে ভূমির ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ ও কৃষি জমি রক্ষা করতে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে দেশ থেকে ইটভাটা তুলে দেওয়ার বিষয়ে একমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, টপ সয়েল ব্যবহারের বিপক্ষে আমি। জমির উপরিভাগের মাটি ব্যবহার করে যেভাবে ইট তৈরি করা হচ্ছে তাতে কৃষি জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। আর ইট ভাটার ধোঁয়ায় বায়ূ মারাত্বকভাবে দূষিত করছে। পোড়া ইটের ক্ষতি থেকে দেশকে রক্ষা করতে কংক্রিটের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি অমিতোষ পালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মতিন আব্দুল্লাহর সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বাংলাদেশ রেডিমিক্স কংক্রিট এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল। অন্যান্যের মধ্যে সেমিনারের আলোচনায় অংশ নেন-বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্সে’র (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান, প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ ম. ইনামুল হক, কংক্রিট ব্লক বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ আবু সাদেক, সিনিয়র সাংবাদিক তৌফিক আলী প্রমুখ। সেমিনারের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন, দি স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ও আবাসন নিউজ ২৪ ডট কম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভয়াবহ

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ