রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে গতকাল (বুধবার) দ্বিতীয় দিনের মতো সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সড়ক অবরোধের পাশাপাশি ককটেল বিস্ফোরণ ও গাড়ি এবং দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশের সামনেই আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে। অছাত্র, বহিরাগত ছাড়াও দা ও কিরিচ হাতে সংঘর্ষে অংশ নেয় বিভিন্ন স্কুলের ইউনিফর্ম পড়া ছাত্ররা। সংঘর্ষে পথচারী, ব্যবসায়ীসহ ১০ জন আহত হয়েছে। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সোমবার রাতে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের ২৫ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন নগর ছাত্রলীগের কমিটি। এর প্রতিবাদে এবং কমিটি প্রত্যাখান করে মঙ্গলবার প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চট্টগ্রাম কলেজের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা। এ সময় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারীদের সাথে তাদের দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এর জের ধরে গতকাল সকাল থেকে দুই পক্ষ কলেজ ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেয়। উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে পুলিশের উপস্থিতিতে দুই পক্ষে বিপুল সংখ্যক অছাত্র ও বহিরাগত যোগ দেয়। এরপর একপক্ষ মিছিল নিয়ে গুলজার মোড়ের দিকে চলে যায়। অন্যপক্ষ মিছিল নিয়ে গণি বেকারী পর্যন্ত যায়। একপর্যায়ে কলেজমুখী দুই পক্ষের বিক্ষোভ মিছিল কলেজের সামনের সড়কে এসে মুখোমুখি হয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সংঘর্ষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অনেকে মুখে মুখোশ পরা অবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্র এবং ধামা-কিরিচ, রাম দাসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘাতে নামে। বিভিন্ন স্কুলের ইউনিফর্ম পড়া শিক্ষার্থীদেরও দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি যানবাহন ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে।
নগর পুলিশের চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা বলেন, পুলিশের উপস্থিতির কারণে ক্যাম্পাসে বড় ধরনের কোন সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। তবে দুই পক্ষ মিছিল নিয়ে রাস্তায় বের হলে একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংর্ঘষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকেই ক্যাম্পাস এলাকায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের রণপ্রস্তুতিতে এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একদিকে ককটেল বিস্ফোরণ হচ্ছিল। অন্যদিকে গাড়ি ভাঙচুর করছিলেন একদল ছাত্রলীগ কর্মী। এসময় পথচারি, স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে প্রাণভয়ে ছুটোছুটি শুরু করেন।
প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিলেও পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করেনি। চকবাজার থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। কোন পক্ষই থানায় কোন মামলা করেনি। ছাত্রলীগের টানা দুই দিনের সংঘাতে চট্টগ্রাম কলেজ হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ও আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশের ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম কলেজ ও সরকারি হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজ ক্যাম্পাস দখলে নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিনিয়ত সংঘাত-সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছে ছাত্রলীগ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।