পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের রেশ এখনো কাটেনি। তর্ক বিতর্কের মধ্যেই চলে এসেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়। রাজশাহী অঞ্চলের সর্বত্রই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয় নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় উঠতে শুরু করেছে। শুরু হয়েছে নানামুখী বিশ্লেষণ।
নির্বাচন হবেতো? হলে সবার অংশগ্রহন। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা। খালেদা জিয়ার মুক্তি, বিএনপির আন্দোলন। ক্ষমতাসীনদের কারো করো আস্ফালন। ড. কামাল হোসেন, বি চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্নাদের নিয়ে ঐক্যজোট বিষয়গুলো ঘুরে ফিরে আসছে আলোচনায়। আশা নিরাশার দোলাচলে সব ঘুরপাক খাচ্ছে। সাধারন মানুষ চায় অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন।
যারা রাজনীতি পর্যবেক্ষন করেন তাদের মন্তব্য হলো এবারের নির্বাচন যেমন আওয়ামী লীগের জন্য ক্ষমতার মসনদ অক্ষুন্ন রাখার চ্যালেঞ্জ। তেমনিভাবে বিএনপির জন্য তাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। কেউ কাউকে ছাড় দেবেনা। ফলে ভয়াবহ কিছু ঘটে যাবার শঙ্কা থেকেই যায়। বিএনপির ভেতরেও রয়েছে চাপা বিভেদ। সাংগঠনিভাবে তারা অনেকটাই এলোমেলো। তবে এখন সেসব চাপা রেখে আন্দোলনের দিকে তাদের নজর। নির্বাচনের বিষয় নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ব্যাংকার সহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের সাথে আলাপকালে তারা বলেন সামনের দিনগুলো খুব সুখকর হবে বলে মনে হয়না। নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আর এটি পেতে হলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। ক্ষমতার পালা বদলও মসৃন হবেনা। ফলে শঙ্কা রয়েছে সংঘাতের। কারো কারো মন্তব্য শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি এমন গড়াতে পারে নয় আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি। দায়িত্ব নিতে হতে পারে ভিন্ন কোন পক্ষের ।
ঐতিহাসিকভাবে রাজশাহী অঞ্চলের ভোটারদের সেন্টিমেন্ট এন্টি ইন্ডিয়ান। আর আওয়ামী লীগের পরিচিতি প্রো ইন্ডিয়ান হিসাবে। যার কারনে এখানে ভোটের পাল্লা ভারী আওয়ামী বিরোধীদের দিকে। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শক্তির শেকড় অনেক গভীরে।
বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের সবকটি আসন দীর্ঘ সময় বিএনপির ঘরে যাওয়ায় এ অঞ্চল পরিচিত পায় বিএনপির দূর্গ হিসাবে। অবস্থা এমন দাঁড়ায় ধানের শীষ হাতে ধরিয়ে দিলেই পাশ। আওয়ামী লীগের একজন প্রবীন নেতা বার বার নির্বাচনী বৈতরনী পার হতে না পেরে অবশেষে ধানের শীষ নিয়ে জিতে যান। জামায়াত প্রার্থী জয়লাভ করেন জোটের ভোটের কারনে। তারা সাংগঠনিকভাবে সুযোগটা ভাল ভাবেই কাজে লাগিয়েছে। জামায়াত-শিবির সাংগঠনিক ভাবে বেশ শক্তিশালী হয়। শিবিরের দাপটও কম ছিলনা। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে টানা সতের বছর নির্বাচিত হয়ে মেয়র গিরি করেছেন বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু। ওয়ান ইলেভেনের রাজনৈতিক সিডরে তছনছ হয়ে যায় রাজশাহী অঞ্চলের বিএনপির দুর্গ। মন্ত্রী এমপি মেয়র নেতা কর্মীরা যান কারাগারে। ঘরছাড়া হন মাঠ পর্যায়ের নেতা র্কমীরা। ক্ষমতার সুবাদে সে সময় জিরো থেকে হিরো হওয়াদের বেশীর ভাগ ভোল পাল্টে ফেলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এক দশকে হামলা মামলা জেল জুলুমে নেতাকর্মীরা জর্জরিত। এরমধ্যে দিয়ে টিকে রয়েছে। তাছাড়া বাস্তবতা হলো বিএনপি সমর্থক নির্ভর দল। এই সমর্থনের কারনেই নি:শেষ করা যায়নি। চরম বিরুপ অবস্থার মধ্যেও ভোটের মাঠে তাদের অবস্থান দুর্বল নয় যা স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে জানান দিয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের দশ বছরের শাসন, উন্নয়ন হাইব্রীডদের দুর্বৃত্তায়নে সব বির্সজনের চলে গেছে। ছাইচাপা দু:খ বেদনা আর ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় প্রত্যেক আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীতার সংখ্যা সাত আটজন করে। এরা আবার জোট বেধেছে এমপিদের বিরুদ্ধে। এসব নেতাদের দাবী বর্তমান এমপিবাদ দিয়ে তাদের যে কোন একজনকে মনোনয়ন দেয়া হোক। এনিয়ে বিরোধ তুঙ্গে। অবস্থা বেগতিক দেখে রাজশাহীর নেতা সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঢাকায় তলব করা হয় বক্তব্য শোনা হয়। বিরোধ মেটানোর জন্য কঠোর ভাবে সতর্ক করেন দলের সাধারন সম্পাদক। এরমধ্যে একজন এমপিসহ বেশ কজন নেতাকে শোকজ করা হয়েছে। অন্ত:দ্বন্দ ক্ষয় করছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি। এনিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। বিভেদের ছাইচাপা আগুন যে কোন সময় জেগে উঠতে পারে। অনেকে শঙ্কা করে বলেন ক্ষমতায় না থাকলে নিজ দলের মধ্যে ভয়াবহ রকমের ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অনেকেই পালাবার পথ পাবেনা।
প্রসঙ্গত, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ অঞ্চলের বেশীরভাগ আসনে ভোট দিতে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি। বিনা ভোটেই সব এমপি নির্বাচিত হয়ে গেছে। যা দু’একটা কেন্দ্রে ভোট হয়েছে তা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কারনে। ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী এমপি হবার সুবাদে দাপট দেখিয়েছে। ভোটারদের কাছে দায়বদ্ধতা ছিলনা বলে দাপটের মাত্রা ছিল বেশী। আবার ২০০৮ সালে অধিকাংশই প্রার্থীর তৃনমূলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলনা। খুঁটির জোরে মনোনয়ন বাগিয়ে ছিল। সাইডলাইনে ছিটকে পড়ে ত্যাগি নেতাকর্মীরা। এমপি হবার পর সুবিধাভোগীদের নিয়ে বলয় গড়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি হয়ে যায় এমপি লীগ। আবার কোথাও ভাই কেন্দ্রীক বলয়। যার ফলে মাঠে প্রকৃত রাজনীতিকরা যেমন ছিলেন উপেক্ষিত তেমনি অসহায়। ফলে রাজনীতির নামে হয়েছে দুর্বৃত্তায়ন। ফুটপাত থেকে একেবারে প্রাসাদে উঠেছেন। জিরো থেকে হিরো হওয়াদের সংখ্যা বেড়েছে সবখানে। অসহায় শুধু আম জনতা। তারা মুক্তির অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।