Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকার গড়তে হবে

সুজনের আলোচনা সভায় বক্তাদের সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:৩৬ এএম

একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই হতে হবে মন্তব্য করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেছেন, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সবার সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণপ্রিিনধিত্ব আদেশ সংশোধন ও সুষ্ঠু নির্বাচন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। এতে মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলিপ কুমার সরকার। প্রবন্ধে বলা হয়, স্টেকহোল্ডারদের মতামত উপেক্ষা করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ তে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভেএম) চালু, খেলাপি ঋণ পরিশোধের শর্ত শিথিলসহ বেশ কিছু বিষয়ে সংশোধনী আনা হচ্ছে। এগুলো না করার দাবি জানাই। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের আইন প্রণয়ন, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, ‘না’ ভোটের আইন পুনঃপ্রবর্তন, মনোনয়নপত্র অনলাইনে দাখিলের বিধান সংযোজনসহ ১৫ দফা সুপারিশ করা হয়।
এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, এদেশে এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। কেবল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল। জাতীয় তাই জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই হতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো ধংস করে দিয়েছে। ফলে বিচার বিভাগের ১১ জনের বিচারপতির জায়গায় এখন মাত্র চারজন বিচারপতি রয়েছেন। অথচ সরকারি দলের লোকেরাই বলছেন মামলা জটে পড়েছে। সরকার চাইলে সবই সম্ভব মন্তব্য করে এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, যে দুটি বড় পক্ষ নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবে তাদের এক দলের নেতাকর্মীদের জেলে রেখে, অন্যদিকে নির্বাচনের আগেই সরকারি দলের নেতারা সরকারি খরচে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এই সরকার ক্ষমতায় থাকাবস্থায় হবে না।
মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, সরকার চাইলে রাতারাতি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর চেহারা পরিবর্তন হয়ে যাবে। নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে। এ সময় তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা ১৯৯৬ সালে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ছিলেন। ওনার দ্বারা ১৯৯৬-এর ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হয়েছে। আবার ৯৬ সালের জুনের নির্বাচনও হয়েছে। আসলে সরকার চেয়েছিল বলেই এটি সম্ভব হয়েছে।
গণতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয় প্রশাসনযন্ত্র ব্যবহার করে সংকুটিত করা হচ্ছে এবং আবারও নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের আয়োজন চলছে উল্লেখ করে সুজনের সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সরকার আইনকে অস্ত্রে পরিণত করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতা থাকা সত্তে¡ও ইভিএম চালু করছে। আমরা এসবের অবসান চাই। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে দেশে বিপর্যয় নেমে আসবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আগে ভোট চুরি হতো। এখন ভোট চুরির মধ্যে নেই, এখন ডাকাতির মধ্যে ঢুকে গেছে। সরকার নিয়ন্ত্রিত ভোটের মাধ্যমে নিজস্ব প্রার্থীদের বিজয়ী করছে। রাজনৈতিক দল ও সেনা শাসকদের দিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার জন্য একটি স্থায়ী জাতীয় নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি দরকার। গণফোরামের নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। তাদের দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে।
গোলটেবিল বৈঠকে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিআর আববার, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের নেতা সাবেক এমপি এস এম আকরাম প্রমুখ। #



 

Show all comments
  • শওকত আকবর ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৪:৫১ এএম says : 0
    তারা কী আদৌ এটা মানবেন ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ