Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জয়ে শুরু বাংলাদেশের এশিয়া কাপ

মুশফিক ১৪৪, শ্রীলঙ্কা ১২৪

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৯:৪৬ পিএম | আপডেট : ১:০৫ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

বাংলাদেশ : ৪৯.৩ ওভারে ২৬১
শ্রীলঙ্কা : ৩৫.২ ওভারে ১২৪
ফল : বাংলাদেশ ১৩৭ রানে জয়ী

নিজেদের ছোট্ট ক্রিকেট ইতিহাসে অনেক রোমাঞ্চকর সময়ের সাক্ষি হয়েছে বাংলাদেশ। তবে গতকাল এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৩৮ রানের জয়ে কোন রোমাঞ্চ ছিল না। এক মুশফিকের রানই তো করতে পারল না শ্রীলঙ্কা। এরপরও ম্যাচটি টাইগার ক্রিকেট ভক্তদের মনে গেঁথে থাকবে তামিম ইকবাল নামক এক আহত যোদ্ধার অসাধারণ বীরত্বগাঁথার কারণে।
মুশফিকের মত তামিম ইকবাল অসাধারণ কোন ইনিংস খেলেননি। এরপরও তিনি টাইগার ভক্তদের মন জয় করেছেন অসাধারণ এক দায়ীত্ববোধের পরিচয় দিয়ে। ক্রিকেটের প্রতি, দেশের প্রতি কতটা ভালোবাসা থাকলে এমন ত্যাগস্বীকার করা যায়। বাংলাদেশ ইনিংসের শেষদিকে যে এমন কিছুর দেখা মিলবে চরম আশাবাদী লোকও হয়ত তা ভাবেননি। মুস্তাফিজের রান আউটেই বাংলাদেশের ইনিংস শেষ (২২৯ রান) বলে ধরে নিয়েছিলেন সবাই। এমন সময় হাতে ব্যান্ডেজ নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন তামিম, মুশফিককে শেষ সঙ্গ দেয়ার জন্য। বাকিদের মধ্যে যে কাজটি এর আগে করে যেতে পেরেছেন কেবল মোহাম্মাদ মিথুন।
তামিম মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ওঠে আহত বাঘের ভয়ঙ্কর গর্জন। আঘাত পাওয়া বাঁ হাত সামলে এক হাতে একটা বল মোকাবেলাও করেন তামিম। শেষ পর্যন্ত তাকে আর স্ট্রাইকে যেতে হয়নি। বলা ভালো স্ট্রাইকে যেতে দেননি মুশফিক। শেষ উইকেটে ৩২ রান যোগ করে আসল কাজটি সারেন তিনিই। তবে পুরোটা সময় অপর প্রান্তে থেকে তাকে সঙ্গ দেন আহত যোদ্ধা তামিম। দ্বিতীয় ওভারে ক্রিজে আসা মুশফিক শেষ ওভারে টানা দুই ছক্কা হাঁকিয়ে লং অফে যখন ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লড়াইয়ের জন্য বাংলাদেশ তখন ২৬১ রানের পুঁজি পেয়ে গেছে। আর মুশফিকের পাশে ১৫০ বলে ১১ চার ও চার ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ রানের ইনিংস।
এর আগে বাংলাদেশের টস জয়ের হাসিটা মিলিয়ে যায় ব্যাট হাতে মাঠে নামার পরপরই, দ্বিতীয় ওভারের মধ্যেই হারায় লিটন, সাকিব ও তামিমকে হারিয়ে। ব্যাট হাতে মাহমুদউল্লাহ-মোসাদ্দেকরাও ছিলেন ব্যর্থ। বাংলাদেশের শুরুটা নড়বড়ে করে দেন ১৬ মাস পর মাঠে ফেরা লাসিথ মালিঙ্গা। তার করা প্রথম ওভারেই মাশরাফির দল হারায় দুই উইকেট! পরের ওভারে পুল করতে গিয়ে আঙুলে মারাত্মক আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম। এশিয়া কাপে তাকে আর পাওয়ার সম্ভবনা কম। বাংলাদেশের সামনে তখন অন্ধকারের ঘনঘটা। সেই অন্ধকারে বাংলাদেশকে পথ দেখায় মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিথুনের ১৩১ রানের জুটি। মালিঙ্গার বলে মিথুন (৬৮ বলে ৬৩) ফেরার পর আর কেউই সেভাবে মুশফিককে সঙ্গ দিতে পারেননি। নামের পাশে ১ রান যোগ হতেই ফেরেন মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেক। মিরাজ (১৫) ও মাশরাফি (১১) দুই অঙ্কের স্কোরটা লম্বা করতে পারেননি। রুবেলকে নিয়ে মুশফিকের লড়াইটাও টেকেনি বেশিক্ষণ। ২০৩ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে তখন চরম দুরাবস্থায় বাংলাদেশ। ৯৬ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিকের সেঞ্চুরিটাও তখন মহাশঙ্কটে। মুস্তাফিজকে নিয়ে ২৬ রানের ছোট্ট কিন্তু কার্যকরি জুটিতে সেই শঙ্কা কাটিয়ে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ওয়ানডে শতক তুলে নেন মুশফিক। এরপরই তামিমের সেই বীরত্বের গল্প।
দুবাইয়ের ঘাসহীন ন্যাড়া উইকেট ব্যাটসম্যানদের হয়েই কথা বলে। এসেই চার-ছক্কায় উড়ন্তু শুরু করে লঙ্কানরা ভয়ও ধরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু মাশরাফির নেতৃত্বে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ দ্রæতই ঘুরে দাঁড়ায়। শুরুটা করেন মুস্তাফিজুর রহমান। এরপর মাশরাফি-মিরাজ-রুবেলদের উপর্যুপরি আঘাতে কাবু হয়ে পড়ে লঙ্কানরা ১২৪ রানেই শেষ লঙ্কানদের ইনিংস। ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন দিলরুয়ান পেরেরা। দুটি করে উইকেট নেন মাশরাফি, মুস্তাফিজ ও মিরাজ, একটি করে সাকিব, রুবেল ও মোসাদ্দেক।
হারলেও দিনটা ছিল মালিঙ্গারও। দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে ১০ ওভারে ২ মেডেনসহ মাত্র ২৩ রানের খরচায় নেন ৪ উইকেট। আজ দুবাইয়ের একই মাঠে আসরের দ্বিতীয় ও ‘এ’ গ্রæপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ হংকং।



 

Show all comments
  • morshed alam ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৪:৩২ পিএম says : 0
    really super playing Bangladesh team. thanks for Bangladesh team
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুশফিক

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ