Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যস্ত সড়কে ট্রান্সফরমার : দুর্ঘটনার আশঙ্কা

এ যেন মৃত্যুফাঁদ!

সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে নজির হোসেন নজু | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

সৈয়দপুর শহরের ব্যস্ততম শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে কোহিনুর ম্যানসনের সামনে বিদ্যুতের ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমা বসানো হয়েছে। ফলে যে কোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে শহরবাসী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের উল্লিখিত এলাকায় খুঁটির ওপর ১১ হাজার ভোল্টের একটি ট্রান্সফরমার রয়েছে। গত ২ সেপ্টেম্বর আকস্মিক ওই ট্রান্সফরমার পুঁড়ে যায়। এতে করে ওই এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় সৈয়দপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সেখানে সড়কে লোহার খাঁচায় থাকা একটি ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার স্থাপন করে। বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্রে জানা যায়, খুঁটিতে স্থাপিত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিকল হলে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে সেখানে তাৎক্ষণিক একটি ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখা হয়। মূলত বিকল হওয়া ট্রান্সফরমাটি পুনঃস্থাপন করার সময়টুকু পর্যন্ত এ ব্যবস্থা চালু থাকার কথা। কিন্তু শহরের প্রধান সড়কে বসানো ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমারটি গতকাল ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরিয়ে নেয়া হয়নি। যদিও ইতোমধ্যে এটি বসানোর বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত হয়েছে। আর ট্রান্সফরমাটি যে সড়কে বসানো হয়েছে সেটি একটি অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক। সৈয়দপুর শহরের প্রধানতম সড়ক। ওই সড়কে দুই পাশে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের দোকান পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক-বীমার আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ফলে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা বিপুল মানুষ চলাচল করে সড়কটি দিয়ে। চলে দ্রুতগতির যানবাহন। এ সবের মধ্যে রয়েছে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা, রিকশাভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ।
গতকাল সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দুই চাকাবিশিষ্ট একটি লোহার খাঁচা। ট্রলির মতো দেখতে। ওই খাঁচার ভেতরে একটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার। খাঁচার গায়ে স্টিলের প্লেটে ইংরেজিতে ‘ডেঞ্জার’ (বিপজ্জনক) এবং ‘১১০০০ ভোল্ট’ লেখা রয়েছে। আর ব্যস্ততম সড়কের পাশে রাখা ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমারটি ঘেঁষে অনবরত সকল রকম যানবাহনসহ সব বয়সী মানুষ চলাচল করছে। তবে পুড়ে যাওয়া ট্রান্সফরমারটি বৈদ্যুতিক খুঁটির মধ্যে রয়েছে এখন। ট্রান্সফরমাটির ঠিক নিচে রয়েছে প্লাস্টিক ফার্নিচারের দোকানসহ বেশ কয়েকটি দোকানপাট। সেখানে মো. জিয়াউল হক নামের জনৈক দোকানির সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, বেশ কয়েক দিন আগে ট্রান্সফরমাটি পুঁড়ে গেছে। পরদিন বিদ্যুৎ বিভাগ সড়কে ওই ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমাটি বসানো হয়। সেই থেকে ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমাটি সেখানে রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে সেটি বসিয়েছে।
ট্রান্সফরমারটির সন্নিকটের হাসান বুক ডিপোর স্বত্বাধিকারী টুটুল বলেন, ভাই কি বলব ? আমি দোকানে এসেই সব সময় ট্রান্সফরমারটির নিয়ে আতঙ্কে থাকি। আমার দোকানে সব সময় স্কুল, মাদরাসা ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বইপত্র কিনতে আসে। অনেক সময় অভিভাবকরা ছোট শিশুশিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আসেন দোকানে। কখন যে দুর্ঘটনা ঘটে ? ওই সড়কের ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান চালান চালক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এটি নিয়ে চরম আতঙ্কে আছি। কখন যে দুর্ঘটনার শিকার হব বলা মুশকিল। এ নিয়ে কথা বলার জন্য গতকাল এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রে উপ-সহকারী প্রকৌশলী প্রাণকৃষ্ণের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
তবে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগের নিকট অতিরিক্ত ট্রান্সফরমার নেই। খুঁটির ট্রান্সফরমারটি পুঁড়ে যাওয়ায় এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে একটি ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে। নতুন ট্রান্সফরমার এলে ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমাটি সরিয়ে নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সড়ক


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ